Friday, November 28, 2025
Homeদেশগ্রামসেন্টমার্টিন সৈকতে পড়ে থাকা আবর্জনায় তৈরী হলো কোরাল মাছ ও কচ্ছপ

সেন্টমার্টিন সৈকতে পড়ে থাকা আবর্জনায় তৈরী হলো কোরাল মাছ ও কচ্ছপ

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের সৈকতে পড়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বোতল, চিপস ও অন্যান্য স্ন্যাক্স এর প্যাকেট, পলিথিন, ফেলে দেয়া ছেড়া জাল, বস্তা ইত্যাদি আবর্জনা দিয়ে একটি কোরাল মাছ এবং একটি কচ্ছপের ম্যুরাল তৈরি করেছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, একোয়াকাচার এন্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদ। ১৯৯৯ সালে এই দ্বীপকে ইকোলজিকেলি ক্রিটিকেল এরিয়া বা প্রতিবেশগতভাবে সংকটপূর্ণ এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল।

সেন্টমার্টিন দ্বীপে আবর্জনা দিয়ে তৈরী কোরাল মাছ ও কচ্ছপের মূরাল তৈরীর কারিগররা

সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক, স্থানীয় জেলে ও বাসিন্দারা যেন যত্রতত্র প্লাটিক ও অন্যান্য আবর্জনা না ফেলে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করার লক্ষ্যে এই ম্যুরাল দুটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই কার্যক্রমের পরিকল্পনাকারী ও প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব। তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ আমাদের দেশের একমাত্র প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ। প্রতিবছর শীতকালে প্রতিদিন প্রায় ৩-৪ হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে আসেন। তাদের অনেকেই জানেন না যে এই দ্বীপের সমুদ্রতলে লুকিয়ে আছে বিচিত্র সব বর্ণিল ও মনোরম সুন্দর সব প্রাণী ও উদ্ভিদ। কিন্তু অপরিকল্পিত পর্যটন, দূষণ, মাছ ও প্রবালের আবাসস্থল ধ্বংস, মাত্রাতিরিক্ত মৎস্য আহরণ, অবৈধভাবে প্রবাল আহরণ ও অবকাঠামো নির্মাণ এবং সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সেন্টমার্টিনের প্রবাল প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র বর্তমানে হুমকির মুখে।পরিবেশ দূষণের অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ হলো যত্রতত্র প্লাস্টিক ও পলিথিন আবর্জনা, ছেড়া জাল ও নাইলন বস্তা নিক্ষেপ, যা চূড়ান্তভাবে সাগরের পানিতে চলে যায় এবং এর অনেকাংশ পানির নিচে প্রবালের ওপর জমা হয়ে প্রবাল প্রতিবেশ বিনষ্ট করছে। পরিবেশ দূষণের হাত থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে বাঁচানোর উদ্যোগ হিসেবে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, একোয়াকালচার ও মেরিন সায়েন্স অনুষদ একটি গবেষণা কার্যক্রমও হাতে নিয়েছে। অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব বলেন, এই গবেষণায় দ্বীপের সৈকত ও পানির তলদেশ কি পরিমাণ ও কি ধরণের প্লাস্টিক এবং অন্যান্য আবর্জনা দ্বারা দুষিত হচ্ছে তা নিরূপণ করা হবে। এই গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে প্লাস্টিক দূষণ রোধে এবং দ্বীপের সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় কি ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে তারও একটি রূপরেখা ও সুপারিশমালা প্রণয়ন করে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে দেয়া হবে। এ গবেষণায় অর্থায়নে আছে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ)।

উল্লেখ্য যে, প্রবাল প্রাচীর সমূহ পৃথিবী নামক আমাদের এই গ্রহে বিদ্যমান প্রতিবেশসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং জটিল। একইসঙ্গে সবচেয়ে সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। যদিও প্রবাল প্রাচীরগুলি পৃথিবী পৃষ্ঠের মাত্র ১% এরও কম অংশ জুড়ে আছে, তবে এটি ধারণা করা হয় যে সামুদ্রিক প্রজাতির এক-চতুর্থাংশ খাদ্য এবং আশ্রয়ের জন্য প্রবাল প্রতিবেশের উপর নির্ভর করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য