Wednesday, June 25, 2025
Homeঅপরাধলালমোহনে আপন ভাইকে হত্যার হুমকি, আদালতে মামলা

লালমোহনে আপন ভাইকে হত্যার হুমকি, আদালতে মামলা

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি:

দীর্ঘ ৩১ বছর আমেরিকা থেকে দেশে এসে মানব সেবা করতে গিয়ে আপন দুই ভাইয়ের বিভিন্ন নিপিড়নের শিকার হচ্ছেন ভোলার লালমোহনের মোফাজ্জল হোসেন নামের এক প্রবাসী। দেশের বাহিরে থাকাকালীন ভাইদের দিয়ে এলাকায় উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড ও জায়গাজমি ক্রয়ের জন্য টাকা পাঠালেও ওই ভাইয়েরা সব কিছু তাদের নিজেদের নামে করে নেয়। এর মধ্যে এক ভাইকে টাকা দিয়ে ইউপি নির্বাচন করতে সহযোগিতা করেন। পরে ওই ভাই চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হন। এমনকি মসজিদ মাদ্রাসা নির্মানের জন্য টাকা পাঠালে ভাইয়েরা সে টাকাও আত্মসাৎ করেন। পিতার সম্পত্তি থেকেও মোফাজ্জল হোসেনকে বঞ্চিত করার জন্য বিভিন্নভাবে উঠে পরে লেগেছে ওই আপন দুই ভাই। নিজের সম্পতি মসজিদ মাদ্রাসার নামে উইল করে দেয়ার ঘোষণা দিলে প্রবাসী মোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেন আপন ছোট দুই ভাই।

জানা যায়, উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মৃত হাজী আ: মোতালেবের তিন ছেলে। বড় ছেলে মো. মোফাজ্জল হোসেন, মেজো ছেলে তোফাজ্জল হোসেন এবং ছোট ছেলে আবদুল হান্নান। এদের মধ্যে মোফাজ্জল হোসেন প্রায় ৩১ বছর আমেরিকা ছিলেন এবং তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা এখন আমেরিকাতে বসবাস করছেন।

এ ব্যাপারে মোফাজ্জল হোসেন বলেন, দীর্ঘ ৩১ বছর পর আমেরিকাতে স্ত্রী সন্তানদের রেখে নিজ জন্মভূমিতে চলে আসি। আসার পর নিজের সব সস্পত্তি মসজিদ ও মাদ্রাসার নামে উইল করে দিবো এবং সমাজসেবা মূলক কাজ করবো, এই ঘোষণা মানতে পারেনি আমার ছোট দুই ভাই। এরপর থেকে তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। আমি জানতে পারি, আমার পাঠানো টাকায় কেনা হরিগঞ্জ বাজারে ২টি ভিটা তাদের নিজেদের নামে দলিল করে। পিতার ওয়ারিশ সম্পতিও তাকে ঠিক মত বুঝিয়ে না দেয়ায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করলে তিনি বাবার রেখে যাওয়া সম্পতি ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে বন্টন করে যার যার দখল বুঝিয়ে দেন। এরপর আমি আমার সম্পত্তির চারপাশে পিলার ও কাটাতার দিয়ে বেড়া দিয়ে রাখি। এবং সে সম্পত্তিতে দীর্ঘ ৬/৭ বছর যাবত মাছের ঘের, মুরগীর ফার্মসহ বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছ লাগাই। এতে এখন আমার অংশের জমি মূল্যবান হয়ে উঠে। আর তাতেই চক্ষুসূল হয়ে উঠে ছোট ভাইদের। গত জুন মাসের ১০ তারিখ রাতে খামারের পিলারের কাটা তার কেটে ফেলে দূর্বৃত্তরা। তখন আমি লালমোহন থানায় সাধারণ ডায়েরী করি। এরপর গত আগষ্ট মাসের ২১ তারিখ পুকুরের কাটা তারের বেড়া কেটে মাছ ধরে নিয়ে যায় এবং ওই দিন বাগান বাড়ীতে ফসলাদি দেখতে গেলে হঠাৎ ছোট ভাই তোফাজ্জল হোসেন তার লোকজন নিয়ে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং দেশত্যাগ না করলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তখন আমি ভোলা আদালতে ছোট ভাই তোফাজ্জলসহ তার সহযোগিদের নামে মামলা দায়ের করি। যা এখনও বিচারাধীন। এছাড়া ছোট ভাই আবদুল হান্নানও গত ২৩ আগষ্ট আমাকে মারার জন্য চেষ্টা চালায়। যার জন্য ছোট ভাই হান্নানের বিরুদ্ধেও আদালতে মামলা দায়ের করি।

মোফাজ্জল হোসেন আরো বলেন, তার প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়ভাবে কোন বিচার না পাওয়ায় নিজের নিরাপত্তার জন্য আদালতে মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। আমি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। এরপরেও তারা আমাকে একেক সময় একেক লোকের কর্মী বানিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এদিকে আমার শরীরের অবস্থা তত ভালো নয়। নানা রোগে আক্রান্ত। তবুও আমার ছোট ভাইয়েরা অমানবিকভাবে অত্যাচার করছে। আমি তাদের এসব কর্মকান্ডের ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার কামনা করছি।

এ ব্যাপারে মোফাজ্জল হোসেনের ছোট ভাই তোফাজাল হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার ছোট ভাই আবদুল হান্নানকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, বড় ভাইয়ের অভিযোগ সত্য নয়। উল্টো সে বাবার সম্পতি জোর করে বেশি দখল করে রেখেছে। আমরা তাকে বাড়ী থেকে উৎখাত করিনাই। স্থানীয় শালিসেরা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সে তাও মানে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য