Monday, June 23, 2025
Homeদেশগ্রামলালমোহনে দিনমজুরি করে জীবন কাটে শতোর্ধ বয়সী জেবল হকের

লালমোহনে দিনমজুরি করে জীবন কাটে শতোর্ধ বয়সী জেবল হকের


জাহিদ দুলাল, লালমোহন ভোলা প্রতিনিধি:
৬৫ বছর বয়স পেরুলেই যে কোন ব্যক্তি বার্ধক্যে উপনীত হন। এরপর ধীরে ধীরে শারীরিক সক্ষমতা দুর্বল হতে থাকে। বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে ক্রমান্বয়ে বিছানাকে সঙ্গী করতে শুরু করেন। অন্যের উপর নির্ভর করে চলতে থাকে জীবনের বাকি সময়টুকু। এর ব্যতিক্রম দেখালেন দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বশির উদ্দীন হাজী বাড়ীর দিনমজুর বৃদ্ধ মো. জেবল হক মিয়া (১১০)। তার বয়স শতবর্ষ পেরিয়েছে প্রায় এক যুগ আগে । তিনি দিনমজুরি করে চালাচ্ছেন তার সংসার। জীবন যাপন করছেন দুঃখ কষ্টে।
বৃদ্ধ মো. জেবল হক মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায়, জন্ম কত সালে তা ঠিক মনে নেই তার তবে এটুকু বলতে পারে একশ দশ হয়েছে তার বয়স। শ্রবন শক্তি কমে গেছে তার পরও সব কিছু মনে আছে তার চোখে দেখলেই চিনতে পারেন তিনি স্বজনদের । তিনি বলেন তার পিতা মৃত আনা মিয়া, বশির উদ্দিন হাজী বাড়িতেই জম্ম গ্রহণ করেন। লালমোহন সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা তিনি । ১৫ সন্তানের জনক তিনি। সাত ছেলের তিন জনই মারা গেছেন । আট মেয়ের মধ্যে সাত জন বেঁচে আছেন। তার সন্তান সন্ততি থাকলেও কেউই খোঁজ খবর রাখেন না তার। দিনমজুরি করে অনেক কষ্টে মোটামুটি পেট চালান তিনি । রমজানে নিয়মিত তারাবিহ সহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে দাঁড়িয়ে আদায় করেন তিনি । বৃদ্ধ জেবল হক মিয়া তার ফেলে আসা মধুর দিন গুলির অনেক স্মৃতিচারন করলেন অকপটে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি নিজের জমিতে ফসল ফলানো, নিড়ানি দেয়াসহ সব কাজ তিনি নিজেই করেন । তিনি ৪০ শতাংশ (৫ গন্ডা) জমিতে ধান, মরিচ সহ বিভিন্ন প্রকার চাষাবাদ করেন। কোন সন্তানরাই তার সহযোগিতা করেননা বলে জানান তিনি। স্ত্রী মারা গেছেন ৮-১০ বছর আগে। বৃদ্ধ জেবল হক মিয়া তার দ্বিতীয় মেয়ে আচিয়া (৭০) (স্বামী পরিত্যক্ত) কে তার বাড়ীতে নিজের সাথেই রাখেন। তার খাওয়া দাওয়া যতœ এমনকি দেখাশোনা মেয়ে আচিয়াই করেন। তার নাতি নাতনি সহ অসংখ্য নিকটাত্মীয় রয়েছেন কিন্তু কেউই তার কাজে আসছে না। তিনি বলেন সরকারি ভাবে একটা বয়স্ক ভাঁতার কার্ড আছে তার। বৃদ্ধ বলেন ভাঁতার ১৫ শত টাকা করে কয়েক মাস পর পর পাই তা দিয়ে কি হয়? ঔষধ কিনতে হয় মাসে অনেক টাকার । তিনি স্থানীয় জন প্রতিনিধি এবং বিত্তবানদের নিকট ও সরকারি- বেসরকারি সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ ব্যপারে লালমোহন উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. মাসুদ বলেন, তিনি বয়স্ক ভাঁতা পেয়ে থাকলে আমাদের অফিস থেকে তাকে আর কোন সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে তাদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য