মোঃ সোয়েব মেজবাহউদ্দিন
“মাদক” প্রথমে নেশাগ্রস্থ করে ধ্বংস করছে একজন যুবককে। সেই যুবক ধ্বংস করছে একটি সাজানো গোছানো পরিবারকে। এভাবে পরিবারের পর পরিবার ধ্বংস হয়ে ধ্বংস করছে একটা এলাকাকে, তারপর একটা সমাজকে তারপর দেশ ও জাতি ধ্বংস হতে চলছে। ক্রমান্বয়ে আগামী প্রজন্ম মাদকের কড়াল গ্রাসে ডুবে যাচ্ছে, যা একটি সমাজ ও একটি দেশের জন্য মারাত্নক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
সেখানে আমরা বলি আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ, সেখানে শিশুরা কৈশরে প্রদার্পন করার পর একটি শ্রেনীর জাতীয় শক্র নিজেদের অর্থলোভের কারনে মাদকের মত নিষিদ্ধ ব্যবসা করার জন্য অবুঝ কিশোরদের প্রথমে বিনামূল্যে, তারপর কম দামে মাদক হাতে তুলে দিয়ে সেবন করাচ্ছে। এরপর কিশোরটি ধীরে ধীরে মাদকের নেশা ডুবে যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকার স্কুল কলেজের সামনে চা-চকলেট ও বিস্কুটের দোকানে শিক্ষার্থীরা নাস্তা কিনতে গেলে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা কমিপয় মানুষ রুপী জানোয়ার শিক্ষার্থীদের হাতে মাদক তুলে দিয়ে নেশা ধরিয়ে দেন। এভাবেই যুব সমাজ মাদকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়চ্ছে। ফলে দেশ ও জাতি হারাচ্ছে আগামীর ভবিষ্যত।
একটা শক্তিশালী চক্র মাদক ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছে। আর দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম ক্রমান্বয়ে মেধাশুন্য হয়ে পরছে। মাদক যেভাবে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পরছে তাতে ভবিষ্যতে দেশে পরিচালনার জন্য কোন শিক্ষিত যুব সমাজ খুঁজে পাওয়া মুসকিল হবে।কারণ একটি বিশেষ চক্র উঠতি বয়সী তরুন ও তরুনীদের মধ্য থেকে মেধাবীদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে মাদক।যাতে বাংলাদেশ হতে পারে মেধাশুন্য। তাই আজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষককে লাঞ্চনার স্বীকার হতে হচ্ছে। শিক্ষকের গলায় পড়ান হচ্ছে জুতার মালা, পরীক্ষায় নকল করতে না দেওয়ায় শিক্ষককে হত্যা করা হচ্ছে। শিক্ষক হচ্ছে জাতি গড়ার কারিগড়, আজ সেই শিক্ষকদের মারধোর করা হচ্ছে।আজ আমরা ও আমাদের বিভেক কোথায় গিয়ে ঠেকেছে?
মাদক আজ আর স্বল্প জায়গায় সীমাবদ্ধ নেই, দেশের আনাচে কানাচে, শহর নগর বন্দর, পাড়া মহল্লা, জেলা উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়নেও বিস্তার লাভ করেছে।মাদক কেনার টাকার জন্য ছেলে বাবাকে মারধোর করছে, বাবাকে হত্যা করছে, স্বামী স্ত্রীকে মারধোর করেছ, হত্যা করছে।, ভাই বোনকে হত্যা করছে।, পরিবারে পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। মা
দকের ব্যবসা এখন পুরুষের পাশাপাশি জড়িয়ে পরেছে নারীরা। গাজা, হেরোইন, আফিম, ইয়াবা, সিসা, বাংলা মদ, আরও কত নাম আছে আমার জানা নেই।আইন শৃংক্ষলা বাহিণী প্রতিনিয়ত মাদক সহ মাদক ব্যবসায়ী আটক করছে, কিন্তু আসল মাদক কারবারী থাকছে ধরা ছোয়ার বাহিরে। গাড়ীর চালকরা মাদকাগ্রস্থ হয়ে যাত্রী নিয়ে গাড়ী চালাচ্ছে, প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা।
মাদক ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত নুতন নতুন রুপ ধারন করে তাদের ব্যবসা করছে। তাদের দ্বারা আইন শৃংক্ষলা বাহিনী ও প্রতারিত হচ্ছে। মাদক বহনে তারা বিভিন্ন কৌশল নেয়। ফলে তাদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। তারপরও আমাদের দেশের পুলিশ, র্যাব, সিআইডি, বিডিআর, সেনাবাহিনীসহ সকল আইন শৃংক্ষলা বাহিনী প্রতিনিয়ত মাদকের বড় বড় চালান আটক করছে এবং মাদক ধ্বংস করছে।
বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত করতে হলে আমাদেরকেই সচেতন হতে হবে। আমাদের সন্তানের বিষয়ে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। আমার সন্তান কোথায় যায়, কার সাথে মিশে, নিয়মিত স্কুলে যায় কিনা, সেই খবর রাখতে হবে।বিশেষ করে প্রতিদিন ১/২ ঘন্টা সন্তানদেরকে বাবা মাকে সময় দিতে হবে।বাবা মায়ের অবহেলায় সন্তান বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
মাদকমুক্ত দেশ গড়তে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে সরকারকেও মাদকের ব্যাপারে কঠোর ভুমিকা নিতে হবে। মাদক ব্যবসার সাথে জরিতদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।মাদক সেবন কারীর ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।