রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখা ‘কঠিন হয়ে পড়েছে’ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’, ‘শেখ জামাল ডরমিটরি’ এবং ‘রোজী জামাল ডরমিটরি’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যে যুদ্ধ পরিস্থিতি একটা বিশ্ব সংকট তৈরি করেছে। যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে আমেরিকা ও ইউরোপের রাশিয়ার ওপর দেওয়া বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার ফলাফলটা এমন দাঁড়িয়েছে, এখন তেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে, ডিজেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এলএনজির দাম বেড়ে যাচ্ছে।
আমদানি করা গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রাখার জন্য সরকারকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে, সেটা কতক্ষণ দিতে পারবে। কারণ, আমাদের মানুষের খাদ্য দিতে হবে, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে, গৃহহীনদের ঘর দিতে হবে… প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের দিকে আমাদের নজর দিতে হবে।
তিনি বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশীয় পণ্যের দাম যেমন বেড়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি যে সমস্ত পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে, তারও দাম বেড়েছে যাচ্ছে। সব কিছুর দাম এমনভাবে বেড়ে গেছে যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালিয়ে রাখা… আমাদের নিজস্ব যতটুকু গ্যাস আছে, তা ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখাটাই একটা কষ্টকর ব্যাপার হয়ে গেছে। অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে গেছে। সেই বিষয়টাও আপনাদের আমি জানাতে চাই।এদিকে সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম বাড়ছে। ভোজ্য ও জ্বালানি তেল ছাড়াও বিদ্যুৎ, সার, গমসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। ডিজেলের ওপর আমাদের আমদানি নির্ভরতা রয়েছে। আগামী দিনে ডিজেলের দাম আরও বাড়তে পারে। ভবিষ্যত ফাইন্যান্সিয়াল মেকানিজম কী হবে, এটার উত্তর কেউ দিতে পারছে না।
এ সংকট সামাল দিতে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখন একটাই উপায়, ইতোমধ্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি, প্রত্যেক এলাকাভিত্তিক কখন, কোন এলাকায় কত ঘণ্টা লোড শেডিং হবে, এটার একটা রুটিন তৈরি করে সেভাবেই লোড শেডিং। যেন মানুষ সেই সময়টায় প্রস্তুত থাকতে পারে। মানুষের কষ্টটা যেন আমরা লাঘব করতে পারি। সেই বিষয়টাই এখন আমাদের নজরে নিতে হবে। আমি আশা করি দেশবাসী অন্তত এই ব্যাপারে আমাদের সাথে সহযোগিতা করবেন।