Friday, November 28, 2025
Homeদূর্ঘটনাতিন দশক ধরে সংস্কারের ছোয়া লাগেনি যে রাস্তার

তিন দশক ধরে সংস্কারের ছোয়া লাগেনি যে রাস্তার

জাহিদ দুলাল, লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি:

ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড শিমুলতলা থেকে শামছুল হক মালেগো বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তাটির বেহাল দশা। দীর্ঘ প্রায় তিন দশক ধরে দেশের অনেক উন্নয়নের মধ্যেও কোন মাটি পড়েনি এ জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তায়। হয়নি কোনা সংস্কার। রাস্তাটির অনেক স্থানে গর্ত, ভাঙা আর খানাখন্দকে ভরে গেছে। প্রতিনিয়ত সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়ে এই রাস্তায় চলতে হচ্ছে এলাকাবাসী, স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও পথচারীসহ কয়েক হাজার মানুষকে। বিগত সরকারের আমলে এলাকাবাসী রাস্তাটি সংস্কারের জন্য অনেক দেন দরবার করেও টনক নাড়াতে পারেনি জনপ্রতিনিধি ও কর্তৃপক্ষের।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক মো. শরফুদ্দিন হাওলাদার বলেন, জনবসতিপূর্ণ এ রাস্তাটি ১৯৯৬ সালে একবার সংস্কার করা হয়েছিল। তারপর থেকে বিভিন্ন সরকার আসলো গেলো কিন্তু এই রাস্তাটি কোনো সংস্কার হয়নি। অবহেলায় পড়ে আছে রাস্তাটি। দীর্ঘ ৩০ বছরে কোন মাটি পড়েনি এই রাস্তায়। রাস্তার মাঝে বড় বড় গর্তের কারণে বৃষ্টি হলেই কোনো যানবাহন চলে না এই রাস্তায়।

ওই এলাকার বাসিন্দা সবিতা রানি, নীহার বালা, মিতা রানি ও পারুল রানি জানান, বর্ষার সময় চলাচল করতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়, জরুরি দরকারে বাড়ি থেকে কোথাও যেতে পারি না। আমাদের অসুখ-বিসুক হলে ডাক্তারের কাছে যেতে পারি না। গর্ভবতী মহিলারা অসুস্থ হয়ে পড়লে রাস্তার কারণে অ্যাম্বুলেন্স আসে না এমনকি ছোট যানবাহনও চলে না। আমরা এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই।

অটোরিকশা চালক রাসেল ও ভ্যান চালক শাহাজাহান বলেন, ৩০ বছর রাস্তায় কোনো কাজ হয় নাই। রাস্তার কারণে যাত্রীসেবা ও গাড়ি দিয়ে মালামাল নিতে পারি না। অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমরা রাস্তার সংস্কার চাই।

পশ্চিম চর উদেম ৩নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছাবাহা আহমেদ, গৌরব দাস বলেন, বৃষ্টির সময় কাঁদা মাটিতে আমাদের জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে আমদের স্কুলে আসতে কষ্ট হয় ও স্কুলে আসতে পারি না।

এলাকার বাসিন্ধা ও প্রভাষক মো. ইবনুল হাসান ইমন জানান রাস্তাটির কোথাও কোথাও রাস্তা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। বিভিন্ন স্থান ভেঙে সরু হয়ে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালি আর বর্ষায় বড় বড় গর্তে পানি জমে হাঁটু পরিমাণ কাদায় কর্দমাক্ত হয়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। একদিকে কাদামাটি তার ওপর বৃষ্টির পানি, এমন অবস্থায় নাজেহাল পথচারী ও স্কুল, মাদ্রাসার পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।

পশ্চিম চর উমেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিক্ষিকা বিথীকা রানী দাস ও ফরিদ উদ্দিন বলেন, শিমুলতলা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। বর্ষার সময় আমাদের এবং স্কুল, মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ হাজারো পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষার সময় কাঁদা মাটির কারণে অনেক শিক্ষার্থী ঠিকমতো স্কুলে আসে না। রাস্তাটি দ্রুত পাকা করা অতীব জরুরি।

এ বিষয়ে পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবু ইউসুফ বলেন, এই রাস্তাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এমন আরও অনেক কাঁচা রাস্তা আছে যেগুলো এখনও পাকা হয় নাই। কাঁচা রাস্তা বর্ষায় মাটির সঙ্গে মিশে যায়। এ জন্য কাঁচা রাস্তা না করে পাকা রাস্তা করাই ভালো। ওই রাস্তাটির আইডি নম্বর পড়েছে। পাকা করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া আছে। প্রস্তাব অনুমোদন হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমে যাবে।

এ ব্যাপারে লালমোহন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহ আজিজ বলেন, সামনে বরাদ্দ এলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাস্তাটি সংস্কারকাজ করা হবে। আশা করছি বরাদ্দ পেলে দ্রুত মাটির রাস্তাটি ইটের (সলিং) রাস্তা করার ব্যবস্থা করবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য