Tuesday, June 24, 2025
Homeআইন-আদালতব্যাংকের লুঙ্গি পরা গ্রাহককেও “স্যার” বলতে হবেঃ হাইকোর্ট

ব্যাংকের লুঙ্গি পরা গ্রাহককেও “স্যার” বলতে হবেঃ হাইকোর্ট

ব্যাংকের একজন লুঙ্গি পরা গ্রাহককেও ”স্যার” বলতে হবে’ বলে হাইকোর্ট এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজালের উদ্দেশে এ মন্তব্য করেছেন । রবিবার (৫ জুন) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

মামলার শুনানির শুরুতে আদালতের আদেশের পরও সাতক্ষীরার ব্যবসায়ী সফিউর রহমানকে ঋণ সংক্রান্ত ব্যাংক স্টেটমেন্ট না দেওয়ার ঘটনায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবি ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা। তারা হলেন—এবি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের এভিপি কে এম আমিনুল ইসলাম ও সাতক্ষীরা ব্র্যাঞ্চের ম্যানেজার মো. সহিদুজ্জামান। এ সময় এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজালও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতে তারেক আফজাল বলেন, আমাদের ব্যাংকের কর্মকর্তারা আদালতের আদেশ মানেননি, এজন্য আমি দুঃখিত ও লজ্জিত। যারা আদালতের আদেশ মানেননি আমরা তাদের বিরূদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবো।

দুই কর্মকর্তার নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার পর ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, আপনার অফিসারদের শেখান কীভাবে গ্রাহকদের ‘স্যার’ বলতে হয়। গ্রাহকরা যেকোনও প্রতিষ্ঠানের প্রাণ। একজন লুঙ্গি পরা গ্রাহককেও ‘স্যার’ বলতে হবে।

মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, সাতক্ষীরার সফি এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সফিউর রহমান এবি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। সেই ঋণের বিপরীতে তিনি একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট চেয়েছিলেন। কিন্তু এবি ব্যাংক থেকে কোনও ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেওয়া হয়নি। ফলে ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে অস্বীকার করায় সফিউর রহমান প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।

ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত ৩০ মে  হাইকোর্ট বেঞ্চ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনীকে এবি ব্যাংকের হেড অফিসে ও সাতক্ষীরা শাখার ম্যানেজারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বলেন। পরে তিনি হেড অফিসের এভিপি আমিনুল ইসলাম ও সাতক্ষীরা ব্রাঞ্চের ম্যানেজারকে আদালতের আদেশের কথা জানান এবং তাদের গ্রাহক ব্যবসায়ী সফিউর রহমানকে ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেওয়ার জন্য বলেন। একইসঙ্গে এভিপি আমিনুল ইসলামকে ৩১ মে কোর্টে হাজির থাকতে বলা হলেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ মে হাইকোর্টের আদেশের পর রিটকারী এবি ব্যাংকের সাতক্ষীরা শাখায় ব্যাংক স্টেটমেন্ট আনতে যান। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। যার ধারাবাহিকতায় আদালতের আদেশের পরও ব্যাংক স্টেটমেন্ট না দেওয়ায় তাদের গ্রেফতারের আদেশ দেন হাইকোর্ট। গুলশান ও সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের  রবিবার (৫ জুন) আদালতে হাজির করতে বলা হয়।

তবে হাইকোর্টের ওই গ্রেফতার আদেশের পর দুই কর্মকর্তা গত ২ জুন স্বেচ্ছায় হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করেন। পরে আদালত নির্ধারিত দিন আজ রবিবার মামলার শুনানি নিয়ে তাদের ক্ষমা প্রদান করলেন।

আদালতে এবি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট খায়রুল আলম চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট আবু তালেব। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য