জাহিদ দুলাল, সংবাদদাতা, লালমোহন (ভোলা):
প্রায় পয়তাল্লিশ বছর বয়সী ববিতা রাণী। একটি ইস্ত্রি মেশিনই তার বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল। প্রায় আট বছর আগে বিদ্যুতায়িত হয়ে পরপারের বাসিন্দা হয়ে গেছেন ববিতা রাণীর স্বামী শংকর চন্দ্র। এরপর থেকেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। যার জন্য তিনি বেছে নেন ইস্ত্রি মেশিনে মানুষজনের কাপড় আয়রন করার কাজ। এতে যা আয় হয় তাতেই চলে ববিতা রাণীর জীবন-সংসার। তার এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। যার মধ্যে মেয়েকে প্রায় পাঁচ বছর আগে বিয়ে দিয়েছেন। ববিতা রাণী ভোলার লালমোহন পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ডাকবাংলো এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বর্তমানে ছেলেকে নিয়ে বাস করেন।
ববিতা রাণী বলেন, স্বামীও মানুষের কাপড়-চোপড় আয়রন করে সংসার চালাতেন। তার মৃত্যুর পরে পরিবারে উপার্জন করার মত কেউ না থাকায় নিজেকেই হাতে তুলে নিতে হয়েছে আয়রন মেশিন (ইস্ত্রি)। এরপর থেকে মানুষের নানা রকমের জামা-কাপড় আয়রন করে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১০ হাজার টাকার মতো আয় হয়। যা আয় হয় তা ঘর ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল আর খাওয়াতেই চলে যায়। স্বামীরও কোনো সম্পত্তি না থাকায় বাধ্য হয়ে অন্যের বাসায় ভাড়া থাকি। আর মানুষের কাপড় আয়রন করে কোনো রকমে দিন পার করছি।
তিনি আরো বলেন, এতো অসহায় হওয়ার পরও কারও থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সহযোগিতা পাইনি। আমার জমিও নেই, ঘরও নেই। তাই সরকারের কাছে আমার দাবী; আমাকে যেন সরকারি একটি ঘর প্রদান করা হয়। এছাড়া হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের যে চাল রয়েছে, সেখান থেকে প্রতি মাসে চাল পাওয়ার ব্যবস্থা করলে বাকি দিনগুলো একটু ভালোভাবে কাটাতে পারতাম।
এব্যাপারে লালমোহন পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সাইফুল কবীর জানান, এই মুহূর্তে তাকে সরকারি ঘর বা অন্য কোনো সুবিধা প্রদানের সুযোগ নেই। সামনে এ ধরনের কোনো সুযোগ আসলে তাকে অবশ্যই প্রদান করা হবে।