বাংলাদেশের আর্থিক খাতের আলোচিত জালিয়াত, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা লোপাটের মূলহোতা প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারকে আরও ১০ দিনের রিমান্ডে দিয়েছে কলকাতার একটি আদালত। তিন দিনের রিমান্ড শেষে পিকে হালদারকে মঙ্গলবার কলকাতার আদালতে হাজির করে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। পরে বিচারকরা তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জানা গেছে, সকালে ইডির কার্যালয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে পিকেসহ ৫ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতে পিকের ১৪ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। শুনানি শেষে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া পিকের স্ত্রীকে ১০ দিনের জন্য বিচারিক হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে পিকে হালদার, প্রীতিশ কুমার হালদার, প্রাণেশ কুমার হালদার এবং তাদের সহযোগীদের ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে দেশটির ইডি। বাংলাদেশের অর্থ লুট করে পালিয়ে ভারতে গিয়ে পিকে হালদার শিবশঙ্কর হালদার নামে দেশটির নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে ভারতীয় রেশন কার্ড, ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, প্যান এবং আধার কার্ডও সংগ্রহ করেছিলেন পিকে। এ ছাড়া তার অন্য সহযোগীরাও জালিয়াতির মাধ্যমে এসব কার্ড সংগ্রহ করেন বলে জানিয়েছে ইডি।
এর আগে গত ১৪ মে দুপুরের দিকে প্রদেশের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকে পিকে হালদারকে গ্রেফতার করা হয়। সেদিন এই তার সম্পত্তির খোঁজে দ্বিতীয় দিনের মতো পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে অভিযান চালায় ভারত সরকারের তদন্ত সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি)। গ্রেফতারের পরই তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয় সেদিন। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আজ (মঙ্গলবার) পিকের মামলার অগ্রগতির বিষয়ে আদালতকে অবহিত করেছেন ইডির আইনজীবীরা। আদালতকে তারা বলেন, ভারতে অবৈধভাবে বসবাস ও ব্যবসা পরিচালনাকারী বাংলাদেশি নাগরিক পিকে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদে বিপুল সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ভারতে তার ১৫০ কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে ইডি।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অরিজিৎ চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা করা হয়েছে। সেই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এদিকে ইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অর্থপাচারের সঙ্গে প্রদেশের কোনো রাজনীতিবিদ জড়িত আছেন কি না- সে বিষয়ে পিকে এখনো কোনো তথ্য দেননি। ইডি বলেছে, ব্যক্তিগত আইনজীবী সুকুমার মৃধার সহায়তায় পিকে হালদার পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের একাধিক রাজ্যে বিপুল সম্পদ গড়েছেন। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থপাচারের মাধ্যমে ভারতে একাধিক অভিজাত বাড়িসহ বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। প্রাথমিকভাবে ভারতে তার ২০ থেকে ২৫টির মতো বাড়ির মালিকানার তথ্য পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে এসবের বেশ কিছু নথি উদ্ধার করা হয়েছে।


















