দেশব্যাপী বিনামূল্যে এক হাজারের বেশি কিডনি প্রতিস্থাপনকারী আলোচিত অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল ইসলাম স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই ডাক্তারের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
চিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম এ পর্যন্ত তার হাসপাতালে মোট ১ হাজার ৪টি কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন। কিডনি প্রতিস্থাপন করা সব রোগীর ফলোআপ পরীক্ষা করা হচ্ছে বিনামূল্যে। প্রতি মাসে এখানে অন্তত পাঁচ শতাধিক রোগী আসেন ফলোআপ পরীক্ষার জন্য। তাদের সবার ফলোআপ বিনামূল্যে করানো হয়।তাতে রোগী প্রতি পরীক্ষার খরচ আসে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা। এমনকি রিপোর্ট দেখতে কোনো ফি নেয়া হয় না।
আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাবেক কর্মকর্তা ও ঈশ্বরদীর আমিনপাড়া গ্রামের আমিনুল ইসলাম আমিনের মেজো সন্তান কামরুল ইসলাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বাবা আমিনুল ইসলাম পাকশী ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করার ‘অপরাধে’ স্থানীয় রাজাকার ও বিহারীরা তাকে হত্যা করে।
কামরুল ১৯৮০ সালে ঈশ্বরদী উপজেলার চন্দ্র প্রভা বিদ্যাপীঠ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ১৩তম স্থান অর্জন করেন। এরপর উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। সেখানেও মেধা তালিকায় দশম স্থান অর্জন করেন। ১৯৮২ সালে তখনকার ৮টি মেডিকেল কলেজের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় ১ম স্থান অর্জনের পর তার উচ্চশিক্ষা জীবন শুরু হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজে।
ঢাকা মেডিকেল থেকে পাশ করার পর একাদশ বিসিএসে ১৯৯৩ সালে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগদান করেন কামরুল। প্রথমে তিনি ঢাকা মেডিকেলে যোগদান করেন।
ডা. কামরুল ইউরোলজিতে ৫ বছর মেয়াদি এমএস প্রোগ্রাম সম্পন্ন করেন এবং জাতীয় কিডনি ও ইউরোলজি হাসপাতালে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।
সরকারি হাসপাতালের নানা সীমাবদ্ধতার কারণে তিনি ২০১১ সালে সরকারি চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে শ্যামলীতে নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেন কিডনি হাসপাতাল। ডাক্তার কামরুল ৩ কন্যা সন্তানের জনক।