Monday, June 30, 2025
Homeদেশগ্রামপ্রকৃতি যেন নতুন সাজে সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার ফুলে

প্রকৃতি যেন নতুন সাজে সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার ফুলে


জাহিদ দুলাল, লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি: 
বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। আমাদের এই দেশ অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। ঋতু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলার প্রকৃতিতে চলে রুপের পালাবদল। আমাদের দেশের একেকটি ঋতুর সৌন্দর্য একেক রকম। এখন গ্রীষ্মকাল চলছে। গ্রীষ্মকালের কাঠফাটা রোদ আর মাঝে মধ্যে ঝুমবৃষ্টিতে প্রকৃতি যেন বর্ণিল রুপে সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার ফুলে। ঋতুরাজ বসন্তকেও যেন হার মানাচ্ছে চোখ ধাঁধানো কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়া তার মোহনীয় সৌন্দর্য নিয়ে আবারো হাজির হয়েছে প্রকৃতির মাঝে। টকটকে লাল অথবা গাঢ় কমলা লাল ছোপে ভরা কৃষ্ণচূড়া সকলের মন রাঙিয়ে দেয়। আমাদের দেশে বর্তমানে কৃষ্ণচূড়া গ্রীষ্মের অতি পরিচিত ফুল। 
বর্তমানে ভোলার লালমোহনের পৌরশহরসহ গ্রামাঞ্চলে কৃষ্ণচূড়ার গাছে চোখধাঁধানো ফুল ফুটতে দেখা গেছে। এ যেন প্রকৃতি নতুন সাজে সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার ফুলে। কৃষ্ণচূড়ার ফুলকে নিয়ে ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কবি কৃষ্ণচূড়ার ফুল শহীদদের ঝলকিত রক্তের বুদবুদ এর প্রতিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। পথের ধারে কৃষ্ণচূড়ার গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে আগুন রঙের কৃষ্ণচূড়ার ফুল দেখে লালমোহনের সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ পুলকিত। কৃষ্ণচূড়া গাছ বিদেশী হলেও বর্তমানে আমাদের দেশে এই গাছ ও ফুলকে মানুষ দেশী হিসেবে চিনে। আমাদের দেশে সাধরনত লাল রঙের কৃষ্ণচূড়া বেশি দেখা যায়। তবে কোথাও কোথাও হলদে রঙের দেখা যায়। তবে উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বলেছেন, কৃষ্ণচূড়া তিনটি রঙের হয়। লাল, সাদা ও হলুদ। সাদা কৃষ্ণচূড়া আমাদের দেশে সাধারণত খুব কমই দেখা গেছে। 
লালমোহন কলেজ পাড়ার বাসিন্দা ফয়েজ উল্যাহ বলেন, সরকারি শাহবাজপুর কলেজ মাঠে কয়েকটি কৃষ্ণচূড়া গাছ রয়েছে। বর্তমানে কয়েকটি গাছে রক্ত লাল রঙের এবং কয়েকটি গাছে হালকা গোলাপী ফুল ফুটেছে। যাহা খুবই মনোরম দৃশ্য। এখানে প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে মানুষ হাটতে আসে আর কৃষ্ণচূড়ার ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করে। অনেকে আবার ফুলের সাথে নিজেদের ছবিসহ করে সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যম ফেসবুকে দিচ্ছে। 
লালমোহন পৌরশহরের ওয়েস্টার্ণপাড়া ডাকবাংলোর মধ্যে কয়েকটি কৃষ্ণচূড়া গাছে ফুটেছে লাল রঙের ফুল। পথচারী ও সৌন্দর্যপিপাসুগণ ডাকবাংলো পুলের উপর এবং রাস্তায় দাড়িয়ে উপভোগ করছেন কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য। পথচারী কামাল, রফিক, শাহীন ও ফরহাদের সাথে আলাপ কালে তারা জানান, খুবই সুন্দর দেখতে এই ফুলগুলো। আমরা অনেকক্ষণ ধরে এর সৌন্দর্য উপভোগ করছি। ফুলের দিকে তাকেয়ে আমাদের মনটা ভালো হয়ে গেল। 
লালমোহন গাজারিয়া বাজার এলাকার মামুন বলেন, বাজারের পূর্ব পাশে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছে ফুল ফুটেছে। যাহা প্রকৃতিপ্রেমীদের আকৃষ্ট করছে। প্রকৃতিপ্রেমীরা এখানে এসে উপভোগ করছে। অনেকে ছবি করছে ও আবার অনেকে গলা ছেড়ে বিভিন্ন গান গাচ্ছে। 
লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকার মো. আল-মামুন নামে এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের এলাকায়ও কয়েকটি কৃষ্ণচূড়া গাছ রয়েছে। ওই গাছগুলো এখন ফুলে ফুলে ভরে গেছে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের অতুলনীয় সৌন্দর্য আকৃষ্ট করছে প্রকৃতিপ্রেমিদের। অনেক শিক্ষার্থীরা আবার এই কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে এসে আড্ডা জমায়।

লালমোহনে রেঞ্জ বন কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দাস জানান, বনজ বৃক্ষ হিসেবে কৃষ্ণচূড়াকে দেখা হয়না। এটাকে সোভাবর্ধন হিসেবে দেখা হয় এবং শোভাবর্ধণ হিসেবে এই গাছকে রোপন করা হয়। এখন কৃষ্ণচূড়া ফুলের মৌসূম চলছে। তাই লালমোহন উপজেলায় মানুষের বাড়ি ও বাগানে যে কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো রয়েছেন সেগুলোতে বর্তমানে ফুল আসছে এবং ফুলের সৌন্দর্য মানুষ উপভোগ করছে।  

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য