Tuesday, June 24, 2025
Homeঅপরাধমোহাম্মদপুরে প্রধান শিক্ষিকার অত্যাচারে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা

মোহাম্মদপুরে প্রধান শিক্ষিকার অত্যাচারে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা

রাজধানী মোহাম্মদপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নবযুগ আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অত্যাচার, শিক্ষার্থীদের শরীরিক নির্যাতন ও অভিভাবকদের সাথে অসদাচরনে অতিষ্ট অভিভাবকগন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন না করলে বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীশুন্য হওয়ার আসংখ্যা করেছেন স্থানিয়রা।

অভিযোগ মতে- মোহাম্মদপুর শেরশাহ্ শাহী রোডে অবস্থিত নবযুগ আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৬ সালে সেপ্টেম্বরে যোগদান করেন প্রধান শিক্ষিক পারভীন আক্তার। যোগদানের পর থেকেই একের পর এক কর্মকান্ড জম্মদিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে।

বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানো, শিক্ষার্থীদের দিয়ে বিদ্যালয় ঝাড়ু দেওয়া বাথরুম পরিস্কার করা যেন নিয়মে পরিনত হয়েছে। যদিও আয়া বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ভর্তির সময় ৩ থেকে ৫ শত টাকা আদায় করার অভিযোগ আছে। ভর্তি ফি ধার্য্য না থাকলেও ভর্তির সময় প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে ভর্তি ফি বাধ্যতামুলক। গত বছরও এ বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রী ছিলো হেনা। বাথরুম পরিস্কার করানো, পড়া না পারার উছিলায় মারধরের কারনে সে অন্যত্র চলে যায়। একই ভাবে গত বছরের ৩য় শ্রেনীর ছাত্রী মাহি আক্তার, ২য় শ্রেনীর ছাত্র ইকবাল সহ অনেকেই স্কুল ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়।

অপরদিকে মায়াবী আক্তার মায়া, জান্নাতুল বিথি ৫ম শ্রেনীর ছাত্রী। তাদেরকে দিয়ে অফিস রুম পরিস্কার ফ্লোর মোছানো কাজ করায়। ছাত্রীরা একাজ করতে না চাইলে স্কেল দিয়ে মারধর করে এবং প্রধান শিক্ষক নিজেই স্বপ্রনোদিত হয়ে অভিভাবককে ফোনে বলে– আপনার সন্তান পড়াশুনা করছে না / পারছে না। ফলে সন্তানরা বাসায় এসে তাদের প্রতি অন্যায় ও কাজ করা মারধর করার বিষয়টি পিতা মাতাকে জানালে তারা বিশ্বাস করে না।

কিন্তু ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রী হেনার মা বিষয়টি বুজতে পেরে প্রধান শিক্ষিকার কাছে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরন করে স্কুল থেকে বের করে দেয়। স্কুল কমিটি বিষয়টি অবগত হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।

সম্প্রতি প্রধান শিক্ষিকা কতৃর্ক ৩য় শ্রেনীর ছাত্র বায়োজিদ সোহানকে স্কেল দিয়ে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেওয়ার ঘটনায় ফের আলোচনায় আসেন প্রধান শিক্ষিকা পারভীন আক্তার। শিক্ষকরা তাহার এহেন কর্মকান্ড প্রতিবাদ করে প্রধান শিক্ষিকার রোষানলে পরতে হয়। তাই কেই প্রকাশ্যে তার প্রতিবাদ না করে নিরবে সহে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান- প্রধান শিক্ষিকার কর্মকান্ড, খামখেয়ালীপনায় তাদেরকে রোষানলে পরতে হয়েছে মানুষিক যন্ত্রনা পোহাতে হচ্ছে।

ম্যানেজিং কমিটি বিষয়টি অবহিত হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় শিক্ষক শিক্ষার্থীও অভিভাবকরা হতাশ।

এ ব্যাপারে মঙ্গলবার বিদ্যালয়ে সরজমিনে গেলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে প্রধান শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে বসে কিছু বলতে রাজী হন নি। ফলে তার ইচ্ছা অনুযায়ী ১৯৯ সিকদার মঞ্জিল শের শাহ্শুরী রোডে তার বাসায় নিয়ে অভিমত ব্যক্ত করেন।

বায়েজীদের পিতা ও মাতা বলেন, পড়া না পাড়ার অজুহাতে স্কেল দিয়ে তার ছেলেকে মেরে হাত ভেঙ্গে দেয়। প্রধান শিক্ষিকার নিকট জানতে চাইলে তিনি অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন এবং এ বিষয়ে কাউকে কিছু না বলতে হুমকি দেন।

প্রধান শিক্ষিকার গত ৬ বছরের অত্র বিদ্যালয়ে অফিস রুমে প্রাইভেট পড়ানো, প্রাইভেট না পড়লে বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের মারধর, শিক্ষার্থীদের দিয়ে কাজ করানো, অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরন সহ শিক্ষকদের সাথে অসাদরন বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন-বিদ্যালয়ে যোগদানের পর তিনি প্রাইভেট পড়াতেন তবে এখন পড়ান না। শিক্ষার্থীদের দিয়ে সাপ্তাহ একবার বিদ্যালয় পরিস্কার করার নিয়ম থাকায় তিনি তাই করেন। এ ছাড়া তিনি বিদ্যালয়ের মান উন্নয়নে কঠোর হওয়ায় তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায় বলে ও জানান।

এসময় তিনি সংবাদ প্রচার না করতে সাংবাদিকদের ম্যানেজের চেষ্টা চালান।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন- এরকম কোন অভিযোগ পাই নি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাহার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য