মোঃ সোয়েব মেজবাহউদ্দিন
করোনা মোকাবেলায় দেশে চলছে কঠোর লকডাউন।পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি সচল করার জন্য খোলা রাখা হয়েছে গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানা। বিভিন্ন ব্যাংক ও বীমা অফিস, কৃষিপন্য সরবরাহকারী এ্রগ্রোভেট কোম্পানী অনেক প্রতিষ্ঠান।

অপর দিকে এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ রয়েছে গনপরিবহন। ফলে ভোগান্তিতে সাধারন জনগন। অনেক চাকুরীজীবি প্রতিদিন তাদের অফিসে যাওয়ার আসায় চরমবিপত্তিতে পরছে। জরুরী প্রয়োজনে ব্যবহার করতে হচ্ছে রিক্সা, সাইকেল বা ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল। অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হচ্ছে সিএসজি। সেখানেও প্রতিনিয়ত বিপত্তি ঘটাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। প্রতিদিন ট্রাফিক পুলিশের অযৌত্তিক হয়রানীর স্বীকার হচ্ছে সাধারন মানুষ এবং নিরীহ রিক্সা চালক ও সিএনজি চালক এবং মোটর সাইকেল চালক। কোন কারণ ছাড়াই গরীব বয়বৃদ্ধ নিরীহ রিস্কা চালক যারা প্রতিদিনের আয় দিয়ে সংসার চালায়। ট্রাফিক পুলিশের একশ্রেনী তাদের রিক্সা ভাংচুর করার পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশের বাবার বয়সী রিক্সা চালকদের অমানবিকভাবে মারধোর করছে।যা ভাইরাল হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে। যাদের ঘরে খাবার নাই, তারা জীবিকা নির্বাহের জন্য রিক্সা চালায় তাদের জীবিকার বাহন রিস্কা ভাংচুর করছে, তাদের মারধোর করছে, এটা কি কোন সভ্য সমাজের কাজ।রিস্কা ভাংচুর করা, রিক্সা চালককে মারধোর করা কি ট্রাফিক পুলিশের অপরাধ নয়?

ট্রাফিক পুলিশ কেন এই সময়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে? এ প্রশ্নের কি কোন জবাব আছে? এ প্রশ্নের জবাব আছে সাধরন রিক্সা চালক মুমিনের কাছে। মুমিন বললেন, এখন কোন গনপরিবহন চলছে না, ট্রাফিক পুলিশের উপরি পাচ্ছে না।গনপরিবহন চলছে না, ট্রাফিক সার্জেন্ট কখায় কখায় মামলা করতে পারছে না, মামলা করলে ট্রাফিক সার্জেন্ট কমিশন পেতেন। সেই কমিশন বন্ধ, তাই ট্রাফিক সার্জেন্ট ও ট্রাফিক পুলিশ এত বেপরোয়া।কোন প্রকার অনিয়ম না করা সত্যেও সিএনজি চালক, মোটর সাইকেল চালকদের ২০০০-৫০০০ টাকা মামলা দিচ্ছে। কেন এই মামলা দিচ্ছে, কোন অপরাধে মামলা দিচ্ছে তার কোন সঠিক জবাব দিচ্ছেন না ট্রাফিক সার্জেন্ট। যা ফেইজবুকের লাইবে ভাইরাল হচ্ছে। সম্প্রতি ফেণীতে বিনাকারনে এক রিক্সা যাত্রীকে মারধোর করে আটক করায় কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশকে ক্লোজ করা হয়েছে।পন্যবাহী অনেক ট্রাককে থামিয়ে কাগজপত্র চেক করে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে মামলার হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করছে।
সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমউ) এর এস সিনিয়র চিকিৎসক এপ্রোন পড়ে প্রাইভেটকারে ডাক্তারের স্টিকার লাগিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে তাকে যেভাবে ট্রাফিক সার্জেন্ট অপদস্থ্য করলো, সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমের বদৌলতে সারা বিশ্ব তা দেখার সুযোগ পেয়েছে। তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। তবে এতে যে ট্রাফিক পুলিশের ভাবমুর্তি কতটুকু ক্ষুন্ন হয়েছে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভালই বলতে পারবেন।
ট্রাফিক পুলিশ যে বিনা কারনে মামলা দিচ্ছে তার কি কোন জবাবদিহিতা নেই? বিনা কারনে মামলা দিলে কি কোন প্রতিকার করা যাবে না? ট্রাফিক পুলিশ মাসিক বেতন ভোগ করার পাশাপাশি যত মামলা যত কমিশন, এ্ই পদ্ধতি ট্রাফিক পুলিশ ও ট্রাফিক সার্জেন্টদের বেপরোয়া করে তুলছে। কমিশনের জন্য তারা এখন এই লকডাউনে প্রাইভেটকার, সিএনজি, রিস্কাচালক এবং সাধারন মানুষকে অন্যায়ভাবে সেভাবে হয়রানীর করছে, তার বিচার হওয়া উচিত। জনগনের ট্যাক্সের টাকায় যাদের বেতন হয়, সেই ট্রাফিক পুলিশের উচিত জনগনের সাথে ভাল ব্যবহার করা। ট্রাফিক পুলিশ যে বিনা কারনে মামলা দিচ্ছে তার জবাবদিহিতা সময়ের দাবী।