বিমানবন্দর সড়কে স্বামী-স্ত্রীকে চাপা দেওয়া বাসচালকে আটক করা হয়েছে। বাসচালকের ভারী যানের লাইসেন্স নেই। হালকা যানের লাইসেন্স দিয়েই তিনি ভারী যান চালাচ্ছিলেন।
গ্রেফতারের পর ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) ও থানা পুলিশকে নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন চালক তসিকুল ইসলাম (২৮)। সোমবার রাতে তাকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। বিস্তারিত তথ্য উদ্ঘাটনে আজ তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে। এদিকে নিহত আকাশ ইকবাল (২৬) ও হাজারিকা মায়া মিতু (২২) দম্পতির চার বছর বয়সি একমাত্র কন্যাসন্তান আফরা আনজুম এখনো জানে না, তার মা-বাবা বেঁচে নেই। সে শুধুই কান্না করছে। মাঝেমধ্যে ফ্যালফেলিয়ে তাকাচ্ছে আর এদিক-সেদিক মা-বাবাকে খুঁজছে। শিশুটি এখন গ্রামের বাড়িতে দাদা-দাদির হেফাজতে আছে। অন্যদিকে পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎসকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে আকাশের মা-বাবা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং নিহত দম্পতির পারিবারিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আকাশের ফুপাতো ভাই মিজানুর রহমান জানান, আকাশের অফিস শুরু হয় সকাল ১০টায়। কিন্তু তার স্ত্রীর অফিস শুরু হয় সকাল ৮টায়। তাই প্রতিদিন স্ত্রীকে অফিসে নামিয়ে দিতে মোটরসাইকেল নিয়ে আগেই বাসা থেকে বের হন।
স্ত্রীকে অফিসে পৌঁছে দিয়ে সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যেই নিজ অফিসে পৌঁছান। কিন্তু তার অফিস শুরু হয় ১০টার দিকে। তাই এক-দেড় ঘণ্টা সময় তিনি প্রায়ই ছোট ভাইয়ের সঙ্গে গেমস খেলে সময় কাটাতেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার বাদ জোহর ফরিদপুর সদরের দুদলী গ্রামে জানাজা শেষে আকাশ-মায়ার লাশ দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে পদ্মা অয়েল গেটের কাছে গাড়িচাপায় স্বামী আকাশ ও স্ত্রী মায়া হাজারিকা নিহত হন। আনুমানিক সকাল সোয়া ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আকাশ ইকবাল পদ্মা সেতু প্রকল্পে এবং মায়া হাজারিকা হোটেল লেক ক্যাসলে চাকরি করতেন। দুজন কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার উদ্দেশে মোটরসাইকেলে রওয়ানা হয়েছিলেন।
বিমানবন্দরের নির্মাণাধীন টার্মিনালের কাছের ইউলুপ সংলগ্ন এলাকায় আজমেরী বাসের ধাক্কায় নিহত হন তারা। এ ঘটনায় সোমবার বিমানবন্দর থানায় মামলা হয়। মামলার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই প্রযুক্তির সহায়তায় মূল আসামিকে গ্রেফতার করে সিআইডি।