এজিয়ান সাগরে শক্তিশালী ভূকিকম্পে তুরস্কে অন্তত ছয় জন নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবারের এই ভূমিকম্পে বহু ভবন ভেঙে পড়েছে। আর উপকূলীয় এলাকা ও গ্রিস উপদ্বীপে জলোচ্ছ্বাস আঘাত হেনেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও বিবিসির খবরে এসব তথ্য মিলেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সাত মাত্রার এই ভূমিকম্পে ইজমির শহরে লোকজন আতঙ্কে রাস্তায় নেমে এসেছেন। সাগর তীরবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি গ্রামের ধ্বংস হওয়া বাড়িঘর ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। পানি সরে যাওয়ার পর তীরে মাছ আটকে পড়তেও দেখা গেছে। ডিজেস্টার অ্যান্ড ইমারর্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট প্রেসিডেন্সি (এএফএডি) জানিয়েছে, ছয় জন নিহত হয়েছেন। তাদের একজনের মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে। এছাড়াও ২০২ জনের মতো লোক আহত হয়েছেন। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন প্রদেশের ভবন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইজমিরের মেয়র টিনক সোয়ার বলেন, প্রদেশটিতে অন্তত ২০টি ভবন ধসে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে অন্তত ৭০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।তুরস্কের অন্যতম পর্যটন শহর ইজমিরের বিভিন্ন শহরে ভেঙে পড়া বাড়িঘরে লোকজনের আটকে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। সেফিরিহিসারের মেয়র ইসমাইল ইয়েটিসকিন বলেন, ভূমিকম্পে সমুদ্রের স্তর বেড়ে গেছে। ছোটখাট সুনামি আঘাত হেনেছে বলে মনে হচ্ছে। আর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বন্যার পানিতে ফ্রিজ, চেয়ার ও টেবিল ভাসছে। পানি থেকে গাড়ি তুলে স্তূপ করেও রাখতে দেখা গেছে। শুধু তুরস্কই নয়, গ্রিসেও এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। সেখানেও বেশ কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রিসের রাজধানী এথেন্স এবং তুরস্কের ইস্তাম্বুলেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপসংস্থা ইউএসজিএসর তথ্যানুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল গ্রিসের সামোস দ্বীপের কারলোভাসি শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে। এর মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭। তবে এর মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৬ বলছে তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, গ্রিসের ভূমিকম্প জরিপ সংস্থা বলছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৭। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। গ্রিসের সরকারি টেলিভিশনে বলা হচ্ছে, ভূমিকম্পের পর পূর্বাঞ্চলীয় এজিয়ান সাগরের সামোস দ্বীপে ক্ষুদে-সুনামির সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিকমাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, সাগরের উত্তাল গর্জনে ইজমির শহরের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। নগরীতে ভবন ধসের স্থানগুলো থেকে ঘন সাদা রঙয়ের ধোয়া উড়ছে। স্থানীয়রা স্বজনদের উদ্ধারে এদিক সেদিক ছুটছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে তল্লাশি চালাচ্ছেন তারা।