Sunday, November 16, 2025
Homeসম্পাদকীয়পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি কি বিক্রেতার ইচ্ছা অনুযায়ী হয়

পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি কি বিক্রেতার ইচ্ছা অনুযায়ী হয়

“শিমু হাসান”

প্রতিটি মানুষের অন্য, বস্ত্র ও বাসস্থান নৈতিক অধিকার। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং নিন্মবিত্ত মানুষ তাদের চহিদা ও সামর্থ অনুযায়ী পণ্য ক্রয় করে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন উৎপাদনকারী বা আমদানীকারক তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী যখন তখন কোন প্রকার কারন ছাড়াই পন্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়। ভারত কোন কারনে পেয়াজ রপ্তানী বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশে কোন প্রকার সংকট না থাকা সত্বেও পেয়াজ আমদানী কারক ও এক শ্রেনীর মওজুদদার পেয়াজের দাম তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী বাড়িয়ে দেয়। ২৫-৩০ টাকা দামের পেয়াজের দাম হয় ৯০-১০০টাকা এমনকি ২০০ টাক পর্যন্তও পেয়াজের দাম বৃদ্ধি করেছিল।


ফলে সাধারন মানুষ পন্য ক্রয় করতে গিয়ে বিপাকে পরতে হয়। উন্নয়নশীল দেশে পন্যে মূল্য বৃদ্ধির প্রয়োজন হলে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে সাথে যৌক্তিক কারন দেখিয়ে গনশুনানী করে প্রচার মিডিয়ার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পন্যের মূল্য বৃদ্ধি করেন। ফলে ক্রেতা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও মূল্য বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে অবহিত হয় এবং তার আয়ের সাথে সামঞ্জশ্য করে বাজেট করে পণ্য ক্রয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। যেমন আমাদের এই বাংলাদেশে সম্প্রতি গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে গনশুনানী হয়। কিন্তু গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কোন যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেনি এবং সাধারন জনগনের সমর্থন পায়নি। তাই তারা গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করেননি। সম্প্রতি মোহাম্মদপুর এলাকায় কতিপয় চাঁদাবাজদের চাঁদার পরিমান বাড়ার কারণে টেম্পুর ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছিল কিন্তু জনসাধারনের চাপের মুখে সেই ভাড়া আবার আগের মত করা হয়েছে।
গত ৫ এপ্রিল, ২০১৯ দোকানে চকবার আইচক্রিম কিনতে গিয়ে ক্রেতা জানতে পারলাম চকবার আইচক্রিমের মূল্য ৫ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কেন, কি কারনে এই মূল্য বৃদ্ধি করা হলো তা ক্রেতা জানতেই পারল না। অথচ ক্রেতার এটা জানার অধিকার আছে। আইচক্রিম কোম্পানী কি মূল্য বৃদ্ধির জন্য কোন গনশুনানী করেছে বা কোন মিডিয়ার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ? যদি না দিয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি দেখার কি কেউ আছে ? আইচক্রিম কোম্পানীর বিরুদ্ধে কি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে? তা আমরা জানিনা।
সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা ভোক্তা অধিকার সংস্থা কি জানেন আইচক্রিম কোম্পানী কেন এই দাম বাড়িয়েছেন ? হয়তবা জানেন হয়তবা জানেননা। প্রায় ঔষধ কিনতে গেলে জানা যায় ঔষধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কসমেটিক কিনতে গেলে জানা যায় কসমেটিক দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানীকৃত তেল ডাল সহ অনেক ভোগ্য পন্য এভাবে কখন, কেন, কি কারনে বৃদ্ধি পায় এবং দেশীয় বিভিন্ন কোম্পানী তাদের উৎপাদিত পণ্য কোন কারণ ছাড়াই তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী দাম বৃদ্ধি করে জনগনকে বৃভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দেয় ? যেমন রমজান মাস আসলে সোলা, বুট খেজুর সহ কিছু নিত্যপ্রয়াজনীয় পণ্যের দাম কোন প্রকার কারণ ছাড়াই বৃদ্ধি পায়। আমাদানী কারক ও উৎপাদনকারী ব্যক্তিরা এতই প্রভাবশালী যে সরকারে নির্দেশনা ও তারা মানতে চাননা। সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শতর্ক করে দিয়েছেন যে আসন্ন রমজান মাসে কোন পন্যের দাম যেন বৃদ্ধি না করে। সৌদি আরবের মত বাংলাদেশে যেখানে পবিত্র রমজান মাসে রোজাদারের সুবিধার্থে নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পন্যের দাম যেখানে কামনো উচিৎ, সেখানে আমাদের এই বাংলাদেশে কিছু স্বার্থানেশী মহল অতি লাভের আসায় অন্যায়ভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পন্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।
গনশুনানী না করে প্রচার মিডিয়ার বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে যৌক্তিক কারণ ছাড়া ভোগ্য পন্যের মূল্য বৃদ্ধি করা যায় কি ? যদি তা অন্যায় হয় তাহলে এ ব্যাপারে কোন কোম্পানী তার ইচ্ছা অনুযায়ী পন্যের মূল্য হঠাৎ করে বৃদ্ধি করলে কেন আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এভাবে হঠাৎ করে কোন পন্যের মূল্য বৃদ্ধি করলে উক্ত কোম্পানীর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিলে হয়তবা কোন কোম্পানী তার ইচ্ছা অনুযায়ী পন্যের মূল্য বৃদ্ধি করবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য