Thursday, June 26, 2025
Homeশীর্ষ সংবাদবন্ধু এম কামালকে নিয়ে আজ কিছু স্মৃতি

বন্ধু এম কামালকে নিয়ে আজ কিছু স্মৃতি

রূবা‌য়েত হা‌ফিজ রুবু, আ‌মে‌রিকা থে‌কে

এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখ ছিল আমার অত্যন্ত কাছের বন্ধু এম কামাল পারভেজের ২০ তম মৃত্যু বার্ষিকি।আমি কামালের বিদেহী আত্বার মাগফেরাত কামনা করছি।আল্লাহ তায়ালা আপনি কামালকে বেহেস্ত নসীব করুন। কামালকে নিয়ে আজ কিছু স্মৃতি রোমন্থন করতেই হয়।আমি আর কামাল ছোট বেলা থেকেই ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলাম।ও ছিল খুবই সাহসী ।কোথাও কোন অন্যায় দেখলে সাথে সাথেই প্রতিবাদ করত।লাভ ক্ষতির কোন হিসাব করত না। আমরা বন্ধু মহল নামে একটি সংঘটন করেছিলাম।যার মূল উদ্দেশ্য ছিল অসহায় মানুষের পাশে দারানো।দল মত নির্বিশেষে সকলেই এই সংঘটনের সদস্য হতে পারত।কামাল মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত এর সদস্য সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজারের মত।লালমোহন থানা এবং পার্শ বরতী থানা গুলোতেও এই সংঘটনের সদস্য ছিল।কামাল এই সংঘটনের মূল ভূমিকা পালন করেছিল এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিল।

কামাল আমাকে বলত স্যারের েআমার শ্রদ্ধেয় পিতা মরহুম আলহাজ্ব ইউনুছ মিয়া)কামালের প্রতি দোয়া আছে তাই কামাল বড় বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে।এটা ওর বিশ্বাস ছিল। কামাল আর আমি একদিন থানার সামনে বসে চা খাচ্ছিলাম।আমাদের সাথে ছিল লালমোহনের সকলের কাছে মানসিক রুগি হিসাবে পরিচিত ইয়াছিন ভাই।যার হাত দ্বারা যেকোন সময় যে কেও মার ধরের শিকার হতেন।কোন বাচ বিচার ছিলনা। তখন আববা পূর্ব দিক থেকে বড় মসজিদের উদ্দেশ্যে হেটে আসছিলেন।কামাল ইয়াছিন ভাইকে জিজ্ঞেস করল কে আসতেছে?ইয়াছিন ভাই আছতে আছতে বলল স্যার আসতেছে।কামাল আমাকে বলল দেখছস পাগল হইলেও স্যারেরে এখনও কেমন ভয় পায়। ইয়াছিন ভাই লালমোহন হাই স্কুলের খুব মেধাবী সটুডেনট ছিল। লালমোহনের আর একজন পাগলের কথা না বললে লালমোহনের ইতিহাস পরিপূর্নতা পাবেনা।তিনি হলেন আবুদি পাগলি।সারা দিন রাত্র লালমোহন বাজার টাকে মাতিয়ে রাখত।সবার কাছ থেকে চেয়ে চেয়ে অনেক গুলো টাকা পেত।আর কেও যদি তাকে একবার বলত আবুদি কালা আইয়ে বদিরা আইয়ে সাথে সাথে সব টাকা গুলো ছিরে ফেলত।আর কেও হাতে করে টাকার ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার সময় আবুদি ব্যাগ চাইলে দিয়ে দিত।আবুদি পাগলি সারা বাজার ঘুরে যার ব্যাগ তাকে দিয়ে বলত আমাকে একটা টাকা দে।চেয়ে ওই এক টাকাই নিত।ব্যাগের ভিতর তাকিয়ে দেখতেও না।এটাই হল নৈতিকতা।সুযোগ থাকা সত্বেও আমানত খেয়ানত করত না।অনেক রথী মহারথীদের তার কাছ থেকে এই শিক্ষাটা নেওয়ার আছে।

২০০১ নির্বাচনের আগে লালমোহন বাজারে দুইজন চেয়ারম্যান মারধরের শিকার হয়েছিলেন।ঠিক ওই সময় আমি আর কামাল লালমোহন আওয়ামীলীগের বর্তমান সাধারন সম্পাদক কে আক্রমণের হাত থেকে সেইফ সাইটে নিয়ে যাই।এবং ২০০১ সনের নির্বাচনের পর কামালের ভূমিকা গুলো আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছিল।আমাকে নিয়ে ও প্রতিটা নম গ্রামের পরিস্হিতি পর্যবেক্ষণ করেছে।যেখানে যতটুকু করার সেটাই করেছে।হরিগঞ্জের হোসেন চেয়ারম্যানের বাডীতে গিয়ে তার বড় ভাইর সাথে আলাপ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছে।আমার সাথে আলাপ ছাড়া কোন সিদ্যানত নিত না।আমাকে ছাড়া কোথাও যেতও না। মারা যাওয়ার আগে ওর সাথে আমার কথা হয়েছিল থানার মোরে।আমাকে বলেছিল আমি একটু ভোলা এল জি ই ডি অফিসে যাচ্ছি ।বিকালে এসে তোকে নিয়ে ভোলা বাংলাবাজার সার্কাস দেখতে যাব।এটাই ছিল কামালের সাথে আমার শেষ কথা।এক সাথে আর সার্কাস দেখা হয়নি।আমার মনে একটা কষ্ট আছে,সেটা হচ্ছে কামাল একসিডেন্ট করে অসুস্হ হওয়ার পর প্রোপার ট্রিটমেনট পায়নি। কামালের মৃত্যুর পর প্রথম মৃত্যুবারষিকি উদযাপন কমিটিতে আমাকে আহবায়ক করা হয়েছিল।দুই হাজার লোকের খাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল।র্র্যালিতে প্রচুর লোকের সমাগম হয়েছিল।রান্না করা হয়েছিল আমাদের বাড়ীর বৈঠক খানার সামনে।আয়োজনটি সুন্দর ভাবে শেষ করতে পারব কিনা সেই টেনশনে আমার দু রাত ঘূম হয়নি।অবশেষে সকলকে নিয়ে সুন্দর ভাবেই শেষ করতে পেরেছি। কামালের পিতা মরহুম হানিফ হাওলাদার সাহেব সমাজে একজন মান্য গন্য ব্যাকতি ছিলেন।তার সালিশ বিচার বেশ প্রশংসিত ছিল।কামাল অসহায় মানুষের পাশে এসে দারাত।তার প্রতিদান আমরা কামালের জানাজাতে দেখেছি।ব্যাপক মানুষের সমাগম হয়েছিল ওর জানাজাতে।লালমোহনের রাজনীতিতে কামালের নামটি অবশ্যই স্বরনীয় হয়ে থাকবে।কামালের সাথে আমার অনেক সৃতি বিজরিত।হয়ত বেঁচে থাকলে পরবর্তী মৃত্যুবারষিকি গুলোতেও ধারাবাহিক ভাবে লিখব।মানুষ ভূল ত্রুটির উর্ধে না।তেমনি ভূল ত্রুটি কামালেরও থাকতে পারে।আমারও থাকতে পারে।সেই ভূল ত্রুটি গুলো ক্ষমা সুলদর দৃষ্টিতে দেখে ওকে এবং আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।পরিশেষে বন্ধু মহলের সকল সদস্য ও সুভানুধ্যায়িদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে আপনারা সকলে কামালের জন্য দোয়া করবেন।আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসীব করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য