
মোঃ রফিকুল ইসলাম
আল্লাহ মানুষের একমাত্র ভরসা এবং তিনিই মানুষকে সুখে শান্তিতে রাখবেন। আল্লাহর রহমত ছাড়া কেউ পার পাবে না। আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য সকাল সন্ধ্যা আল্লাহর নাম স্মরণ করতে হবে। আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি কতৃজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে। আল্লাহর রহস্য জানার চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহর প্রশংসা করতে হবে। তাইতো তিনি পবিত্র কোরআনুল কারিমে বার বার ঘোষণা দিয়েছেন “তোমরা আমার কোন কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করতে পার”
এই দুনিয়াতে আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করবেন বলে ফেরেস্তাদেরকে ডেকে বলেছিলেন। কিন্তু ফেরেস্তারা মহান আল্লাহ তায়ালাকে বিনয়ের সাথে বলেছিলেন “হে আল্লাহ আপনি ইতিপূর্বে জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করেছিলেন তারাতো নিজেদের মধ্যে মারামারি, হানাহানি, কাটাকাটি করেছিলেন, তারাতো সকল সময় জগড়া বিবাদের মধ্যে ছিলেন। আমরাই আপনার হুকুম আহকাম এবং ইবাদত করতে সক্ষম। তাই কেন আপনি মানুষ বানাবেন।”
ফেরেস্তাগনের এরকম কথা শুনে মহান আল্লাহ রাগান্বিত হলেন এবং তিনি আল্লাহ বললেন আমি যাহা জানি তোমরা তাহা জানা না, আল্লাহ কুন বলার সাথে সব কিছু হয়ে যায়। অতএব আল্লাহ মহা জ্ঞানী তাঁর উপর কোন জ্ঞানী নেই। তিনিই একক সত্ত্বা। তাঁর নির্দেশে, তাঁর হুকুমে এই বিশ্ব পরিক্রমা পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি মহান আল্লাহ মাত্র ছয় দিনে এই বিশ্ব পরিক্রমা সৃষ্টি করেছেন। আবার তাঁর হুকুমেই এই বিশ্ব পরিক্রমা ধ্বংস হবে। আবার নির্দেশেই আবার সৃষ্টি হবে। এই ধ্বংস এবং সৃষ্টিই মহান আল্লাহ রহস্য।
মুমিনদের জন্য এই পৃথিবী হলো শস্য ক্ষেত্র। এই পৃথিবীতে যে যত বেশী ফসলের চাষাবাদ করতে পারবে সে তত বেশী ফসল উৎপন্ন করতে পারবে। তদ্রুপ মহান আল্লাহর হুকুম আহকাম যিনি যত বেশী পালন করতে পারবে হাশরের ময়দানে তার তত বেশী নেক আমল হবে।
ইসলাম মুমিনের জন্য সুন্দর ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। যিনি নিজেকে ইসলাম ও সত্যের বিধানের উপর পরিচালিত করতে পারবেন তিনিই দুনিয়ার শান্তি ও পরকালের মুক্তি লাভ করতে পারবেন। পরকাল নিয়ে তাঁর কোন চিন্তা বা ভয় থাকবে না।
কেয়ামতের ময়দানে মুমিনের জীবনের বিস্তারিত হিসাব গ্রহণ করা হবে। তাঁর কর্মের ফলাফল দেখে ফয়সালা নির্ধারণ করা হবে। কর্মের ফল ভালো হলে তিনি জান্নাতে যাবেন আর কর্মের ফল খারাপ হলে তাকে সীমাহীন কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।
“হে রাসুল! যদি তারা সত্য জানার পরও আপনার সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক কলহ-দন্বে জড়িয়ে পড়ে তবে আপনি বলে দিন, আমি ও আমার অনুসারীগণ আল্লাহ পাকের কাছে আত্ম-সমর্পণ করেছি। আর যাদেরকে আসমানি কিতাব দেয়া হয়েছে এবং মুর্খদের/জ্ঞানহীনদেরকে বলে দিন বা জিজ্ঞাসা করুন তোমরা কি আল্লাহর কাছে আত্ম-সমর্পণ করেছ? অত:পর তারা যদি আল্লাহর কাছে আত্ম-সর্ম্পণ করে তবে তারা সুপথ প্রাপ্য হবে। আর যদি ইসলাম গ্রহণ না করে ফিরে যায় তবে আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো-শুধু আমার (আল্লাহর) কথা বা দাওয়াত তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া। আর আল্লাহ পাক তার বান্দাদের প্রতি লক্ষ্য রাখেন। (সুরা আল-ইমরান; আয়াত-২০)
উল্লখিত আয়াতে এ কথা সুস্পষ্টই সত্য ধর্ম এবং তাতে রয়েছে সমুদ্ভাসিত, সমুজ্জল, সুপ্রমাণিত চিরসত্য বিষয়সমূহ।
তারপরও যদি কোন অবিশ্বাসী কাফের এ সত্য ও শান্তির ধর্ম ইসলাম সম্পর্কে কোন ধরণের বিতর্কে লিপ্ত হয় তবে তাদের বিতর্কের জবাব দিতে আল্লাহ তায়ালার শুধু এটুকু বলতে নির্দেশ দিয়েছেন যে, “তোমরা বিশ্বাস কর আর নাই কর আমি আমার চেহারা আল্লাহর সামনে সমর্পণ করেছি। আর আমার অনুসারীরা এ কাজে অনুসরণ করেছে।”
আমরা ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে গ্রহণ করেছি, আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আত্ম-সমরপণ করেছি, শিরক ও কুফরের সব বিষয় বর্জন করেছি। অন্যায়-পাপাচার পরিত্যাগ করেছি। এক আল্লাহর সন্তষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে জীবনসহ সব কিছু উৎসর্গ করতে প্রস্তুত রয়েছি।
আল্লাহ তায়ালা উক্ত আয়াতের শেষের দিকে এ আশ্বাস দেন যে, ইয়াহুদি, খ্রিস্টান ও মুশরিকরা যদি এ দাওয়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে আপনার হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। কারণ আপনার দায়িত্ব শুধু ইসলামের বিপরীতে সব মানুষের কাছে আল্লাহর দাওয়াত পৌঁছে দেয়া।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইসলামের অনুসারী এবং অবিশ্বাসীদের কর্ম-কান্ড সবই দেখেছেন। অবিশ্বাসীদের কর্মফল সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হবে না।
আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে দাওয়াতে ও দ্বীনের কাজে নিয়োজিত থাকার তৌফিক দান করুন। ইসলামে সুন্দর বিধানগুলো মেনে নিজে চলুন এবং মানুষের কাছে তুলে ধরুন। আল্লাহ যেনো আমাদের সকল ইসলামী উম্মাহর সকল মুসলিম ভাইকে সুন্দর জীবন যাপন গঠন করা শক্তি/তৌফিক দান করেন এবং আমাদেরকে যেনো অন্যায়-অপরাধমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ করার তৌফিক দান করুন। আমিন। লেখকঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম, একান্ত সচিব, সিইও এবং চেয়ারপার্সন, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স্ কোঃ লিঃ