লালমোহন ( ভোলা) প্রতিনিধিঃ
ভোলার লালমোহনে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এক বখাটের নিক্ষেপ করা পেট্রোলে ঝলছে গেছে মা ও মেয়ের শরীর। শনিবার সন্ধ্যার পরে উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড গজারিয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্বজনরা।
আহতরা হলেন ওই এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মহিবুল্যাহর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস নাঈমা (২২) ও তার স্ত্রী নাজমা বেগম (৫০)। অভিযুক্ত বখাটের নাম মহিউদ্দিন সুমন, সে একই এলাকার নুরুল ইসলাম পাটোয়ারীর ছেলে।
আহত জান্নাতুল ফেরদৌস নাঈমার ভাই মো: আশরাফ হোসেন জানান, অভিযুক্ত সুমন দীর্ঘ দিন ধরে জান্নাতুল ফেরদৌস নাঈমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছেন, জান্নাতুল ফেরদৌস নাঈমা তা প্রত্যাখান করেন। ২১ আগস্ট শনিবার জান্নাতুল ফেরদৌস নাঈমাকে দেখতে পাত্র পক্ষ বাড়িতে আসে, এতে ক্ষিপ্ত হন সুমন। তাই রাতে রান্না করার সময় সুমন পলিথিনে করে পেট্রোল নিক্ষেপ করলে তা চুলায় পড়ে আগুন ধরে যায়। আগুনে প্রথমে জান্নাতুল ফেরদৌস নাঈমা, পরে তার চিৎকারে তাকে রক্ষা করতে এসে তার মা গুরুতর আহত হন।
লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত মেডিক্যাল অফিসার ডা: মো: ফাহাদ নাসির জানান, ওই রোগীরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এলে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
আগুনে জান্নাতুল ফেরদৌস নাঈমার শরীরের বিভিন্নস্থানের প্রায় ২৫ শতাংশ এবং তার মা নাজমা বেগমের হাতের প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ পুড়ে যায়। জান্নাতুল ফেরদৌস নাঈমার অবস্থা মারাত্মক হওয়ায় তার মাসহ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকসুদুর রহমান মুরাদ বলেন, ৯৯৯ থেকে একটি কলের ভিত্তিতে হাসপাতালে গিয়ে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলেছি। ঘটনার সত্যতা জানতে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাই। আজ ২২ আগস্ট লালমোহন থানায় মামলা হয়েছে মামলা নং ১২, আসামী ছেলে ও তার বাবা।
এদিকে স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত সুমনের সাথে জান্নাতুল ফেরদৌস নাঈমার দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক থাকতে পারে কিন্তু মেয়ে পক্ষ বলছে কোন সম্পর্ক ছিল না। প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল তাই প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়েই সুমন এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। স্থানীয়রা অনেকে বলেছেন প্রেমের সম্পর্ক থাকলেই কি পেট্রোল মেরে আগুন লাগিয়ে দিতে হবে। তাছাড়া জান্নাতুল ফেরদৌস নাঈমাকে দেখতে আসছিল তাকে তো বিয়ে দিয়ে দেয়নি। স্থানীয়রা এর ঘটনার তীব্র নিন্দা ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করছেন।