Monday, June 23, 2025
Homeঅপরাধপানির ট্যাংকের নিচে অবৈধ মার্কেট, সাবেক মেয়রের কোটি টাকার গায়েবি কারসাজি!

পানির ট্যাংকের নিচে অবৈধ মার্কেট, সাবেক মেয়রের কোটি টাকার গায়েবি কারসাজি!

শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা , টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল হক আলমগীরের বিরুদ্ধে উঠেছে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ—পৌরসভার স্পর্শকাতর সংরক্ষিত জায়গা দখল করে সেখানে অবৈধভাবে পাকা মার্কেট নির্মাণ ও দোকান বিক্রির মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ!

অভিযোগ আরও গুরুতর—এ স্থানটি ছিল ওভার হেড পানির ট্যাংকের নিচে, যেখানে প্রবেশই ছিল নিষিদ্ধ! অথচ সেখানেই গড়ে তোলা হয়েছে ২২টি দোকান। স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে পুরো শহরের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ব্যবস্থাই! ঘটনার শুরু: রক্ষার দায়িত্বে থেকে দখলের খেলা
একযুগ আগে বেড়াবুচনা এলাকায় পৌর কর্তৃপক্ষ তৈরি করে ওভার হেড পানির ট্যাংক, যাতে পৌরবাসী পায় বিশুদ্ধ পানি। স্থানটিকে ঘোষণা করা হয় ‘সংরক্ষিত এলাকা’ হিসেবে। কিন্তু ২০২১ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সিরাজুল হক আলমগীর নেন এক ভিন্ন পথ।

২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি অবৈধভাবে ২০ শতাংশ জায়গা দখল করে শুরু করেন মার্কেট নির্মাণ। ঠিকাদার নিযুক্ত হন স্থানীয় বাবুল হোসেন ওরফে ‘কালা বাবুল’। মার্কেটের দেখভাল ও দোকান বিক্রির দায়িত্বে ছিলেন তিন কাউন্সিলর— মেহেদি হাসান আলীম (শহর বিএনপি সভাপতি) আব্দুল্লাহেল মামুন বাদশা (আ.লীগ নেতা – মৃত)আমিনুর রহমান (জেলা শ্রমিক লীগ নেতা)। দোকান বিক্রি দ্রুত, রসিদ নয়!

জানা গেছে, প্রতিটি দোকান বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকায়। তবে কেউ পায়নি কোনো রসিদ। বিক্রি থেকে আয় হয় প্রায় আড়াই-তিন কোটি টাকা। পরবর্তীতে মেয়র ও সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলররা গা ঢাকা দেন, ব্যবসায়ীরা পড়েন চরম বিপাকে। কিছু ও ‘ম্যানেজড’?

সূত্র বলছে, বিষয়টি ধামাচাপা দিতে দুই সাংবাদিক নেতাকে ম্যানেজ করা হয়। আমওয়ামী পন্থী একজন সাংবাদিক পান ছয় লাখ টাকায় দুটি দোকান, সেখানে চালাচ্ছেন রড-সিমেন্টের ব্যবসা।পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে—‘আমরা কিছুই জানি না!’ পৌর সচিব শাহনেওয়াজ পারভীন বলেন, “মার্কেট নির্মাণের কোনো তথ্য নেই।” মার্কেট পরিদর্শক আনন্দ চক্রবর্তী বলেন, “কোনো অনুমোদন পাইনি।” প্রকৌশল বিভাগ জানায়, “এই স্থান নির্মাণ উপযোগী নয়। প্রক্রিয়াগতভাবে কোনো কাজই হয়নি।” পৌর প্রশাসক শিহাব রায়হান জানান, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” **পৌরবাসীর প্রশ্ন:‘বিশুদ্ধ পানির নিচে দোকান!কেন দেখছে না প্রশাসন?’**

এই ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে পৌরবাসীর মাঝে। তারা বলছে—জনস্বার্থে অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ বিপদ দেখা দিতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য