Saturday, June 28, 2025
Homeবাংলাদেশকে যে কখন আছে, কে যে কখন নাই তার কোনো হিসাবই নেইঃ...

কে যে কখন আছে, কে যে কখন নাই তার কোনো হিসাবই নেইঃ প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় সংসদে প্রয়াত সংসদ সদস্য আবদুল মতিন খসরু ও আসলামুল হকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নামে শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আসলে জীবনটাই হয়ে গেছে এমন, কে যে কখন আছে, কে যে কখন নাই তার কোনো হিসাবই নেই। 

বুধবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকে কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রয়াত আবদুল মতিন খসরুর মৃত্যুতে আবেগাপ্লুত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাকে প্রথমে প্রতিমন্ত্রী তারপর মন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তাছাড়া একজন নিবেদিতপ্রাণ আওয়ামী লীগ কর্মী, ছাত্রলীগ-যুবলীগ তারপর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ প্রেসিডিয়াম মেম্বার করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে জীবনটাই হয়ে গেছে এমন, কে যে কখন আছে, কে যে কখন নাই তার কোনো হিসাবই নেই। আর বিশেষ করে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন এলো। আমরা আবার চেষ্টা করলাম সেটাকে কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে, কিন্তু হঠাৎ করে আবার আমাদের সীমান্ত জেলাগুলোতে প্রকোপ দেখা দিয়েছে। সেখানে আবার আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, কিন্তু আমি সবাইকে বলব আমাদের স্বাস্থ্যবিধিটা যেন সবাই মেনে চলেন। বাংলাদেশের সব মানুষের কাছে আমার এটা আহ্বান।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যারা কাজ করতাম সবার জন্য আলাদা কলম ছিল। শামসুজ্জামান সাহেবের জন্য লাল কলম, আমার জন্য একটা সবুজ কলম, বেবির জন্য কালো কলম, আমরা যে যখন যেটা পারতাম সংশোধন করে বারবার পড়ে প্রত্যেকটা বই প্রকাশ করেছি, সেখানে তার (শামসুজ্জামান) যথেষ্ট অবদান রয়েছে। বাংলা একাডেমির উন্নয়নের জন্য অনেক কাজ তিনি করেছেন। এরপর হাবীবুল্লাহ সিরাজী সাহেবকে যখন করলাম, তিনিও কাজ করতে শুরু করলেন। কিন্তু পরপর দুজনই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। খুবই দুঃখজনক এভাবে একজন একজন করে হারাচ্ছি। এটা খুব কষ্টকর।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুপ্রিমকোর্ট বার কাউন্সিলের নির্বাচন যখন করতে যায় তাকে নমিনেশন দেওয়া হয়। আমি তাকে বলেছিলাম, বেশি ঘোরাঘুরি না করতে কিন্তু তার আগ্রহ ছিল তাকে জিততেই হবে। আর তাই সারা দেশ সফর করে। পরে করোনায় আক্রান্ত হয়। আমি প্রতিদিন তার স্বাস্থ্যের খবর নিতাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে তাকে আর বাঁচানো গেল না, আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে।

আসলামুল হক সম্পর্কে বলেন, আসলামুল হক একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। আমাদের সব আন্দোলন-সংগ্রাম সবকিছুতে সে অগ্রণী ভ‚মিকা নিয়েছে। এলাকার উন্নয়নে অনেক কাজ করেছে, এজন্য সে বারবার নির্বাচিত হয়েছে। মানুষের প্রতি অন্যরকম টান ছিল। এ সংসদ চলমান অবস্থায় এসেছিল কিন্তু এখান থেকে হঠাৎ সে চলে গেল তার পরেই তার মৃত্যুর সংবাদটা আসলো, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, কয়েকজন গণপরিষদ সদস্য হারিয়েছি। আজ আমরা যে সংবিধান পেয়েছি তাতে তাদের স্বাক্ষর রয়েছে। যেমন খন্দকার আব্দুল মালেক শহীদুল্লাহ, গণপরিষদ সদস্য আবুল হাশেম সাহেব। স্বাধীনতার পর যে সংবিধান আমরা পেয়েছি এটা তাদেরই অবদান। তাছাড়া আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী সাবেক এমপি যেমন সারাহ বেগম কবরী, মিরাজ মোল­া, আমজাদ হোসেন মিলন, ফরিদা রহমান তাদের হারিয়েছি। ফরিদা রহমান আমি একসঙ্গে ছাত্রলীগ করেছি।

বাংলা একাডেমির দুই মহাপরিচালক প্রসঙ্গে বলেন, শোক প্রস্তাবে কয়েকজনের কথা না বললেই নয়। শামসুজ্জামান সাহেবের কথা বলব। বাংলা একাডেমির চেয়ারম্যান করেছিলাম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়া চীন, প্রত্যেকটা বই লেখার সময় আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। দুর্ভাগ্য বেবী মওদুদ এ সংসদের সদস্য ছিল, তিনিও আমাদের মাঝে নেই, জামান (শামসুজ্জামান) ভাই সর্বশেষ তিনিও চলে গেলেন। কয়েকজন মিলে আমরা একসঙ্গে কাজ করতাম। একে একে সবাইকে হারিয়ে ফেললাম। জাতির পিতার আরেকটি লেখা স্মৃতিকথা সেটাও সংশোধনীর কাজ এটাও কিন্তু শামসুজ্জামান খান সাহেব করে রেখে গেছেন। আমরা এই বইগুলো যখন বের করি তিনি সব সময় পরামর্শ দিতেন। প্রত্যেকটা জিনিস সংশোধনের কাজ তিনি করতেন, কোথাও কোনো বানান ভুল আছে কিনা সেটা খুব ভালোভাবে দেখে দিতেন। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য