সিরাজগঞ্জে দুটি হাসপাতাল থেকে শনিবার রাতে চুরি যাওয়া দুই শিশুর মধ্যে একজনকে জীবিত ও আরেকজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উল্লাপাড়া উপজেলার আলোকদিয়া গ্রামের একটি বাড়ি থেকে জীবিত ও মৃত শিশু দুটিকে উদ্ধার করা হয়।
সিসি টিভির ফুটেজ শনাক্ত করে উল্লাপাড়ার সলঙ্গা থানা পুলিশ আলোকদিয়া গ্রামের মৃত সোলায়মানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুই শিশু উদ্ধার করে। একই সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপহরণ চক্রের পাঁচ নারী এবং দুই পুরুষ সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলো- উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা থানাধীন আলোকদিয়া গ্রামের মৃত সোলায়মান হোসেনের স্ত্রী সয়রন বিবি, তার মেয়ে আলপনা খাতুন, ছেলে রবিউল ইসলাম, রবিউলের স্ত্রী ময়না খাতুন, একই গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মিনা খাতুন ও একই গ্রামের রেজাউলের স্ত্রী খাদিজা খাতুন ও গ্রাম ডাক্তার শরিফুল ইসলাম।
এর আগে গত মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতাল ২৩ দিন বয়সী এক শিশু ও শনিবার বিকালে উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা থানার সাকোয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে জন্মের ৬ ঘণ্টা পর আরেক শিশু চুরি হয়।
সলঙ্গা থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী জানান, শনিবার সকালে তাড়াশের নওগাঁ গ্রামের মাজেমের স্ত্রী সমিতা খাতুন সিজারের মাধ্যমে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। দুপুরের পর বোরকা পরিহিত এক নারী নার্স পরিচয় দিয়ে সমিতা ও তার স্বজনদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে।
বিকাল ৩টার দিকে নার্স পরিচয়ধারী ওই নারী বাচ্চার নানির কাছ থেকে শিশুটির কান্না থামানোর কথা বলে কোলে নেয়। এর পর হাঁটতে হাঁটতে হাসপাতালের বারান্দায় আসে এবং নানিকে ভেতরে চলে যেতে বলে।
শিশুটির নানি কেবিনের ভেতরের চলে যাওয়া মাত্র নার্স পরিচয়ধারী নারী শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর পুলিশ এসে হাসপাতাল থেকে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে।
সেখানে দেখা যায়, এক নারী শিশুটিকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ ফুটেজে দেখা নারীকে শনাক্ত করে রাত ১০টার দিকে সলঙ্গা থানার আলোকদিয়া গ্রামে সোলায়মানের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় তাদের কাছ থেকে শিশুটি উদ্ধার এবং সাতজনকে আটক করা হয়।
এর পর ঘটনাস্থলেই তাদের গত মঙ্গলবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতাল থেকে ২৩ দিন বয়সী শিশু অপহরণের বিষয়ে জেরা করা হয়। একপর্যায়ে অপহরণচক্রের সদস্যরা সেই শিশুটিও অপহরণের বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে ওই বাড়ির একটি ঘরের ধানের ঢোলের ভেতর থেকে মৃত অবস্থায় ওই শিশুটিকেও উদ্ধার করা হয়।