ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন এবং ঢাকা স্টক একচেঞ্জ লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবুর লেখা “স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা” নামক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৩০ মে) সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবুর সভাপতিত্বে বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি (অসুস্থতার কারণে) যুক্ত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মূখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন৷
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি মূলভিত্তির উপর অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু তার “স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা” গ্রন্থটি রচনা করেছেন। এই যুগোপযোগী লেখার জন্য তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমরা আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সাথে সংযুক্ত হতে সক্ষম হয়েছি। যার ফল হলো ডিজিটালাইজেশন অর্থাৎ ডিজিটাল বাংলাদেশ। এরপর যা স্মার্ট বাংলাদেশে রূপ নিয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ লেখকের এই বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। যা স্মার্ট বাংলাদেশ ধারণা সম্পর্কে জানাতে সহযোগিতা করবে বলে আমার বিশ্বাস।’
ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘”স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা” বইটির লেখককে সাধুবাদ জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী যে স্বপ্ন দেখছেন, লেখক তার পূর্বেই যেভাবে এই বইটাতে তা তুলে ধরেছেন, এটি অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। তার এই কাজটা অবশ্যই পলিসি মেকারদের দৃষ্টি আকর্ষিত হবে বলে আমি মনে করি।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্বপ্নের পদ্মাসেতু বাস্তবায়িত হয়েছে। এখন স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ হওয়ার পালা। লেখক সেই স্মার্ট বাংলাদেশেরই স্বরূপ তুলে ধরেছেন তার বইয়ে। আমাদের এই স্বপ্নযাত্রা যেন মাঝপথে বাঁধাগ্রস্ত না হয় বইটিতে সে উপায়ও তিনি দেখিয়েছেন।’
অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নকে ঘিরে লেখক একটি ওয়াইড লেভেলের বই উপহার দিয়েছেন। সামনের নির্বাচনের ইশতেহার কেমন হতে পারে সেগুলোও তুলে ধরেছেন তিনি। লেখক একজন স্মার্ট নাগরিক বলেই একটি স্মার্ট বই উপহার দিয়েছেন। লেখকের জন্য আমরা গর্বিত। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য যে উপকরণগুলো দরকার সেগুলোর মধ্যে ডেল্টাপ্লান অন্যতম। ডেল্টাপ্লানে ইকোনমিক, টেকনোলজিক্যাল এবং সাস্টেনেবল ডেবেলপমেন্ট উল্লেখযোগ্য উপাদান। যা এই বইয়ে আলোচিত হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে কি বুঝায়, এর উপকরণগুলো কি কি হবে এবং তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া কি হবে, সেটা এই বইয়ে দেখানো হয়েছে।’
অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, ‘বইটির সাথে সাম্প্রতিক বাংলাদেশের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। লেখক এই বইয়ের মোট ২৩ অধ্যায়ের প্রতিটি অধ্যায়ের সাথেই প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা-ভাবনা ও কর্মের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের উপর দাঁড়িয়ে যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন বা যে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন তার একটা চিত্র দাড় করিয়েছেন।আমি মনে করি, এই বই বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের কাছে শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা দিবে। এই বই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের সাথে সেতুবন্ধন তৈরি করলো। যা, স্মার্ট বাংলাদেশ কনসেপ্ট এর ব্যাপক প্রচারণা চালাবে।’
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমি যখন বইটি দেখেছি তখন আমার মনে হয়েছে এটা আমার প্রয়োজন ছিল। এই বইয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ কিভাবে কাজ করবে সেটি লেখক তুলে ধরেছেন। বইটিতে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মারতট সোসাইটি এই চারটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত স্মার্ট বাংলাদেশের ধারণা দিয়েছেন লেখক। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এবারের ইশতেহারের মূলকথাই থাকবে স্মার্ট বাংলাদেশ। যদি এই বইটি কাছে থাকে তাহলে এই নতুন কনসেপ্টটি বুঝতে সুবিধা হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘সরকারের সফলতা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডকে ব্যহত করতে এবং সমাজে অস্থিরতা তৈরি করতে সাইবার সন্ত্রাসীরা তৎপর রয়েছে। এই বইয়ে সেটা থেকে উত্তরণের উপায়ও ব্যাখ্যা করা আছে। এক কথায়, তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত আইডিয়া পেতে এই বই কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।’
মোড়ক উন্মোচিত ওই বইয়ের লেখক অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ হলো বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রতিশ্রুতি ও শ্লোগান যা ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের পরিকল্পনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর দৃঢ়চেতা নেতৃত্বগুণের মাধ্যমেই ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিভিত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক এবং উদ্ভাবনী নির্ভর। এই গ্রন্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং “রূপকল্প ২০৪১” বাস্তবায়নে সরকারের সম্ভাব্য নির্বাচনী ইশতেহারের রূপরেখা তুলে ধরার পাশাপশি, তা বাস্তবায়ন করার স্বরূপ তথ্য-বিশ্লেষণ এবং সচিত্র দিক নির্দেশনা আলোকপাত করা হয়েছে।’
ড. হাসান বাবু আরো বলেন, ‘বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের দারগোড়ায় দাড় করানোর কর্মপরিকল্পনা ও অভিপ্রায় নিয়েই গ্রন্থটি রচনা করা হয়েছে। আমার দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে এবং উন্নত বিশ্বের স্মার্ট প্রকল্পগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে সম্ভাব্য নির্বাচনী ইশতেহারের দিকনির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি সেগুলো বাস্তবায়ন করার রুপরেখাসহ বিস্তারিত ও সচিত্র আলোকপাত বর্ণনা করা করেছেন এই গ্রন্থে।’
লেখক আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশ আজ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন খাতে বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমতা নির্ভর ইন্টেলিজেন্ট যোগাযোগ ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চায়। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের পথে দেশ আরও সাহসিকতা ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যাবে।’
এছাড়া, অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ছন্দা মনি।