Wednesday, June 25, 2025
Homeদেশগ্রামলেবু বিক্রি করে বছরে পাঁচ লাখ টাকা আয় করেন লালমোহনের মিরাজ

লেবু বিক্রি করে বছরে পাঁচ লাখ টাকা আয় করেন লালমোহনের মিরাজ

জাহিদ দুলাল, লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি:

ভোলার লালমোহনে কাগজি লেবু চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন মো. মিরাজ হায়দার নামের এক ব্যক্তি। উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চরছকিনা এলাকায় নিজ জমিতে লেবু চাষ করে বছরে প্রায় ৬ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেন তিনি। যেখান থেকে খরচ বাদে মিরাজ হায়দারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকা লাভ হয়। মিরাজ হায়দার চরছকিনা এলাকার শামছুল মাস্টার বাড়ির শাহেআলম কামালের ছেলে।

জানা যায়, ২০১৮ সালে মাত্র ২২টি গাছ নিয়ে নিজ জমিতে কাগজি লেবুর বাগান শুরু করেন মো. মিরাজ হায়দার। এর দুই বছরের মাথায় ২০২০ সালে ওই বাগানে গাছ বাড়িয়ে করেন চারশত। বাড়ানো হয় জমির পরিমাণও। এরপর ২০২১ সাল থেকে ১৪০ শতাংশ জমিতে বিস্তৃত ওইসব গাছে আসতে শুরু করে লেবু। প্রতিমাসে বাগান থেকে একবার লেবু ছিঁড়েন মিরাজ হায়দার। তার বাগানের লেবু মৌসুমে প্রতি হালি ১০ টাকা হলেও অমৌসুমে ৪০টাকা দরে প্রতি হালি লেবু বিক্রি হয়।

লালমোহনসহ জেলার বিভিন্নহাটে এসব লেবু বিক্রি করা হয়। মিরাজ হায়দারের লেবু বাগানে বর্তমানে তিনজন শ্রমিক কাজ করেন।

লেবু চাষি মো. মিরাজ হায়দার বলেন, ২০১৮ সালে ২২টি গাছ দিয়েপ্রথম স্বল্প আকারে লেবুর বাগান শুরু করি। ওই গাছের লেবু বিক্রি করে মোটামুটি ভালো লাভ হয়। এরপর চিন্তা করি বাগানের আয়তন বৃদ্ধি করার। পরে ২০২০ সালে আমার এক ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে তার সহযোগিতায় বাগানে জমির পরিমাণ বাড়িয়ে চারশত লেবুর কলম লাগাই। এর একবছর পর ২০২১ সালে গাছ গুলোতে লেবু আসে। তখন থেকে প্রতি বছর ওই লেবু বাগান থেকে গড়ে ৬ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করছি। এখান থেকে খরচ বাদে আমার লাভ হয় অন্তত পাঁচ লাখ টাকা। এছাড়া, আমার এইলেবু বাগানে তিনজন শ্রমিক কাজ করছেন। এতে করে তাদেরও কর্মসংস্থান হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ এই লেবুর আয়ে আমি ভালোআছি।

লেবুর বাগানে কাজ করা শ্রমিক মো. জাহাঙ্গীর ও মো. রুবেল জানান, গত কয়েক বছর ধরে মিরাজ মিয়ার লেবু বাগানে আমরা কাজ করছি। মাস শেষে এখান থেকে ভালো মজুরী পাচ্ছি। যা দিয়েস্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সংসার চালাচ্ছি।

অন্যদিকে, চাষি মিরাজের সফলতা দেখে লেবু চাষে উদ্যোগী হচ্ছেন অনেকে।

লেবু চাষি মিরাজ হায়দারের প্রতিবেশী খলিল বেপারী ও মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমাদের প্রতিবেশী মিরাজ লেবু চাষ করে এখন ভালো টাকা আয় করছেন। তাই আমরাও চিন্তা করছি লেবু বাগান তৈরি করবো। কারণ এখানে কম খরচ ও কম পরিশ্রমে ভালো টাকা লাভবান হওয়া যায়।

এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষিকর্মকর্তা শংকর চন্দ্র দাস জানান, মিরাজ হায়দার লেবু চাষে ভালো সফলতা পেয়েছেন। তাকে কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণের পাশা পাশি প্রয়োজনীয় উপকরণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যেকোনো প্রয়োজনে তিনি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।

এই কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, লেবু চাষে খরচ ও পরিশ্রম অনেক কম হয়। বাজারেও লেবুর অনেক চাহিদা থাকে। তাই নতুন করে যদি কেউ আগ্রহী হয় তাদেরকেও কৃষি অফিস থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। আমরা মনে করি, সকলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করলে বেকারত্ব কমার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য