মোঃ রফিকুল ইসলাম
বিদেশীদের প্রলোভনে নিজেদের অস্তিত্বকে বিছিন্ন করা মোটেও সঠিক বলে বিবেচিত হতে পারে না। কারণ নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে হবে। আমরা অনেকেই গ্রাম থেকে উঠে এসেছি। আমরা দেখেছি একটি জমি নিয়ে দুই দলই ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হয়ে একটা সময় কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। ফলে দেখা গেল কোর্টের বারান্দায় দৌঁড়াতে দৌড়াতে নিজেদের সহায় সম্পদ হারিয়ে ফেলেছে। এখন আর পথ চলে না। উপায়ন্তর না পেয়ে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে উক্ত বিাবদ মিমাংসা করেছে। মাঝখানে নিজেদের সহায় সম্বল নষ্ট করেছে। সবকিছু নষ্ট করে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে।
আমেরিকা এবং ব্রিটিশ একই সূত্রে গাঁথা। ব্রিটিশ নীতি হলো “বিভক্ত এবং শাসন” পক্ষান্তরে আমেরিকার নীতি হলো “ছদ্মবেশ এবং নিয়ম”। এর কোনটাই আমাদের জন্য শুভ নয়। আমরা ১৭৫৭ সাল কি ভুলে গিয়েছি। ব্রিটিশ মীর জাফরকে প্রলোভন দিয়ে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দোলাকে হত্যা করে মীর জাফরকে মাত্র ৪৫দিন ক্ষমতার মসনদে রেখেছিল এবং ৪৫দিন পর পাছায় লাথি মেরে ক্ষমতার থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। ফলে কি হলো জাতি স্বাধীনতা হারালো। পরাধীনতার শিকলে বন্দি হলো। অর্থাৎ ব্রিটিশদের গোলামে পরিনত হলো।
প্রক্ষাত সাংবাদিক গাফ্ফার চৌধুরী বলেছিলেন পশ্চিমারা একটা মিথ্যাকে সত্যে পরিনত করার জন্য লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করে। যেমনটা করেছিল ইরাকের জন্য। কিন্তু পরবর্তীতে তারই স্বীকার করেছিল এটা তাদের ভুল ছিল। অথচ দেশটার বারোটা বাজিয়েছে। শাদ্দামের মতো একজন মুসলিম বীরকে মিথ্যা প্ররোচনায় ফেলে মেরে ফেলেছিল।
আমেরিকা গর্বাচেবকে ধোকায় ফেলে ইউনিয়ন চুক্তি বাতিল করে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। দেশটা খন্ড খন্ড করে দিয়েছিল। অতএব সাধু সাবধান। যা কিছুই করেন বুঝে শুনে করতে হবে। জাতিকে সাথে নিয়েই সামনের দিকে এগুতে হবে। তবেই বুদ্ধিমান হবেন।
মনে রাখতে হবে আমেরিকাসহ পশ্চিমারা নিজেদের স্বার্থ ছাড়া এক পা আগাবে না। তাদের স্বার্থ আগে তারপর অন্য কথা। তাদের স্বার্থ উদ্ধার হয়ে গেলে কাউকে চিনবে না। এমনকি পাছায় লাথি মারতেও এক মিনিট দেরি করবে না। আমেরিকার ফাঁদে যারাই পা দিয়েছে তারাই ধ্বংস হয়েছে। লিবিয়া, ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তানের মতো দেশগুলো আজকে কি অবস্থায়। বিষয়টি গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। মুসলিমদের দর্শনীয় দেশ ইরাক মিথ্যা বানোয়াট কথা রটাইয়া দেশটা ধ্বংস করেছে। একইভাবে লিবিয়া, সিরিয়া, আফগানিস্তান, আফ্রিকার অনেক দেশ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আজকে পাকিস্তানকে কোন পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তাদের সাম্রাজ্যবাদী নীতিতে ফেলে অনেক দেশ ও অনেক জাতিকে ধ্বংস করেছে।
এই আমেরিকা ভিয়েতনামে দীর্ঘদিন যুদ্ধ করেছে বহু মা বোনকে দর্শণ করেছে তাদের অনেকেই সন্তানের জন্ম দিয়েছে। ভিয়েতনামের সরকার যখন সেই সকল সন্তানকে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে বলেছিল আমেরিকা একবাক্যে স্বীকার করেছিল এবং সেই সব সন্তানদেরকে জাহাজে নিয়ে গভীর সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিল।
বেশীদিন আগের কথা নয় পাকিস্তানের সামরিক সরকার প্রধান জিয়াউল হককে সরানোর জন্য নিজের দেশের মানুষসহ জিয়াউল হককে বহনকৃত কপ্টারটি ধ্বংস করেছিল। অর্থাৎ তারা যা বলবে তাদের কথার হেরফের হলে রক্ষা নেই। অতএব সাধু সাবধান। বুঝে কাজ করুন। অন্যথায় কারো জন্যই শুভ হবে না।
খন্দকার মোস্তাক অতিলোভ করে বিদেশীদের চালে পড়ে জাতির জনক এবং তাঁর পরিবারবর্গকে হত্যা করে ক্ষমতায় বসেছিল। কিন্তু বেশীদিন যেতে পারেনি। তাই নিজের বুদ্ধিতে কাজ করুন। অন্যের কথায় কান দেয়া ঠিক হবে না। ক্ষমতায় যাওয়ার অতিলোভ করা ঠিক নয়। মনে রাখতে হবে ক্ষমতায় বসা না বসা আল্লাহর তরফ থেকেই নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। আসুন দল মত নির্বেশেষে সবাই একযোগে কাজ করি। আমাদের সমস্যা আমরাই মিমাংসা করার চেষ্টা করি। বাংলাদেশ একটা ছোট দেশ। এক প্রান্ত থেকে একটি সিগারেট ধরিয়ে টানতে টানতে অন্য প্রান্তে যাওয়া যায়। আমরা সেই দেশের নাগরিক। সবাই সবাইকে চিনি জানি। সবাই এক সাথে একই বিদ্যালয় লেখাপড়া করেছি। কেউ কেউ ক্লাসমেট আবার কেউ কেউ পাড়া প্রতিবেশী, কেউ কেউ আত্মীয় এক কথায় আমরা সবাই একই ছায়াতলে। সুতরাং নিজেদের ভুল বুঝাবুঝি পরিহার করে একই টেবিলে বসুন। দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য চিন্তা করুন। নিজেরাও বাচুন। দেশের মানুষকেও বাচান। লেখকঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম। লালমোহন, ভোলা, বাংলাদেশ