শাহীন কামাল
লালমোহন বাজারে একটা পুকুর ছিল। আজ যেখানে আগুন লেগেছিল তার পেছনে লাগোয়া পুকুরকে আমরা মেরে ফেলেছি। এভাবেই আমাদের লোভের কারণে মরে গিয়েছে হাজারো নদী নালা, জলাশয়, পুকুর, বিল, জলাধার। বুড়িগঙ্গার কালোজল প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়িয়ে তার ক্ষোভ জানান দেয় আমাদের।
আজ আগুনের ঘটনায় বার বার মনে হয়েছিল, ফায়ারসার্ভিসের এত এত চেষ্টার পরেও পানির অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে তো! খাল থেকে পানি আনা সহজ কাজ ছিল না। রাস্তার পশ্চিম পাশের ঘরগুলো পেরিয়ে পানির সংযোগ দেয়া নিঃসন্দেহে ঝুকিপূর্ণ কাজ ছিল। ফায়ারসার্ভিস এক কর্মীকে আহত হয়ে হাসপাতালে যেতে দেখেছি ফেইসবুকের লাইভে। আজ যারা সর্বস্ব হারিয়েছে, তাদের অন্তত তিনজনকে পারিবারিকভাবে চিনি। জানি, এ সম্পদ হারিয়ে তাদের কত কষ্ট হবে। ইব্রাহিমের কান্না দেখেছি, ঘর মালিক তাহের মিয়ার অবস্থা বুঝতে পারছি, হারুন ভাইর অবস্থা বুঝতে পারছি। এরা তিনজনই আমার প্রতিবেশী। আত্মীয়ের মতো।
আচ্চা, আজ যদি মোল্লা জামে মসজিদের পুকুরটি বেঁচে থাকতো, তবে কী পানিতে এত বেগ পেতে হতো! আমাদের কী এই বানিজ্যিক ভবনের খুব দরকার ছিল। হয়তো ছিল। সবাই পুকুর ভরছে, নদী ভরছে, আমরা আর দূরে থাকব কেন! আগুনের সময় আমাদের চৌকস বাহিনী আছে। তাদের পানির ব্যবস্থা তারাই করবে। সেটা নিয়ে আমাদের এত ভাবনা কেন?