Thursday, June 26, 2025
Homeদেশগ্রামরোগীর চাপে ভোলা হাসপাতালে বেডের জন্য হাহাকার

রোগীর চাপে ভোলা হাসপাতালে বেডের জন্য হাহাকার

শাহীন কামাল. ভোলা থে‌কে,

দিন দুয়েক আগের ঘটনা। রাত ১২ টা বাজতে কয়েক মিনিট বাকি তখনও। শুতে যাওয়ার আয়োজন করব। সাইলেন্ট করা মোবাইল ফোনটার দিকে তাকিয়ে দেখি ১২ টা মিসডকল। ভেতরটা শংকায় মোচড় দিয়ে উঠে। হয়তো মৃত্যু সংবাদ। ইতিকে ডাক দিয়ে বলি…. সম্ভবত নেই। ফোন ব্যাক করতেই অপর প্রান্ত থেকে চাচাতো ভাই কান্না জড়িত কন্ঠে বলে উঠে, সবুজকে লালমোহন হাসপাতাল থেকে ভোলা রেফার করেছে। ওরে বাঁচাতে সাহায্য কর। হাসপাতালে যা।..

শরীরটা চলছিল না। রোগীর সমস্যা জেনে মনে হলো করোনাও হতে পারে। এত রাতে রিকশা পাব কিভাবে? তারপরও বাসার ড্রেসেই বের হলাম। অনেকদূর হেঁটে সদর রোড একটা রিকশা পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছি। এম্বুলেন্সে রোগী আসে। ইমারজেন্সিতে রোগী দেখিয়ে বারান্দায় অনেকগুলো রোগীর সাথে জড়সড় করে শুইয়ে রাখি। হ্যাঁ! কোন বেডের চিন্তা করার সুযোগ নেই। আমি জানি, কোন বেড খালি নেই।

অসুস্থ অনেক রোগী হাসপাতালে বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছে। নার্স ও ব্রাদাররা স্যালাইন ও ইনজেকশন পুশ করে যাচ্ছেন। রোগী আসছে। ডাইরিয়া ওয়ার্ডের সামনে অসংখ্য রোগী। বেডছাড়া এবড়োখেবড়ো ভাবে রাখা রোগীর সাথে স্বজনের বসার জায়গাও নেই। এই এক জেলা সদরের প্রধান হাসপাতালের চিত্র৷ নিজের চোখে গভীর রাতে দেখা। মুড়ির টিনের মধ্যে রোগী ঢুকানো অবস্থা!

আমাদের সক্ষমতার খুব বেশি অভাব আছে বলে মনে হয়না। চলমান হাসপাতাল ভবনের সামনে ৮ তলাবিশিষ্ট বিশাল ভবনটিকে এখনও খুলে দেওয়া হয়নি। শ্যাওলা ধরা ভবনটিকে হয়তো খুলে দেয়ার আগেই মেরামত করতে হবে। অথচ এই ভবনটির কোন একটা তলা ডায়রিয়া ইউনিট হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারতো। কর্মচারীদের সাথে আলাপ করে জেনেছি, গত প্রায় দুই মাস এভাবেই বারান্দায় শয়ে শয়ে রোগী চিকিৎসা নিয়েছে।

পুরো জেলায় কোন আইসিউ বেড নেই, ভ্যান্টিলেটর নেই। ঢাকায় যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম লঞ্চ বন্ধ। এম্বুলেন্স খরচ অনেকেরই সামর্থ্যের বাইরে। অবশ্য ঢাকাতেও আইসিউ নিয়ে হাহাকার। এই বড়ো বিল্ডিংএ কোন ধরনের ব্যবস্থা করা যেতো না! অবশ্য যারা ব্যবস্থা করবেন, তারা এখন থাকেন ভদ্র পল্লীতে। এই গাঁ গ্রামে তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য