লালমোহন (ভোলা) সংবাদদাতাঃ
আমাদের দেশের মধ্য বয়সী থেকে শুরু করে বেশী বয়সী অনেককে পান খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। এই পানের সাথে যে জিনিষটা খাওয়া অত্যাবশ্যকীয় তা হচ্ছে সুপারি। অনেক চা বিস্কুট বা ভাত খাওয়ার সুপারি দিয়ে পান খাওয়ার অভ্যাস দীর্ঘদিনের। পান নাহলে একটুকরা সুপারি যেন খাওয়া চাই।পান বিলাসীদের কাছে সুপারি একটি অতি প্রয়োজনীয় ফল। দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহনের সুপারির চাহিদা রয়েছে সারাদেশে। এমনকি এই সুপারি মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশ কিছু দেশে রফতানিও হচ্ছে। ফিলিপাইন ও নিকোবর থেকে এক সময় আমদানিকৃত এশিয় পামগাছ এরিকা কাটচু জাতের এ ফলটি বাংলাদেশের প্রায় সব জেলায় আবাদ হলেও বরিশাল ও খুলনা বিভাগে বেশি জন্মে। তবে স্বাদ ও মানের দিক থেকে ভোলা ও বরিশালের সুপারির সুনাম বেশ এগিয়ে রয়েছে।
বর্তমানে বাজারে কাটা সুপারি ২৫০-৩৫০ টাকা কেজি এবং পাকা সুপারি প্রতি ৮০ গণ্ডা (পরিমাপের একক) ৫১০- ৬২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, লালমোহনে এক হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে সুপারির স্থায়ী বাগান রয়েছে । আর মৌসুমের এই সময়ে হাটগুলোতেও সুপারির বেচাকেনা চলছে পুরোদমে। সারাদেশ থেকে পাইকাররা ভোলা জেলার দক্ষিণাঞ্চলের হাটগুলোতে এসে সুপারি কিনে তা দেশের নানা প্রান্তে চালান করছেন। সেখান থেকে আবার বিদেশেও পাঠাচ্ছেন আড়তদাররা। লালমোহন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘সুপারি চাষ করে এই অঞ্চলের চাষিরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। প্রতিবছর একেকজন চাষি সুপারি বাগান থেকৈ বাড়তি আয়ের সুযোগ পান। এ অঞ্চলের সুপারির চাহিদা দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে বারর্মার সুপারির অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পারলে দামের দিক দিয়ে দ্বিগুণ দাম পেতেনে ব্যবসায়ীরা। এতে করে লাভবান হতেন মালিক ও ব্যাবসায়ীরা। দেশে ঘরে ঘরে পান সুপারির চাহিদা রয়েছে। এছাড়া বিয়েসহ নানা আচার অনুষ্ঠান পান সুপারি ছাড়া বাঙালির আপ্যয়ন যেনো পূর্ণতা পায় না।
সরেজমিন লালমোহন উপজেলা সদরের আড়তদার হাজী মো: মিজানুর রহমান কামরুল বলেন, লালমোহন থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মোবাইলের মাধ্যমে বড় বড় ব্যবসায়ীদের কাছে আমরা সুপারি বিক্রি করি।
লালমোহন বাজরের সুপারি ব্যাবসায়ী মো: খলিলুর রহমান ও রায়চাঁদ বাজারের আড়তদার মো: মনোয়ার বলেন, চলতি বছর সুপারি কম ধরেছে গাছে। সুপারির ফলন কম হলেও দাম আর চাহিদা একটু বেশি। প্রতিবছর অক্টোবর-ডিসেম্বরের এই মৌসুমে স্থানীয় হাট বাজারে বা চৌরাস্তায় থেকে তারা শুপারি কিনে থাকেন। এরপর তা উপজেলার আড়তদারদের কাছে বিক্রি করা হয়। এছাড়া শেষ মৌসুমে সুপারি রোদে শুকিয়ে ও অন্য পদ্ধতিতে পানিতে ভিজিয়ে সংরক্সণ করা হয়। যা মৌসুমের শেষে চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি ও বিভিন্ন মোকামে পাঠানো হয়। সেখান থেকে সুপারি দেশ ও বিদেশে রফতানি হয়ে থাকে।