মফস্বল সাংবাদিকের সাতকাহন(তিন)

মোঃ সোয়েব মেজবাহউদ্দিন

আমি সাপ্তাহিক ভোলাবানী পত্রিকায় সংবাদ পাঠানোর পাশাপাশি বরিশালের এক সময়ের নামকরা পত্রিকা অধুনাবিলুপ্ত “দৈনিক প্রবাসী” পত্রিকায় সংবাদ পাঠানো শুরু করি। একসময় দৈনিক প্রবাসী পত্রিকা অফিসে গিয়ে পরিচয় হয় ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের দায়ি্ত্বে থাকা জি এম বাবর আলী ভাই এবং বার্তা সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা মুরাদ আহম্মেদ ভাই এর সাথে। দু’জনেই উদার মনের মানুষ। জি এম বাবর আলী ভাই সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছিলেন। আর মুরাদ আহম্মেদ ভাই আমার পাঠানো সংবাদগুলো সুন্দরভাবে এডিট করে প্রকাশের ব্যবস্থা করতেন। ফলে আমার নতুন হাতের লেখা সংবাদগুলো উন্নতমানের লেখায় পরিনত হতো। দৈনিক প্রবাসীতে আমার পাঠানো সংবাদ প্রকাশ হলে বরিশাল থেকে নিয়মিত পোষ্ট অফিসের ডাকে আমার নামে পত্রিকা আসতো।

শ্রদ্ধেয় জি এম বাবর আলী ভাই বেশ কিছুদিন আগে মারা গেছেন। আমি তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।

আমি পত্রিকায় সংবাদ পাঠানোর পাশাপাশি আমার পড়াশুনাও চালিয়ে যাই। আমার নামে প্রকাশিত সংবাদের জন্য আমার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন আমাকে ডেকে প্রসংশা করতে শুরু করে এবং সাংবাদিকতা করার জন্য উৎসাহ দিতে থাকে। আমার মরহুম নানা এ কে এম আজিজুল ইসলাম, যিনি সারাজীবন সুনামের সাথে বীমা কোম্পানীতে চাকুরী করেছেন। তিনি সাপ্তাহিক ভোলাবানী একজন নিয়মিত গ্রাহক ছিলেন। আমার নামে সংবাদ প্রকাশ হলে আমাকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে চা ও সিংগারা খাওয়াতেন। এবং তার চোখে কোন সংবাদ পড়লে আমাকে তথ্য দিয়ে সংবাদ লেখার জন্য বলতেন।কিন্তূ আমার সাংবাদিকতার ঘোর বিরোধীতা করতেন আমার পরিবার।  

লালমোহনের পত্রিকা বিক্রেতা ছিলেন মরহুম মোঃ হালিম। তার দোকান ছিল লালমোহন প্রধান সড়কের মোল্লা জামে মসজিদের মার্কেটে। ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকা লঞ্চ যোগে পরের দিন সকালে আসতো। প্রতিদিন বিকালে হালিম ভাইয়ের দোকানে গিয়ে জাতীয় পত্রিকা দেখতাম।

সাপ্তাহিক ভোলাবানীতে আমার চাচাত ভাই আনজামুল আলম মুনীরও উপ-সম্পাদকীয় পাতায় বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রতিবেদন লেখতেন। আমি তার লেখারগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তাম। একসময় জানতে পারি লালমোহনে আরও একজন বিভিন্ন প্রত্রিকায় কাজ করেন, তার নাম মোঃ জাকির হোসেন। সাংবাদিক শাহ মোঃ গোলাম মাওলা একদিন সাংবাদিক জাকিরের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন। কিন্তু আমি লক্ষ্য করলাম সাংবাদিক জাকির হোসেন কেন যেন আমার সাংবাদিকতা করাটাকে ভালভাবে নিলেন না। তিনি আমাকে লালমোহনে সাংবাদিকতা করা বিষয়ে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা ও সমস্যা তুলে ধরে আমাকে সাংবাদিকতা না করার পরামর্শ দিলেন। আমি বুঝে গেলাম মোঃ জাকির হোসেন আমাকে প্রতিদন্ধী মনে করে সাংবাদিকতা করতে বাঁধা দিবে। আমি তাকে কিছু না বলে গোলাম মাওলা ভাইর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম।

লালমোহনে কৃষিঋন বিতরনে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের অনিয়ম সমস্যা ও সমাধানের উপর একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লিখে বেশ প্রসংশা পেয়েছিলাম।—(চলবে।-   

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here