ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় নিহত এমভি ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ হাদিসুর রহমানের লাশ রোমানিয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
হাদিসুরের লাশ নিয়ে একটি ফ্রিজারভ্যান শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ১১টায় মলদোভার উদ্দেশে রওনা হয়েছে। দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ফ্রিজারভ্যানটি রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এর আগে রোমানিয়া কর্তৃপক্ষ হাদিসুরের পরিবারের সম্মতিপত্র চায়। পরে বাংলাদেশ থেকে তার পরিবারের সম্মতিপত্র পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসাইন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে হাদিসুরের লাশ কবে নাগাদ বাংলাদেশে আসবে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।
এর আগে গত ৯ মার্চ দুপুরে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের ২৮ নাবিক দেশে ফেরেন। সেদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ইউরোপ উইংয়ের মহাপরিচালক সিকদার বদিরুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, হাদিসুরের লাশ খুব শিগগিরই দেশে আনা হবে। তবে সময়টা ঠিক করে বলা যাবে না।
প্রসঙ্গত, তুরস্ক থেকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে জলসীমায় নোঙর করে ১৮০ মিটার দৈর্ঘ্যরে বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে অলভিয়া বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়।
জাহাজটি ২৯ জন নাবিক ও ক্রু নিয়ে সেখানেই নোঙর করা অবস্থায় আটকা পড়ে। গত ২ মার্চ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ২৫ মিনিট ও ইউক্রেন সময় ৫টা ২৫ মিনিটে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে রকেট হামলা হয়। এতে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। শুরুতে নাবিকরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। অলভিয়া বন্দর থেকে একটি টাগবোট এসে আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। নাবিকদের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। হামলায় জাহাজের ব্রিজ ধ্বংস হয়ে যায়। মারা যান হাদিসুর রহমান।
জাহাজে আটকে থাকা বাকি ২৮ নাবিক ও ক্রু আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ৩ মার্চ সন্ধ্যায় টাগবোটের সাহায্যে তাদের তীরে আনার পর অলভিয়া এলাকার একটি বাংকারে রাখা হয়। সেখান থেকে ৫ মার্চ সকালে পাশের দেশ মলদোভা হয়ে রোমানিয়ার উদ্দেশে রওনা দেন তারা। ৬ মার্চ সকালে তারা রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে পৌঁছান। সেখানে একটি হোটেলে তাদের রাখা হয়। হোটেলে বিশ্রাম শেষে তাদের বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।