শাহীন কামাল
কোভিট ১৯ পরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বাভাবিক গতি আনতে নানাবিধ কর্মপন্থা গ্রহণ করে চলেছেন কর্তৃপক্ষ।

এসাইনমেন্ট ব্যবস্থা সর্বমহলে গৃহীত হয়েছে৷ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দিনক্ষণ ও উপযুক্ত পরিস্থিতি বিষয়ে সচেতনভাবেই বিবেচনা করছেন সরকার। উচ্চশিক্ষায় জট লাগানো এড়াতে ভর্তি পরিক্ষা বিষয়েও সজাগ কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় করোনাভাইরাসে স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেয়ার বিষয়ে সচেষ্ট হয়েছে। গ্রামে গঞ্জে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা উচ্চশিক্ষিত সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত বিষয়েও মতামত দিয়েছেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী। তিনি স্পষ্টভাবেই এ ধরনের শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তে কারিগরি শিক্ষা বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন। অবশ্য রাজনৈতিক নানা কারণে বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স বিষয়ে কার্যকর কোন পদক্ষেপ সরকার নিতে পারবে কিনা, তা সময় বলে দিবে। তবে প্রায় তিন দশকের এই সকল অনার্স কোর্স হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়ায় উদ্যোগ কার্যকর করতে হলে এ সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তিবর্গের ভবিষ্যতকেও সরকারকে ভাবতে হবে। এটা সত্যি যে, উচ্চ শিক্ষার নামে অবকাঠামোহীন, শিক্ষকবিহীন এ ধরনের শিক্ষা কোর্স চলতে দেয়া উচিৎ নয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এনটিআরসি কর্তৃক স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার পরে, অনার্স কোর্সের নামে যেনতেন নিয়োগ ব্যবস্থা কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। মানহীন উচ্চশিক্ষা সনদের কারখানা বিষয়ে সরকার যত দ্রুত সিদ্ধান্ত নিবে, ততই মঙ্গল।
মাধ্যমিকে ভর্তি পরীক্ষার পরিবর্তে লটারিতে ভর্তি প্রক্রিয়া এক ধাপ বাধাগ্রস্ত হয়ে আবার গতি পেয়েছে। এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে নানা তর্কবিতর্ক হচ্ছে। বাস্তবতার ভিত্তিতে ভর্তি পরিক্ষা বাতিল হলেও বর্তমান প্রক্রিয়ায় কি কি ত্রুটির সম্ভাবনা রয়েছে, তা ভবিষ্যৎ বলে দেবে।
শিক্ষার্থীদের রোল নম্বর না রেখে আইডি ব্যবস্থা প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিযোগিতার পরিবর্তে সহযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টির জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব কিংবা সমাজে টিকে থেকে নিজের যোগ্য আসন তৈরী করা তো দোষের নয়। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিযোগিতা শিক্ষাক্ষেত্রে ইতিবাচক হিসেবেই জানতাম। হঠাৎ করে তাদেরকে প্রতিযোগিতা থেকে সরিয়ে আনা যৌক্তিক বলে মনে করছি না। স্কুলের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায়ও কেউ কেউ ফাস্ট, সেকেন্ড হবে, তাদের আমরা এড়িয়ে যাব কিভাবে? আর তা ঠিক হবে কিনা? প্রতি শ্রেনীতে কিছু অসাধারণ প্রতিভাবান শিক্ষার্থী থাকে, তাদেরকে স্বীয় আসন না দেয়া, কতটুকু যৌক্তিক হবে?
ইতিমধ্যেই শিক্ষা বিষয়ে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। অটোপাশ, অটো প্রমোশন দিতে হয়েছে। ভর্তি পরিক্ষা বাতিল করতে হয়েছে। এখন আবার রোলনম্বর বাদ দিয়ে আইডি নাম্বার খুব কী দরকার ছিলো?