মাচা পদ্ধতীতে অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফল শিক্ষার্থী সোহেল মাহমুদ

সোহেল মাহমুদ (২২) নামের এক শিক্ষার্থীর সাফল্যজনক উদ্যোগে অসময়ে তরমুজ দেখছে রাঙ্গাবালীর বাসিন্দারা। সোহেলের বাড়ি উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায়। সে বরিশাল বিএম কলেজের দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

স্থানীয়রা জানায়, কৃষক পরিবারের ছেলে সোহেল। তবে নিজে কখনো চাষবাদ করেননি। এবারই প্রথম তরমুজ চাষ করেছেন ।  বিস্তীর্ণ সমতল ভূমিতে নয়, মাচায় ঝুলছে তরমুজ। দূর থেকে দেখতে সবজি বাগান মনে হবে। কিন্তু না! একেই বলে মাচা পদ্ধতির চাষ। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় অসময়ে এ মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে সাফল্য এসেছে। আর এই সাফল্যের নেপথ্যে একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। 

উদ্যোক্তা সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে বাড়িতে চলে আসি। অনেকটা অবসর সময় কাটছিল। হঠাৎ একদিন ইউটিউবে দেখতে পাই, মাচা পদ্ধতিতে অসময়েও তরমুজ চাষ করা যায়। আর সময় না করে বাড়ির পাশের অনাবাদি জমিতে তরমুজ চাষের উদ্যোগ নেই। ইউটিউব দেখে দেখেই অসময়ে তরমুজ চাষ করতে সক্ষম হই। এই তরমুজ চাষ করতে আমার ৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৫০টি তরমুজ করার উপযোগী। ভাল দাম পেলে ৬০-৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি। কৃষি বিভাগ জানায়, বাড়ির পাশে নিজেদের অনাবাদি ১০ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করেন সোহেল। গত সেপ্টম্বরের শুরুতে তরমুজ চাষ প্রক্রিয়া শুরু করেন তিনি। সরেজমিনে দেখা গেছে, মাচায় সবুজ লতায় মোরানো গাছ, এর ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে তরমুজ। প্রতিটি তরমুজ সুতার জালে মোরানো। একেকটি তরমুজ ৩-৪ কেজি ওজনের। বেশিরভাগ তরমুজ এখন বিক্রয় উপযোগী। অসময়ে তরমুজ চাষে সফল হয়েছেন সোহেল মাহমুদ। 

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ভার্কের উপজেলা সমন্বয়কারী মোহসীন তালুকদার বলেন, ‘আকারে ছোট হলেও মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে ঝুঁকি কম। পানি জমে থাকে না। নালা দিয়ে পানি সরে যায়। তবে একটু উঁচু জায়গায় প্রজেক্ট করতে হবে।’ 

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘রাঙ্গাবালীতে প্রথমবারের মত মাচা পদ্ধতিতে অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছে সোহেল মাহমুদ। সে পেশাদার কোন চাষী নয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনার বিষয়ে সরকারের নির্দেশ অনুসরণ করে  সে এই উদ্যোগ নিয়েছে। সোহেলের মত অন্যরাও এই উদ্যোগ নিয়ে লাভবান হতে পারে এবং এমন উদ্যোক্তদের পাশে থাকাসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন এই কৃষি কর্মকর্তা। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here