শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ

শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা-২০১১ এর একাধিক শর্ত লঙ্ঘিত হওয়ায় রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণাসহ ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে আর শিক্ষার্থী ভর্তি না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধীন অন্য কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশন করতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গত ২ নভেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের উপসচিব বদরুন নাহার স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৪ সাল থেকে এই মেডিকেল কলেজটিতে এমবিবিএস প্রফেশনাল কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয়। বর্তমানে সাতটি ব্যাচে ২২৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। নীতিমালার আওতায় প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না করায় গত সাত বছরেও শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজটি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন পায়নি। প্রতিষ্ঠানের এ নিবন্ধন না থাকায় এই কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করা চারজন শিক্ষার্থী ইন্টার্নশিপ করতে না পেরে এক বছর বসেছিলেন। এ পরিস্থিতিতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনের মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিকল্প ব্যবস্থায় ওই ৪ শিক্ষার্থীর ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা হয়। এর আগে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে মন্ত্রণালয় শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি ও পরিচালনা সংক্রান্ত অনিয়মের একাধিক তদন্ত হয়। এতে কলেজ পরিচালনার নিয়মকানুন লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হয়। 

এরপরও কলেজ কর্তৃপক্ষকে দেয়া বিভিন্ন পরামর্শ ও শর্তাবলী বাস্তবায়নের অনুরোধ করা হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত তা করতে ব্যর্থ হয়। এ কারণে গত ২ নভেম্বর মন্ত্রণালয় থেকে দুটি চিঠি দেয়া হয়েছে। একটি চিঠিতে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ এবং অপরটিতে কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধীন অন্য বেসরকারি কলেজে মাইগ্রেশনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অন্য বেসরকারি মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশন করবেন বলেও নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীন বলেন, সম্পূর্ণ নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। কলেজের মোট শিক্ষার্থীই হচ্ছে ২২৫ জন। একইভাবে প্রত্যেক বিভাগে ৪-৫ জন করে শিক্ষক ঘাটতির কথা তদন্তে বলা হয়েছে। কতজন শিক্ষক আছে তা বলা হয়নি। তাদের ৪৪ জন স্থায়ী এবং ২৪ জন খণ্ডকালীন শিক্ষক দেখানো আছে।

মনিরুজ্জামান জানান, শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য তারা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। এ আদেশের ফলে অনেক শিক্ষার্থীর পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তিনি মন্ত্রণালয়ের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here