মোঃ সোয়েব মেজবাহউদ্দিন
দীর্ঘ ২ বছর সাংবাদিকতা করার সময় পরিচয় হয় সাংবাদিক সিদ্দিকুর রহমান মান্নার সাথে। লালমোহনের কৃষি ফসল আবাদের সমস্যা এবং এর করনীয় বিষয়ের উপর একটা প্রতিবেদন সাপ্তাহিক ভোলাবানীতে প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি সাপ্তহিক ভোলাবানী শেষের পাতায় ৩ কলামে সুন্দরভাবে প্রকাশ করে।সিদ্দিকুর রহমান মান্নার প্রতিবেদনটি আমার ভাল লেগেছে। তার তথ্যবহুল প্রতিবিদেনেটি ছিল প্রসংশনীয়। মান্নার সাথে পরিচয় হবার পর আমি তাকে নিয়ে আরজু রেষ্টুরেন্টে বিকালের নাস্তা করি এবং আমাকে তার মত প্রতিবেদন লেখার ব্যাপারে সহযোগিতা করার অুনরোধ করি। পরবর্তীতে সাংবাদিকতায় আগ্রহী মোঃ আনোয়ার চৌধুরীর সাথে পরিচয়। আনোয়ার জানায় সে ভোরের কাগজ, প্রথম আলো, ইত্তেফাক পত্রিকার সংবাদ ও প্রতিবেদন নিয়মিত পরে এবং সেইসব সংবাদ অনুকরণ করে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রেরন করেছে। অনেক পত্রিকা তার লেখা প্রকাশ করেছে। আমি তার সাংবাদিকতায় আগ্রহে মুগ্ধ হলাম। পরবর্তীতে লালমোহনে সাংবাদিকতায় যুক্ত হলো মোঃ মহিবুর রহমান আদনান, মোঃ আজাদুজ্জামান, মোঃ মহসিন, মোঃ জাহিদুল ইসলাম দুলাল, মোঃ আব্দুস সাত্তার এবং ডাঃ মোঃ আশ্রাফ উদ্দিন বাবলু।
সাংবাদিকের সংখ্যা বাড়লেও তাদের একত্র হয়ে বসার কোন জায়গা ছিল না। বালিকা বিদ্যালয়ের সড়কে ভুমি অফিসের কানুংগো সাহেবের বাসার পাশে লালমোহন প্রেস ক্লাবের নামে একটি টিনের ঘর ছিল। কিন্তু তৎকালীন এক ভুমি কর্মকর্তা সেটা উৎকোচের বিনিময়ে এক ঔষধ ব্যবসায়ীকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ দেয়। সেটা এখন একটি ঔষধের দোকান।

আমরা প্রেসক্লাবের সম্পত্তি উদ্ধারের লক্ষে লালমোহন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আঃ রাজ্জাক স্যারকে অনুরোধ করি। তিনি অক্ষমতা প্রকাশ করে লালমোহন প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র অনুয়ায়ী পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সদস্য আহবান করে আমাদের নিয়ে ১৯৯৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর লালমোহন প্রেস ক্লাবের নতুন একটি কমিটি করেন। নতুন কমিটির মোঃ সোয়েব মেজবাহউদ্দিন সভাপতি, ডাঃ মোঃ আশ্রাফ উদ্দিন বাবলু ও মোঃ আনোয়ার চৌধুরী সহ-সভাপতি, মোঃ মহিবুর রহমান আদনানকে সাধারন সম্পাদক, মোঃ জাহিদুল ইলাম দুলালকে সহ-সম্পাদক।

নতুন কমিটিকে অনুমোদন দেন সাবেক সভাপতি প্রধান শিক্ষক আঃ রাজ্জাক।আমি নতুন কমিটিকে নিয়ে একটা রুম ভাড়া করে যখন লালমোহন প্রেসক্লাবের কাজ শুরু করি, তখন হঠাৎ করে লালমোহন সহঃ জজ আদালত (ভোলা)হইতে ০৭/১০/১৯৯৯ইং একটা নোটিশ আমার নামে আসে। সেই নোটিশ হচ্ছে, মোঃ জাকির হোসনে, পিতাঃ মোঃ আব্দুল খালেক নামের এক ব্যক্তি আমাদের প্রেস ক্লাবের নতুন কমিটিকে “তথা কথিত লালমোহন প্রেস ক্লাব” হিসাবে উল্লেখ করে নতুন কমিটির কাজ স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য মামলা করেছে। মামলা নং ৬১/৯৯। নোটিশে বলা হয়েছে, আদালত লালমোহন প্রেস ক্লাবের নতুন কমিটির কাজ এর উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরবর্তীতে আমরা উকিলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে আদালতে হাজির হয়ে আমাদের কমিটির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ আদালতে জমা দেই। দীর্ঘ ২ বছর মামলা চলার পর ২০০১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আদালত মোঃ জাকির হোসেনের দায়ের করা মিথ্যা মামলা খারিজ কেরে দেন।



ফলে আমাদের লালমোহন প্রেস ক্লাবের ১৯৯৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর গঠিত কমিটি আদালতের রায়ে বৈধতা পায়। কিন্তু মোঃ জাকির হোসেন মামলা চলাকালীন উক্ত দুই বছর মোঃ আল কাইয়ূম নজরুল ইসলাম কে সভাপতি এবং মোঃ জাকির হোসেন নিজে সাধারন সম্পাদক হয়ে লালমোহন প্রেসক্লাবের নতুন এক কমিটি করে তার কাজ চালিয়ে গেছেন। জীবিকার তাগিদে আমি, সহ-সভাপতি মোঃ আনোয়ার চৌধুরী ও সাধারন সম্পাদক মোঃ মহিবুর রহমান আদনান লালমোহন ছেড়ে চলে আসার পর ১৯৯৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর গঠিত লালমোহন প্রেস ক্লাবের আদালতের রায়ে বৈধ কমিটির কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় নাই। কিন্তু আদালতের রায়কে অবমাননা করে, মোঃ সোহেল আজিজ শাহীনকে সভাপতি এবং মোঃ জাকির হোসেন নিজে পুনরায় সাধারন সম্পাদক হয়ে তার অবৈধ প্রেসক্লাবের কাজ চালিয়ে যায়। বর্তমানে ভোলার লালমোহনে, মোঃ আব্দুস সাত্তার সভাপতি ও মোঃ জসিম উদ্দিন সাধারন সম্পাদক এর লালমোহন প্রেস ক্লাব নামে যে সংগঠন চলছে তা মোঃ জাকির হোসেন এর তৈরী করা অবৈধ প্রেসক্লাবের ধারাবাহিকতা।যা আদালতের রায়ের অবমাননা। মোঃ জাকির হোসেন অনেকদিন আগে লালমোহনে এক সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায়। আমি তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।(চলবে)