মোঃ সোয়েব মেজবাহউদ্দিন
লালমোহন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন জনাব সিদ্দিকুর রহমান। তার দেশের বাড়ী ছিল পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলায়।তিনি স্কুলে যোগদানের পর থেকে স্কুলের সকল প্রকার কাজ তার একক সিদ্ধান্তে করতেন। কাজ শেষ করে আবার কমিটিকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বিল পাশ করতেন। তার একটা বিশেষ গুন ছিল তিনি থানা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার ভূমি সহ সকল বড়বড় কর্মকর্তা এবং স্কুল কমিটির সবার সাথে সহজে সখ্যতা গড়ে তুলতে পারতেন। প্রধান শিক্ষকতা হিসাবে তার কর্মদক্ষতা এবং তার ম্যানেজিং পাওয়ার জুরি মেলা ভার।তিনিই লালমোহন বালিকা বিদ্যালয়ের মাসিক আয়ের ব্যবস্থা হিসাবে স্কুলের যায়গায় দোকান তৈরী করে ভাড়ার ব্যবস্থা করেন। একদিন মাধ্যমিক পরীক্ষা চলার সময় আমি থানা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে হল পরিদর্শনে গেলে দেখতে পাই প্রধান শিক্ষক তার মেয়েকে পরীক্ষার উত্তর লিখতে সহযোগিতা করছেন। বিষয়টি আমার চোখে পরে। তিনি তাৎক্ষনিক আমার কাছে এসে আমার পরীক্ষা হলে প্রবেশ করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং আমাকে পরীক্ষা হল থেকে বের করার চেষ্টা করেন। থানা নির্বাহী কর্মকর্তার বাধার কারনে ব্যার্থ হন। কিছুদিন পর আমি উক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য সংগ্রহ করে ঢাকা থেকে প্রকাশিক সাপ্তাহিক সুগন্ধা পত্রিকায় সংবাদ পাঠাই এবং পত্রিকাটি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে। পত্রিকাটি লালমোহন হকারের কাছে আসার পরে বেশ আলোড়নের সৃষ্টি হয়। সংবাদটি সংবাদদাতা হিসাবে প্রকাশিত হয়। ফলে কে সংবাদটি পত্রিকায় পাঠিয়েছে তা জানা সম্ভব নয়।

নির্ভরযোগ্য একটি সুত্র থেকে জানতে পারলাম, প্রকাশিত সংবাদের এক কপি সহ সাংবাদিক জাকির হোসেন প্রধান শিক্ষকের কাছে যায় এবং জানায় যে, এই সংবাদটি আমি পাঠিয়েছি তা সে জানে। সাংবাদিক জাকির সংবাদের প্রতিবাদ দেওয়ার পরামর্শ দেয় এবং প্রতিবাদ ছাপানো এবং আমি যে সংবাদ পাঠিয়েছি তার প্রমান সে পত্রিকা অফিসে থেকে সংগ্রহ করতে পারবে বলে আশ্বাস দেয়। পরে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ এবং প্রতিবাদ ছাপানোর নাম করে টাকা নেয়। যদিও কোন সংবাদের প্রতিবাদ ছাপাতে কোন প্রকার টাকা লাগে না এবং কোন পত্রিকা কে সংবাদ পাঠিয়েছে তার নাম কখনই প্রকাশ করবেনা। কারে তা পত্রিকার নীতি বিরোধী কাজ।এটা তথ্য পাচারের সামিল।
সেই দিন থেকে সাংবাদিক জাকিরের সাথে আমার দ্ধন্ধ শুরু হয়। আমি সাংবাদিক গোলাম মাওলা ভাইকে সাথে নিয়ে সাংবাদিক জাকিরকে জিজ্ঞাসা করি, আমি সংবাদ পাঠিয়েছি কেন সে প্রধান শিক্ষককে বলল, জাকির প্রথমে অস্বীকার করে পরে বলল, প্রধান শিক্ষক জানতে চাইলেন কে এই সংবাদ পাঠাতে পারে, আমি তখন কে কে সাংবাদিকতা করে তাদের নাম বলেছি।তিনি আপনাকে সন্দেহ করেছে।
সৎ সাংবাদিকতা করার কারনে এবং একজন অসৎ সাংবাদিকের কারনে প্রধান শিক্ষকের সাথে আমার একটা চরম শত্রুতা শুরু হল। যার জন্য আমাকে চরম মুল্য দিতে হয়েছিল। যার পরিনাম আমি আজও বয়ে চলছি। চলবে—–