Friday, November 14, 2025
Homeবাণিজ্যছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট পেশ

ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট পেশ

২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার বাজেটের ব্যয় বেড়েছে ১২ ভাগ। স্পিকার ড. শিরীন শারমিনের সভাপতিত্বে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।

স্পিকারের অনুমতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে উপস্থিত ছিলেন।

বাজেটে মোট ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৬.২ শতাংশ। এই হার গত বাজেটে ছিল ৬.১ শতাংশ। বাজেটের এই ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে এক লাখ ১৩ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে। এ ছাড়া বৈদেশিক উৎস হতে এক লাখ এক হাজার ২২৮ কোটি টাকা সংগ্রহের কথা বলা হয়েছে।  

এ ছাড়া মহামারী করোনা মোকাবিলায় এবার ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাজেটে পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকা। গোটা বাজেটের মতোই পরিচালন ব্যয়ও বাড়ানো হয়েছে প্রায় ১২ ভাগ।

 ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেটে অর্থ সংগ্রহের জন্য রাজস্ব খাতের আয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার ৭৮ কোটি। কর আদায় হবে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা।

এ ছাড়া এবারের বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ ধরা হয়েছে দুই লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া এবার উন্নয়ন ব্যয়ও বাড়ানো হয়েছে শতকরা ১৪ ভাগ। এবার উন্নয়ন খাতের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে দুই লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা।

বিদায়ী অর্থবছর অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকারের দেওয়া মূল বাজেটের আকার ছিল পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে পাঁচ লাখ ৩৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।

১৯৭২ সালের ৩০ জুন ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ। ওই বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকার। এর ওপর ভিত্তি করেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি।

এবারের বাজেট অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের দায়িত্বকালের তৃতীয় বাজেট, আওয়ামী লীগ সরকারের ২১তম এবং বাংলাদেশের ৫০তম বাজেট। আর, এটি হবে বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালীন দ্বিতীয় বাজেট অধিবেশন।

এর আগে গত বছর ১০ জুন করোনা মহামারির মধ্যে চলতি অর্থবছরের বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। এরপর ১১ জুন ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বাজেট পেশ করা হয়।

করোনা মহামারির এই সময়ে এবারও বাজেট অধিবেশনের মেয়াদ স্বল্প সময়ের হওয়ার কথা রয়েছে। আর, সংক্ষিপ্ত আলোচনার পর বাজেট নিয়ম অনুযায়ী ৩০ জুনের মধ্যে পাস করা হবে।

এবারের বাজেট প্রণীত হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি উত্তরণের কৌশলকে সর্বাধিক প্রাধান্য দিয়ে। যার সম্ভাব্য আকার দাঁড়াচ্ছে ছয় লাখ তিন হাজার কোটি টাকা। বাজেটের ঘাটতিটাও থাকছে বেশ বড়। আর জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হচ্ছে সাত দশমিক দুই শতাংশ।

করোনা মহামারি পাল্টে দিয়েছে অর্থনীতির সব হিসাবনিকাশ। বাজেটে বৈচিত্র্য তো দূরের কথা, হিমশিম খেতে হচ্ছে মৌলিক কাঠামো দাঁড় করাতেই। তাই বাজেটে, স্বভাবতই গুরুত্ব পাচ্ছে সম্পদ আহরণ, বণ্টন এবং করোনা মোকাবেলার কৌশল। অবস্থা অনুকূলে না থাকায়, চলতি বাজেট থেকে মাত্র ছয় শতাংশের মতো বাড়িয়ে, আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয় ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।

আজকে বাজেট উপস্থাপনের আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। জাতীয় সংসদ ভবনের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে এই বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও এতে অংশ নেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য