খেলাপি ঋণের বোঝা জেঁকে বসেছে গুটিকয়েক ব্যাংকের ঘাড়ে। ফলে দিনের পর দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে এসব ব্যাংক। মোট খেলাপি ঋণের ৮৫ শতাংশই ২৫ ব্যাংকের। যার অংক ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি। বিপুল অঙ্কের এ টাকার বেশিরভাগই রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।
সংশ্লিষ্টদের মতে, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে খোয়া যাওয়া এসব টাকা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে অনিয়ম কিছুটা কমে আসবে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, খেলাপি ঋণের বেশিরভাগই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের। এসব ব্যাংক থেকে প্রভাবশালীরা ঋণ নিয়ে তা আর ফেরত দিচ্ছেন না। এরপর ঋণখেলাপির এ রোগ ধীরে ধীরে বেসরকারি ব্যাংকেও সংক্রমিত হয়। ফলে কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকেও খেলাপি ঋণ বেড়ে যায়। বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংককে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর সিংহভাগই মাত্র ২৫টি ব্যাংকের দায়। স্থিতির দিক থেকে তালিকার শীর্ষে থাকা ২৫ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮০ হাজার ৩৫০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। তথ্য বলছে, এর মধ্যে ৪২ হাজার ২২১ কোটি টাকার খেলাপি ঋণই রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের। বাকি ২০ ব্যাংকের খেলাপি ৩৮ হাজার ১২৯ কোটি টাকা।
প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, হলমার্ক কেলেঙ্কারির পর গর্তের মধ্যে পড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক। একপর্যায়ে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ বেড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। তবে এখন কমতে কমতে সর্বশেষ সেপ্টেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের স্থিতি ১০ হাজার ১৯৭ কোটি ৪২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। একই চিত্র রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকেরও।