Monday, June 23, 2025
Homeশীর্ষ সংবাদবাংলাদেশে কি কঠোর লকডাউন সম্ভব ?

বাংলাদেশে কি কঠোর লকডাউন সম্ভব ?

মোঃ সোয়েব মেজবাহউদ্দিন

সারা বিশ্বের অনেক দেশের সাথে আমাদের বাংলাদেশও করোনাভাইরাস নামক এক মহামারী মোকাবেলার জন্য যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশে বেকার ভাতা চালু আছে, পাশাপাশি উন্নত দেশগুলো করোনা মোকাবেলায় লকডাউন দিয়ে সাধারন নাগরিকের ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দিচ্ছে। তার ফলে সাধারন জনগনের বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়ার প্রয়োজন হয়না। ফলে উন্নত দেশে লকডাউন দিয়ে করানাভাইরাস মোকাবেলায় অনেকটা সফল হয়েছে। অনেক উন্নত দেশ আজ করোনামুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে।

বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমন ধরা পরেছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। করোনায় প্রথম মৃত্যু হয়েছিল ২০২০ সালের ১৮ মার্চ। ২০২১ সালের ২৬ জুন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লক্ষ ৮৩ হাজার ১৩৮ জন। মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫৩ জন। সরকার করোনা মোকাবেলার জন্য ভারত থেকে করোনা টিকা কিনে বিনা পয়সায় সাধারণ মানুষকে দিয়েছে। করোনা মোকাবেলায় লকডাউন দিয়ে বিভিন্ন শ্রেনীর ব্যবসায়ীর মধ্যে প্রনোদনা প্যাকেজ দিয়েছে।

কিন্তু কতিপয় দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কারণে করোনা মোকাবেলা করা সম্ভব হচ্ছে না। সাধারণ মানুষ যারা দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষ, যারা প্রতিদিন রোজগার করে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের পক্ষে লকডাউন মানা সম্ভব হচ্ছেনা। করোনা সংক্রমনের দীর্ঘ ১৫ মাস অতিবাহীত হয়েছে, ২/৩ মাস পূর্বে করোনা সংক্রমন ও মৃত্যু সহনীয় পর্যায়ে ছিল কিন্তু সম্প্রতি আবার করোনা সংক্রমন আবার বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার আবার লকডাউনের ঘোষনা দিয়েছে।

আগামী বৃহস্পতিবার থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হচ্ছে। ইতিমধ্যে দুরপাল্লার বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু করোনা সংক্রমন কমছে না। হঠাৎ করে দুরপাল্লার বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার ফলে বিশেষ প্রয়োজনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকায় আসা মানুষ আটকা পরেছে। সড়ক পথের মানুষ কেউ মটর সাইকেলে, কেউ মাইক্রোবাসে, কেউ পিকআপভেন এবং ফেরী সহ বিভিন্ন পরিবহনে যাতায়াত করছে। বেশী সমস্যায় পরেছে দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ, যারা লঞ্চে চলাচল করতো। লঞ্চ চলাচল বন্ধ হওয়ার অনেক লোক জটিল রোগীকে নিযে আসা সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি ষ্টক করা রোগীকে এয়ার হেরিকপ্টারে করে আনতে হয়েছে। যা সাধারন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।

গত ১৫ মাস সকল সরকারী ও বেসরকারী অফিস সীমিত আকারে চললেও বন্ধ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে অনেক বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্টানের কর্তৃপক্ষ শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা না দিতে পারায় বন্ধ করে দিয়েছে তার হাতে গড়া স্বপ্নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বেকার হয়ে পরেছে লক্ষ লক্ষ শিক্ষক কর্মচারী। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রেখেছে, কিন্তু সব শিক্ষার্থীর অভিভাবকের পক্ষে ইন্টারনেট সংযোগ কিনে অনলাইন ক্লাশ পরিচালনা সম্ভব হয়নাই। বন্ধ হয়ে গেছে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা। একটু চেষ্টা করলে শিক্ষকরা স্বাস্থবিধি মেনে শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে পারত। শিক্ষা জাতীয় মেরুদন্ড। করোনাভাইরাস সেই শিক্ষার মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। আমরা চাই করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আমাদের দেশ সফল হউক। সব কিছু স্বাভাবিক হউক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য