Friday, November 28, 2025
Homeআইন-আদালতলালমোহনে ভ্যানচালকের কাঁধে ১০ লক্ষ টাকার মিথ্যা মামলা

লালমোহনে ভ্যানচালকের কাঁধে ১০ লক্ষ টাকার মিথ্যা মামলা

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি ॥
ভোলার লালমোহনে মো. নূরুজ্জামান নামের এক ভ্যানচালকের কাঁধে ১০ লক্ষ টাকার মিথ্যা মামলার অভিযোগ। বয়সের ভারে ন্যুজ বৃদ্ধ নূরুজ্জামান  এ মামলার দায়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ওই বৃদ্ধের পিতৃ সম্পদ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে উপজেলার ধলিগৌরনগর ইউনিয়নের চতলা এলাকার মৃত মজিবুল হকের ছেলে মো. নূরুল হক বাদী হয়ে মোকাম লালমোহন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলাটি করেছেন বলে অভিযোগ ভ্যানচালক নূরুজ্জামানের। মামলা নং: এমপি ১৫৭/২০২১ ইং (লাল)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১০ জুন নূরুজ্জামানের পিতৃ সম্পদের ১২ শতাংশ জমি বিক্রির কথা বলে নূরুল হকের কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা নেন। একই সাথে এ মামলায় নূরুজ্জামানের ভাগ্নে মো. মাহমুদুল হককেও ১২ শতাংশ জমির জন্য ১০ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এ মামলায় দুজনকেই গাছের ব্যবসায়ী হিসেবে বলা হয়েছে।
মামলার আসামী নূরুজ্জামান জানান, চতলা মৌজার এসএ ৪১৩, ৬৫৪ খতিয়ানের কিছু সম্পত্তি জোরপূর্বক ভোগ দখল করে আসছে নূরুলহক গংরা। এব্যাপারে নূরুল হকের পিতার বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী লালমোহনের নৌ-কন্টিনজেন্টে অভিযোগ দেয়া হয়। ওই অভিযোগটি তদন্ত করে মিমাংসের জন্য ধলিগৌরনগর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান মোজ্জামেল হকের কাছে প্রেরণ করা হয়। এসময় ফয়সালার স্বার্থে  উভয় পক্ষের কাছ থেকে দেড়শত টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়।
নূরুজ্জামান আরও জানান, ওই সময় ফয়সালাতে না বসে দিন পার করে ওই স্ট্যাম্পটিকেই অঙ্গিকারনামা সাজিয়ে নূরুজ্জামান ও তার ভাগ্নে মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে ২০ লক্ষ টাকার মিথ্যা একটি মামলা সাজায় নূরুল হক গংরা।
সরজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, প্রায় ৩০-৩৫ বছর যাবত ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন নূরুজ্জামান। মাহমুদুলও পেশায় একজন দিনমজুর। স্থানীয় শালিস মো. নূরনবী হাওলাদার জানান, নূরুল হকের ভাই মো. শাহে আলম বিমান বাহিনীতে কর্মরত। সে এলাকায় আসার পর নূরুজ্জামানদের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে একাধিকবার বসতে বলেছি। তবে শাহে আলম স্থানীয়ভাবে না বসে আদালতে গিয়ে মামলাটি করেন। তিনি আরও বলেন, ভ্যানচালক নূরুজ্জামানকে কি কারণে এত টাকা দিয়েছেন তা আমার জানা নেই। এ টাকার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এব্যাপারে মামলার বাদী নূরুল হক বলেন, অন্যত্র জমি বিক্রির কথা বলে নূরুজ্জামান ও মাহমুদুল হক ২০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। তারা জমি কিংবা টাকা ফেরত দিতে বিলম্ব করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পিতৃ সম্পদটুকু ছাড়া নূরুজ্জামানের আর কোনো সম্পদ নেই। সত্তরের পরে বাবা মারা যাওয়ায় মাকে নিয়ে না বাড়িতে থাকতেন নূরুজ্জামান। বর্তমানে দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে স্থানীয় কাঁটাখালী খালের পাড়ে সরকারি খাস জমিতে বসবাস করছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা মামলায় করায় হতাশা দেখা দিয়েছে পরিবারটিতে। নূরুজ্জামান এ মিথ্যা মামলা থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য