বুধবার (৩০ জুলাই) সিরাজগঞ্জে বহুল প্রতীক্ষিত “বিসিক শিল্প পার্ক, সিরাজগঞ্জ”-এর প্লট বরাদ্দপত্র হস্তান্তর করা হয়। সকাল সাড়ে ১১টায় সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এ.কে. শামসুদ্দিন সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রথম পর্যায়ে ৭২ জন উদ্যোক্তাকে প্লট বরাদ্দপত্র প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। প্রকল্পটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে প্রায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে। রাজশাহী বিসিক আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক জাফর বায়েজীদ-এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গণপতি রায়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সিরাজগঞ্জ বিসিক জেলা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মাহবুবুল ইসলাম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিরাজগঞ্জ জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. সাইদুর রহমান বাচ্চু।
স্বাগত বক্তব্যে মাহবুবুল ইসলাম বলেন, উত্তরবঙ্গের অর্থনীতিকে গতিশীল ও সমৃদ্ধ করতে সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্প পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বেকারত্ব হ্রাস, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং শিল্পায়নের পরিবেশ সৃষ্টিই এর মূল উদ্দেশ্য। এখানে মোট ৮২৯টি প্লটের পরিকল্পনা ছিল, যা ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
প্লট ইজারা নেওয়ার পর করণীয় সম্পর্কে বিসিক শিল্প পার্কের প্রধান মো. সাজিদুল ইসলাম বলেন, নির্ধারিত সময়ে ডাউনপেমেন্ট ও সার্ভিস চার্জ পরিশোধ না করলে, অনুমোদিত লে-আউট মানা না হলে বা পাঁচ বছরের বেশি সময় কারখানা বন্ধ থাকলে বরাদ্দ বাতিল হতে পারে। আবাসিক কাজে ব্যবহার কিংবা মোবাইল টাওয়ার স্থাপন করলেও বরাদ্দ বাতিল হবে।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, “ঢাকার কাছাকাছি জেলা হওয়া সত্ত্বেও সিরাজগঞ্জে শিল্পায়ন তেমন গড়ে ওঠেনি, অথচ পাশের বগুড়ায় তা হয়েছে। এটি বিসিকের সবচেয়ে বড় শিল্প পার্ক, যা সিরাজগঞ্জকে শিল্প জেলায় রূপান্তরে সহায়ক হবে। রেলপথ, সড়কপথ ও নদীপথ—সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধা রয়েছে। তাই যারা প্লট পেয়েছেন, তাদের দ্রুত কার্যক্রম শুরু করার অনুরোধ করছি।”
বিসিকের আঞ্চলিক পরিচালক জাফর বায়েজীদ বলেন, “আজকের দিনটি আমাদের জন্য ঐতিহাসিক। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই স্বপ্নের বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। আমরা উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।”
উল্লেখ্য, যমুনা সেতুর পশ্চিমপাড়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলী ও পশ্চিম মোহনপুর এবং কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের বনবাড়িয়া, বেলুটিয়া ও মোড়গ্রাম মৌজায় প্রায় ৪০০ একর জমির ওপর বিসিক শিল্প পার্ক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ৭১৯ কোটি ২১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ হাতে নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়।