Tuesday, June 24, 2025
Homeআন্তর্জাতিকপবিত্র হজ্জ পালনে টাকার অংক কমানোর জন্য সুদৃষ্টি কামনা করছি

পবিত্র হজ্জ পালনে টাকার অংক কমানোর জন্য সুদৃষ্টি কামনা করছি

মোঃ রফিকুল ইসলাম

একই বিমানে হজ্জ, ওমরাহ্ এবং পর্যটকদের জন্য বিমান ভাড়া ভিন্ন ভিন্ন কেন? হজ্জ পালনের জন্য বিমান ভাড়া ১,৯৮,০০০ টাকা, ওমরা হজ্জ পালনের জন্য ১,০০,০০০ টাকা এবং পর্যটকদের জন্য ৬০,০০০ টাকা এর পেছনে যুক্তি কি? বিশ্বের প্রতিটি দেশ হজ্জ পালনের জন্য ভর্তুকি দিয়ে থাকে এমনকি আমাদের পার্শবর্তী ভারত, পকিস্তান, মালয়েশিয়া হজ্জ পালনের জন্য ভর্তুকী দেয়া হচ্ছে অথচ আমাদের বাংলাদেশে ভর্তূকী দিচ্ছে না বরং মোটা অংকের মুনাফা করছে।

ইসলামের মুল পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি স্তম্ভ। এই পাঁচটি স্তম্ভের যে কোন একটি বাদ দিলে বা বিশ্বাস না করলে ঈমান থাকে না। হজ্জ মানে আল্লাহর কাছে আত্মসমরপণ করা এবং আল্লাহর কাছে শপথ গ্রহণ করা। যেহেতু সৌদি আরবের পবিত্র শহর মক্কায় অবস্থিত “আল্লাহর ঘর” তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমান নবী মুহাম্মদ (সঃ) এর রওজা মোবারক স্বচোখে দেখা এবং ইসামের পবিত্র স্থানগুলো পরিদর্শনের মাধ্যমে হজ্জ পালন করা।

হজ্জ ইসলামের অন্যতম ইবাদত। সামর্থবান নারী ও পুররুষের জন্য হজ পালন করা ফরজ। যদি কারো উপর হজ্জ ফরজ হয় যদি সে হজ্জ আদায় না করেই মারা যায়, তবে তা কবিরা গুনাহ হবে। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘আর এ ঘরের হজ করা সেসব মানুষের জন্য অবশ্যকর্তব্য, যারা সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য রাখে। আর যে প্রত্যাখ্যান করবে সে জেনে রাখুক আল্লাহ সারা বিশ্বের কোনো কিছুরই মুখাপেক্ষী নন।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯৭)

নামাজ পড়া যেমন ফরজ তেমনি হজ পালন করাও ফরজ। নামাজের ওয়াক্ত হলে যেমন নামাজ পড়তে হয় তেমনিভাবে যখনই নিসাফ পরিমান টাকা আসবে তখনই হজ পালন করতে হবে। হাদিসে

আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি আল্লাহর ঘর পর্যন্ত পৌঁছার মতো সম্বল ও বাহনের অধিকারী হওয়ার পরও যদি হজ না করে তবে সে ইহুদি হয়ে মারা যাক বা খ্রিস্টান হয়ে মারা যাক তাতে (আল্লাহর) কোনো ভাবনা নেই।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৮১২)

মক্কা- মদিনার বাড়ি ভাড়ার অজুহাত দেখানো ঠিক নয়, কারণ মক্কা মদিনায় বাড়ি ভাড়া অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর অনেক কম। সৌদী সরকারের হজ্ব ফি সব দেশের জন্য সমান। শুধু বিমান ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ের হলেই সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব।

সুরা বাকারা, আয়াত-১৯৭: হজ্জের মাসগুলো নির্ধারিত; অতএব কেউ যদি ঐ মাসগুলোর মধ্যে হজ্জের সংকল্প করে, তবে সে হজ্জের মধ্যে সহবাস, দুষ্কার্য ও কলহ করতে পারবে না এবং তোমরা যে কোন সৎকর্ম করা না কেন, আল্লাহ তা পরিজ্ঞাত আছেন; আর তোমরা নিজেদের পাথেয় সঞ্চয় করে নাও; বস্তুতঃ নিশ্চিত উৎকৃষ্টতম পাথেও হচ্ছে আল্লাহভীতি এবং হে জ্ঞানবানগণ! তোমরা আমাকে ভয় কর।

হজ্জ এজেন্সি এসোসিয়েশনের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ সরকারের নীতি নির্ধারকগন যখন হজ্জের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল তখন এজেন্সির “হাব” কেন চুপ করে বসেছিল। তারা কেন অতিরিক্ত টাকার ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিলেন না। তবে কি তাদের যোগসাজস রয়েছে বা “কোম্পানীকা মাল দরিয়া মে ঢাল” এই কথার সাথে তাদের মিল রয়েছে কি? এই ব্যাপারে ধর্মপ্যাণ মুসলমান সরকার ও হাবের উপর হতাশ তাদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আর কি-ই-বা করার আছে।

বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী এবং রাষ্ট্র প্রধানের সদয় সুদৃষ্টি কামনা করছি। এখনও সময় আছে টাকার অংক কমিয়ে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান যেন কম খরচে হজ্জ পালন করতে পারে তার যথাযথ ব্যবস্থা করা হলে আমরা সবাই রাষ্ট্র প্রধান, ধর্মমন্ত্রীসহ হজ এজেন্সির সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো এবং হজ্জের পবিত্র জায়গায় গিয়ে দোয়া করবো। ইনাশাআল্লাহ।

লেখকঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম। একান্ত সচিব, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিঃ, ঢাকা, বাংলাদেশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য