জাহিদুল ইসলাম দুলাল, লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি:
হেমন্ত ঋতু শেষ হতে চলছে। শীত এসে গেছে। যদিও এখনো পুরোপুরি শীত শুরু হয়নি। প্রতি বছর শীতকে ঘিরে গ্রামের হাট-বাজারে দেখা মিলছে নিত্য নতুন মৌসুমী জিনিসপত্র আর খাবারের। তার মধ্যে এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় জিলাপী। আড়াই প্যাঁচের এই জিলাপির দোকানগুলোতে ধুম পড়েছে বেচা-কেনা।
ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকে জিলাপীর দোকানগুলো। তবে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা চলে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ৮টার মধ্যে। ভোলার লালমোহন উপজেলার বিভিন্ন হাটে এরই মধ্যে জমে উঠেছে জিলাপী বিক্রি। রসালো এই খাদ্যটি প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। যা তৈরি করা হয় চালের গুড়া দিয়ে। বর্তমানে উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে সাধারণত দুই ধরনের জিলাপী দেখা যাচ্ছে। যার মধ্যে আখের গুড় ও চিনির তৈরি জিলাপী রয়েছে। দুই ধরনের জিলাপীর দাম একই। এসব জিলাপীতে মিলছে বিক্রেতাদের জীবিকা আর ক্রেতাদের মিটছে শখ।
লালমোহন পৌরশহরের মহাজনপট্টি এলাকাতে শীতকে কেন্দ্র করে বসেছে বেশ কয়েকটি জিলাপীর দোকান। প্রতি বছরের এ সময়ে দোকানগুলো বসে এখানে। মহাজন পট্টির জিলাপী বিক্রেতা মো. মিরাজ হোসেন জানান, বিগত বিশ বছর ধরে শীতের মৌসুমে জিলাপী বিক্রি করি। অন্য সময় ঘুরে ঘুরে আখের রস বিক্রি করি। শীতের এই মৌসুমে মানুষজনের কাছে জিলাপীর কদর অনেক বেশি। গত এক মাস আগ থেকে জিলাপী বিক্রি শুরু করেছি। প্রতিদিন সকাল ৭ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত খোলা থাকে দোকান।
এই জিলাপী বিক্রেতা আরো জানান, হাটবারে বিক্রি ভালো হয়। পৌরসভায় সপ্তাহে দুই দিন হাট থাকে। ওই দুইদিন বিক্রি ভালো হয়। হাটের সময় দুইশ কেজিরও অধিক জিলাপী বিক্রি হয়। টাকার হিসাবে ২০ থেকে ২৪ হাজার টাকা। এখান থেকে প্রায় তিন থেকে চার হাজার টাকার মতো লাভ হয়। যা দিয়েই সংসার চলছে। আমার দোকানটি বাবা-ভাতিজা মিলে চালাচ্ছি। মৌসুমী এই জিলাপীর দোকান চলবে আরো চার মাসের মতো।
পৌরসভার মহাজনপট্টির আরেকটি জিলাপী দোকানের কারিগর মোরশেদ বলেন, ২৫ বছর ধরে জিলাপী তৈরির সঙ্গে জড়িত। শীতের মৌসুমে জিলাপীর কদর বেড়ে যায়। যার জন্য প্রতি বছরের এই সময় জিলাপী বানানোর কাজ করি। অন্য সময় অটোরিকশা চালাই। তবে জিলাপী বানিয়ে দৈনিক ৮শত টাকা পাই। সংসারে ২ মেয়ে আর স্ত্রী রয়েছে। এই জিলাপী তৈরির আয়ে বর্তমানে সংসার চলছে।
জিলাপী ক্রেতা এক কলেজ প্রভাষক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শীতের সময় জিলাপী খেতে অন্য রকম মজা লাগে। নিজেও খাচ্ছি, আর বাড়িতে নেওয়ার জন্য নিয়েছি। বাচ্চাদেরও জিলাপী অনেক পছন্দের।
আকলিমা ও সাহিদা বেগম নামে আরো দুই ক্রেতা বলেন, বাজারে কাজে এসেছি। এখান দিয়ে যাওয়ার সময় দেখছি জিলাপী বিক্রি হচ্ছে। যার জন্য বাসার জন্য দুই জনে এক কেজি করে দুই কেজি কিনেছি। এ বছর দাম একটু বেশি। তবে ইচ্ছার কাছে দাম তুচ্ছ। আর এ সময় জিলাপীর অনেক স্বাদ রয়েছে।