টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলে এক মাছ ব্যবসায়ীর কাছে ‘কিলার গ্যাং’-এর নামে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি এবং হত্যার হুমকির ঘটনায় বিএনপির তিন নেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার (১ আগস্ট) রাত ও শনিবার (২ আগস্ট) ভোরে টাঙ্গাইল শহরের সন্তোষ এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজন হলেন—টাঙ্গাইল শহর বিএনপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি গোলাম রাব্বানী, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মিয়া, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের হোসেন, এবং আরও দুই অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সাব্বির মিয়া।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভীর আহমেদ জানান, ডিবি পুলিশের সহায়তায় এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে তাদের প্রত্যক্ষ জড়িত থাকার প্রাথমিক আলামত পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী মাছ ব্যবসায়ী মো. আজাহারুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি তার কর্মচারীর হাতে একটি খাম ধরিয়ে দিয়ে যায়। শুক্রবার সকালে চিঠিটি হাতে পান তিনি। চিঠিতে ‘কিলার গ্যাং’-এর নামে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয় এবং পুলিশের কাছে গেলে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
চিঠিতে লেখা ছিল “চিঠি পাওয়ার পর তুই যদি বিষয়টি কারো সাথে শেয়ার করস বা আইনি প্রক্রিয়ায় যাস, তাহলে তোকে কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তোর লাশ পরিবার খুঁজে পাবে না। মনে রাখিস, প্রশাসন সব সময় তোর পাশে থাকবে না।” এছাড়াও চিঠিতে আরও বলা হয় “দীর্ঘদিন ধরে তুই মাছ ব্যবসা করছিস। তোর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নাই। পাঁচ লাখ টাকা তোর কাছে কিছু না। তাই আগামী ৩ আগস্ট, রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় কাগমারী এলাকার মাহমুদুল হাসানের বাড়ির সামনের গাছে ‘ফরহাদের ছবি’ লাগানো রয়েছে, সেই গাছের নিচে টাকাভর্তি ব্যাগ রেখে যাবি।”
চিঠিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শহরের ব্যবসায়ী সমাজে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন অনেক ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে টাঙ্গাইল শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইজাজুল হক সবুজ বলেন, “এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা। আমাদের নেতাকর্মীদের ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।”
ওসি তানভীর আহমেদ জানান, এ ঘটনায় চাঁদাবাজি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি চলছে। তদন্তের মাধ্যমে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।