মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেওয়া মিয়া জাহিদুল ইসলাম ওরফে মিয়া আরেফি দাবি করেছেন, তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর ফাঁদে পড়েছিলেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে মিয়া আরেফিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তারের পর তাকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেছি, কিছু বিষয়ের উত্তরও পেয়েছি। তবে কিছু বিষয় অস্পষ্ট ও দ্বিমত পোষণ করায় আমরা চিন্তা করলাম, কারাগারে গিয়ে (মিয়া আরেফিকে) জিজ্ঞাসাবাদ করি।’
ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে তিনি (মিয়া আরেফি) আমাদের জানিয়েছেন, তিনি ট্র্যাপে (ফাঁদ) পড়েছেন। তিনি বলেছেন, বিএনপি নেতা সারওয়ার্দী তাকে ট্র্যাপে ফেলেছেন। তাকে দেশে এনে বিভিন্ন নেতাকর্মীর নম্বর দেন। মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস ও আবদুল আউয়াল মিন্টুর নম্বর দিয়ে বলেছেন তার (সারওয়ার্দী) কথা বলার জন্য। নেতাদের কাছে গিয়ে তার প্রশংসা এবং হাইলাইট করার জন্য বলেন। তিনি (মিয়া আরেফি) আবদুল আউয়াল মিন্টুর বাসায় যান। এসব কাজ করতে সহায়তা করেছেন সারওয়ার্দী।’
হারুন বলেন, ‘লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর এগুলো করার উদ্দেশ্য হলো বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে তিনি ভালো একটি পদ পাবেন। এসবের জন্যই এটি করেছেন। তবে মিয়া আরেফি স্বীকার করেছেন, তিনি বুঝতে পারেননি তার সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করে ট্র্যাপে ফেলা হয়েছে। এখন তিনি অনুতপ্ত এবং ঠিক করেননি বলে মনে করেন।’
এ কাজগুলো করার পেছনে মিয়া আরেফির উদ্দেশ্য কী ছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তার লাভ বলতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী সরকারে ভালো অবস্থানে যাবেন। তখন তাকে দিয়ে তিনি লাভবান হবেন বা ভালো কিছু পাবেন।’
হারুন বলেন, ‘মিয়া আরেফির কখনো জো বাইডেনের সঙ্গে কথাই হয়নি। তবে ২০২১ সালের করোনা চলাকালে ১০-১৫ জনের একটি জুম মিটিং হয়। সেখানে বাইডেনের স্ত্রীর সঙ্গে জুম মিটিংয়ে দেখা হয়েছে। এ ছাড়া তার সঙ্গে কখনো দেখা বা কথাও হয়নি।’
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক মিয়া আরেফি। তিনি নিজেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দেন। পরে ২৯ অক্টোবর রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।