Sunday, December 14, 2025
Homeঅপরাধনীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় রাস্তা বিহীন ব্রীজ নির্মান হচ্ছে

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় রাস্তা বিহীন ব্রীজ নির্মান হচ্ছে

আশপাশে নেই কোনো বসতবাড়ি। নেই চলাচলের কোনো রাস্তাও। তবুও ফসলের মাঠে ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি সেতু। এতে ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা গ্রামে সংযোগ সড়কবিহীন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সুন্দর খাতা গ্রামের পশ্চিম পাশে ফসলের মাঠের যে অংশে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে তার দুই পাশে কোনো রাস্তা নেই। তবে স্থানীয় কৃষকরা শুনেছেন, সেতুর দুই পাশে সড়ক তৈরি হবে। কিন্তু তা কবে হবে এবং কেন হবে, তারা কেউ জানেন না।মাঠে কাজ করা কয়েকজন কৃষক জানান, এ সেতুটি কোনো কাজে আসবে না। অপ্রয়োজনে সরকারের লাখ লাখ টাকা জলে ফেলা হয়েছে । সেতুর একপাশে বসতবাড়ি থাকলেও অন্য পাশে ফসলের মাঠ। সামনে প্রায় এক কিলোমিটারের মধ্যে বসতবাড়ি নেই। জনসাধারণের চলাচল নেই।

অভিযোগ রয়েছে- উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয়ের সার্ভেয়ার শাকিল হোসেন বাড়ির পাশের মাঠ থেকে ফসল আনা-নেওয়ার সুবিধার জন্য সরকারি খরচে সেতুটি নির্মাণ করাচ্ছেন। পরিকল্পনা রয়েছে ভবিষ্যতে সংযোগ সড়ক নির্মাণের। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধানে সার্ভেয়ার শাকিলের বাড়ির পশ্চিম পাশে ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজ করেছেন ঠিকাদার নুর আলম। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে সেতুর প্রয়োজন। অথচ আশপাশে সড়ক নেই, বাড়িঘরও নেই এমন স্থানে সেতু হয়েছে। ব্যক্তিস্বার্থকে প্রধান্য দিতে গিয়ে এই অপ্রয়োজনীয় সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।সুন্দর খাতা গ্রামের বাসিন্দা আবদেছ আলী বলেন, সড়ক ও বসতি না থাকায় সেতুটি নির্মাণের শুরুতে কাজ বন্ধ করে সব মালপত্র ফেরত নিয়ে যান প্রকৌশল অফিসের লোকজন। পরে শুনেছি অনেক তদবিরের পর আবার কাজ শুরু হয়। মধ্যম সুন্দর খাতা গ্রামের ইউসুফ আলী বলেন, মানুষ নয়, গরু-মহিষ পারাপারের জন্য এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। আগে দেখতাম সড়ক নির্মাণ করে তারপর ব্রিজ বা কালভার্ট হতো। এ ক্ষেত্রে হয়েছে উল্টোটা। একই গ্রামের ওয়াজেদ আলী জানান, এই গ্রামে সহস্রাধিক মানুষের বাস। গ্রামের একমাত্র সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্ষাকালে এটি হাঁটু পানির নিচে থাকে। কালভার্ট না থাকায় বৃষ্টির পানির চাপে তা বার বার ভেঙে যায়। এছাড়া পাশেই সিংগাহারা নদীর ওপর দুটি সেতু মাঝ বরাবর দেবে হেলে পড়েছে। অন্তত পাঁচ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতু দিয়েই যাতায়াত করছে। অতিপ্রয়োজনীয় এসব সেতু ও রাস্তা সংস্কার না করে ফাঁকা মাঠে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সার্ভেয়ার শাকিল বলেন, সরকারি বরাদ্দের অর্থ যাতে ফেরত না যায় সেজন্য ওই স্থানে সেতুটি দেওয়া হয়েছে। এখন রাস্তা নেই, ভবিষ্যতে হবে।নিজের পরিবারের সুবিধার জন্য সেতু নির্মাণ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বরাদ্দ অনুযায়ী সে সময় অন্য কোথাও জায়গা খুঁজে পাইনি। তা ছাড়া কাজ করতে গেলে ভুল হতেই পারে।উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে ছিলাম। বিষয়টি আমার জানা নেই। তারপরও রাস্তা ছাড়া কী কারণে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য