Sunday, June 1, 2025
Homeস্বাস্থ্যক‍্যাম্পেস’র উদ্যোগে বিশ্ব কিডনি দিবস উদযাপন

ক‍্যাম্পেস’র উদ্যোগে বিশ্ব কিডনি দিবস উদযাপন


বিশ্ব কিডনি দিবস উদযাপন উপলক্ষে কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি আজ বৃহস্পতিবার দিনব্যাপি নানাবিধ কর্মসূচী পালন করে। কর্মসূচী সমূহের মধ্যে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়, ঢাকাস্থ মোহাম্মদপুর এর নবোদয় আবাসিক এলাকায় বর্ণাঢ্য র‍্যালী, পথচারীদের মধ্যে টি-শার্ট বিতরণ, পরবর্তীতে শাহবাগ মোড়ে বাংলাদেশ
রেনাল এসোসিয়েশন এর সাথে ও ধানমন্ডি আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যৌথ র‍্যালীর আয়োজন করে। এছাড়াও ক্যাম্পস এর শাখা অফিস গুলোতেও বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও কিডনি বিষয়ক সচেতনতা মূলক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিশ্ব কিডনি দিবস-২০২৫ এর প্রতিপাদ্যের আলোকেই ক্যাম্পস তার এ বছরের সমস্ত আয়োজন সাজিয়েছে। র‌্যালি শেষে ক্যাম্পস এর
প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ এম এ সামাদ বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর তথ্য অনুযায়ী, কিডনি রোগ বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম কারণ গুলোর মধ্যে একটি। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলিতে কিডনি রোগের প্রকোপ বাড়ছে, বিশেষ করে ডায়াবেটিস, উচ্চ
রক্তচাপ এবং স্থূলতার মতো অসংক্রামক রোগের কারণে। বিশ্বব্যাপী প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ শুধু দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। এই সংখ্যা ডায়াবেটিস রোগীদের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ এবং ক্যান্সার রোগীদের চেয়ে প্রায় বিশ গুণ। মৃত্যুর কারণ হিসেবে কিডনি রোগ ১৯৯০ সালে ছিল ১৯তম স্থানে, বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৭ম স্থানে, এভাবে চলতে থাকলে ২০৪০ সালে দখল করে নেবে ৫ম স্থান। আবার উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশে কিডনি রোগের হার সবচেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশেও কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব উদ্বেগজনক। তথ্য মতে, প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ লোক কোন না কোন কিডনি রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার কিডনি রোগী ডায়ালাইসিসের উপর নির্ভরশীল হয়। শহর ও গ্রামাঞ্চলে সমানভাবে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। দারিদ্র্য, অসচেতনতা, চিকিৎসা সেবার অপ্রতুলতা এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। আরো ২৪ থেকে ৩০ হাজার রোগী হঠাৎ কিডনি বিকল হয়ে সাময়িক ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়। এই রোগ আমাদের দেশের জন্য একটি বড় অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা।


পক্ষান্তরে, সবাই যদি কিডনি রোগের ব্যাপকতা, ভয়াবহতা, পরিণতি ও কারণ সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং স্বাস্থ্য সম্মত জীবনযাপন করে তা হলে ৬০-৭০ ভাগ ক্ষেত্রে এই মরণঘাতী কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।
কিডনি রোগের সাধারণ কারণ গুলো হল- অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, স্থূলতা, নেফ্রাইটিস, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, ব্যাথানাশক ঔষধের অতিরিক্ত ব্যবহার, জন্মগত ও বংশগত কিডনি রোগ, মূত্রতন্ত্রের প্রদাহ ও পাথুরে রোগী। আমরা একটু লক্ষ্য করলেই
বুঝতে পারবো যে, প্রায় সবগুলো কারণই আমাদের অস্বাস্থ্যকর জীবন ধারার সাথে জড়িত, একটু সচেতন হলে প্রতিরোধ যোগ্য। তাছাড়া যারা ঝুঁকিতে আছেন যেমন যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওজন বেশী, বংশে কিডনি রোগ আছে, যারা ধূমপায়ী, যারা তীব্র মাত্রার ব্যাথার ঔষধ খেয়েছেন, যাদের পূর্বে কোন কিডনি রোগের ঝুঁকি আছে তাদের বছরে অন্তত ২ বার প্রস্রাব ও রক্তের ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করে নেয়া উচিৎ। কেননা প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগ সনাক্ত করতে পারলে চিকিৎসার মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, কিডনি বিকলের চিকিৎসা সর্বাধিক ব্যয়বহুল। ফলে চিকিৎসা করতে গিয়ে পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। তাই ক্যাম্পস
এর স্লোগান ‘‘কিডনি রোগ জীবননাশা-প্রতিরোধই বাঁচার আশা’’ ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই। অর্থাৎ কিডনি রোগ প্রাথমিক অবস্থায় সনাক্ত করে চিকিৎসার মাধ্যমে মরণব্যাধি কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা যায়। এর জন্য প্রয়োজন গণসচেতনতা।
কিডনি রোগের সুলভে চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে ক্যাম্পস ইতিমধ্যে ঢাকার পাশাপাশি টাঙ্গাইল, চাঁদপুর, মাদারীপুর, সখিপুর, নবাবগঞ্জ, ঝিনাইদহ ও ঘাটাইল শহরে কিডনি সেবা ও ডায়ালাইসিস কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এ সব কেন্দ্র সমূহের পক্ষ থেকেও নিজ নিজ জেলা ও থানা শহরে বিশ্ব কিডনি দিবস উদযাপন উপলক্ষে র‌্যালি ও বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য