Tuesday, October 14, 2025
Homeবাংলাদেশদুদকের বারান্দায় ক্ষমতাশালী অনেককেই আসতে হয়েছেঃ ইকবাল মাহমুদ

দুদকের বারান্দায় ক্ষমতাশালী অনেককেই আসতে হয়েছেঃ ইকবাল মাহমুদ

দুদকের বারান্দায় ক্ষমতাশালী অনেককেই আসতে হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমাজের প্রতিক্ষেত্রে একটি বার্তা দিতে পেরেছে যে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

সোমবার দুদক কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের বিদায়ী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। তি‌নি ব‌লেন, তবে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা আমাদের কাছে ছিল সেটি পূরণ করতে পারিনি। ১৯৭১ সালের মতো সবাই একত্রিত হয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারলে জনগণের এ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারতাম।

বিদায়বেলায় নিজের সম্পদের হিসাব দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, একটা প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তি থেকে এই কালচার শুরু করলে হবে না। সব সরকারি কর্মকর্তাদেরই সম্পদের হিসাব দেওয়া দরকার।

তবে সম্পদের হিসাব বিবরণী কীভাবে দেবে এবং সেই বিবরণী দিয়ে কি করা হবে সেই ব্যাপারে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইনের কাঠামো করা দরকার।

কাজ করতে গিয়ে কী ধরনের চাপের সম্মুখীন হয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনো কাজে চাপ অনুভব করিনি। কোনো মন্ত্রী-এমপি এখানে তদবির করতে আমার দায়িত্ব পালনের পাঁচ বছরে আসেনি। তবে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি।

এটি বলতে গেলে আমার নিজস্ব চাপ ছিল। সরকার কিংবা অন্য কোনো চাপে আমি এমনটি করিনি। কারণ সবার আগে আমি রাষ্ট্রকে প্রধান্য দিই।

দুদকের দুর্বলতার জায়গার ব্যাপারে তিনি বলেন, মামলার তদন্ত করার মতো যোগ্য কর্মীর দুদকে অভাব রয়েছে। এখানকার কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ঘাটতি রয়েছে। এখানে আরও জনবল দরকার। আমাদের চেষ্টা ছিল শতভাগ মামলায় সাজা দেওয়ার। তার পরও আমাদের ২০২০ সালে ৭৭ শতাংশ মামলায় সাজা হয়েছে। ২০১৯ সালে যা ছিল ৬৩ শতাংশ।

কর্মকর্তাদের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করি। আমাদের নিজস্ব গোয়েন্দা টিম রয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে পাঁচ থেকে ছয় কর্মকর্তার চাকরি চলে গেছে। অনেক কর্মকর্তার পদ অবনতি হয়েছে। শাস্তি হিসেবে অনেককেই অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

তবে দুদকে আরও বেশি স্বচ্ছ করতে হলে সমাজের সম্মানিত ব্যক্তি, বিশিষ্ট সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। যারা দুদুকের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি খতিয়ে দেখবে।

তিনি বলেন, আমরাও একদমই স্বাধীন নই। আমাদের ওপরে আদালত রয়েছে। সেখানে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়। একটি মামলার রিপোর্ট দিলেই হবে না। যদি সেটি আদালতে প্রমাণ করতে না পারি। তবে প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা থাকবেই। সমালোচনা হচ্ছে অলঙ্কার।

মানিলন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, সবাইভাবে সব ধরনের মানিলন্ডারিং দুদকের কাজ। একটি সময় আমাদের দায়িত্ব ছিল এটি। এখন আমরা ঘুষগ্রহণ থেকে যে মানিলন্ডারিং হয় সেটি তদন্ত করি।

দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, দুদক যথেষ্ট শক্তিশালী একটি প্রতিষ্ঠান। দুদকের যে আইন আছে তা দিয়ে দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব। তবে এ ক্ষেত্রে জনগণের সহযোগিতা লাগবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

একই দিনে বিদায় নেওয়া দুদকের কমিশনার আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা নিজেদের মধ্যেও সততার চর্চা করেছি। আর সেই সততা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে করোনা কারণে গত এক বছর মাঠপর্যায়ে সেভাবে কাজ করতে পারিনি।  

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য