বরিশালের বাকেরগঞ্জে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত একটি বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি নওরোজ হীরা সিকদার ও তার সহযোগী মারিয়া আক্তারকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পুলিশের গ্রেফতারের হাত থেকে বাঁচতে হীরা ও মারিয়া বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিচারক এস এম মাহফুজ আলম তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ২৮ অক্টোবর হীরা ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতা এক ছাত্রীর মা। মামলায় সহায়তাকারী হিসেবে হীরার ভাতিজি মারিয়াকেও আসামি করা হয়েছে। নওরোজ হীরা বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ফরিদপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক সিকদারের ছেলে এবং ফরিদপুর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির আহবায়ক কমিটির সদস্য। তিনি ফরিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং কারকধা একেএম ইনস্টিটিউশন নামে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য। মামলার অপর আসামি মারিয়া আক্তার একই গ্রামের নুরু সিকদারের মেয়ে।
দুই সন্তানের জনক হীরার সাথে একাধিক মেয়ের অবৈধ সম্পর্ক থাকার অভিযোগে কয়েক বছর আগে তার স্ত্রী তাকে তালাক দেয়। বাকেরগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া ধর্ষণ মামলা সূত্রে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রীর বাড়ি ও নওরোজ হীরার বাড়ি একই এলাকায়। ওই ছাত্রীর পরিবার অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল। তাকে প্রাইভেট পড়াতে পারছিল না তার পরিবার। ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর মারিয়া আক্তার ওই ছাত্রীর জন্য আর্থিক সহায়তা এনে দিতে তাকে নিয়ে তার চাচা নওরোজ হীরার কাছে যায়। স্ত্রী না থাকায় হীরা নিজ বাড়িতে একা থাকতেন। পরে ভাতিজি মারিয়াকে বাইরে দাঁড় করিয়ে দরজা আটকে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে হীরা। এ সময় ধর্ষণের ভিডিও এবং স্থির চিত্র মুঠোফোনে ধারণ করে সে। পরে ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় অনৈতিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করেন তিনি। লজ্জা ও ভয়ে ওই ছাত্রী বিষয়টি গোপন রাখে। সম্প্রতি ওই ছাত্রীসহ ১১ ছাত্রীর গোপন ভিডিও এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। প্রতিকার চেয়ে ছাত্রীর মা থানায় মামলা করেন। অভিযোগ রয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে গত ৫ বছরে স্কুলের বেতন ও পরীক্ষার ফি মওকুফ করিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একেএম ইনস্টিটিউশনের ১১ ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে নওরোজ হীরা। সম্প্রতি তার ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়ে।