Wednesday, June 25, 2025
Homeঅপরাধলালমোহনে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্রীকে বিয়ে, বখাটে মনিরের শাস্তি দাবী

লালমোহনে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্রীকে বিয়ে, বখাটে মনিরের শাস্তি দাবী

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি:

ভোলার লালমোহনে প্রতারণার মাধ্যমে নোটারী পাবলিক এবং অপ্রাপ্ত কিশোরীকে বিয়ে নিয়ে পরিবারের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইলিয়াছের ছেলে মো. মনির হোসেনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন শান্তা নামের ভূক্তভোগী এক অপ্রাপ্ত বয়স্ক মাদ্রাসা ছাত্রীর পরিবার।

ওই কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর চরভূতা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৃত মো. মহিউদ্দিনের মেয়ে শান্তা (১৬) কে সুকৌশলে রমাগঞ্জ ইউনিয়নের রায়ঁচাদ বাজারে নিয়ে কথিত কাজীর মাধ্যমে ভূয়া জন্মনিবন্ধন দিয়ে নোটারী করে বিয়ে সম্পন্ন করে মনির। শান্তা বাড়ীতে এসে ঘটনাটি তার মাকে বললে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে শান্তার এক দাদা কালাম মেম্বার রাঁয়চাদ বাজারের কথিত ফজলু কাজীর সাথে যোগাযোগ করলে ঘটনার সত্যতা জানতে পারেন।

শান্তার দাদা ও সাবেক ইউপি সদস্য কালাম মেম্বার জানান, আমার অপ্রাপ্ত বয়স্ক নাতনি শান্তাকে ভুল বুঝিয়ে এবং ভূয়া জন্মনিবন্ধন তৈরী করে বখাটে মনির প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিয়ে করে। কারণ শান্তার নামে তার বাবা জমি দিয়ে গেছেন। সেই জমির লোভে মনির শান্তাকে প্রতারণার কৌশল অবলম্বন করে বিয়ে করেন। শান্তা বর্তমানে বাংলা বাজার দাখিল মাদ্রাসার এবছরের দাখিল পরীক্ষার্থী। 

জানা গেছে, মনির বখাটে প্রকৃতির কিশোর। সে এলাকায় একাধিক মেয়ে ঘটিত কেলেঙ্কারীর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। সে একসময় বাংলা বাজার মাহমুদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র ছিল। ৮ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিভিন্ন বখাটেপনা ও কেলেঙ্কারীর ঘটনায় তাকে ওই প্রতিষ্ঠান আর নবম শ্রেণিতে ভর্তি করেনি।

এ ব্যাপারে বাংলা বাজার মাহমুদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাও: মো. মতিউল ইসলাম বলেন, অষ্টম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায়ই মনির বখাটে প্রকৃতির ছিল। আমাদের প্রতিষ্ঠানের মেয়েদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করতো সে। যার জন্য প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখতে মনিরকে আর নবম শ্রেণিতে ভর্তি করিনি। 

অভিযুক্ত মনির হোসেন বলেন, ওই মেয়ের সাথে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। তার সম্মতিতেই রায়চাঁদ এলাকার ফজলু কাজীর মাধ্যমে নোটারী করে বিয়ে করেছি। আর মাদ্রাসা থেকে আমি নিজ ইচ্ছাতেই চলে এসে অন্য প্রতিষ্ঠানে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হই। 

এ ব্যাপারে রমাগঞ্জ ইউনিয়নের মূল কাজীর সহকারী হয়েও কাজী বনে যাওয়া ফজলু জানান, বিষয়টি আমার অন্যায় হয়েছে। কারণ ছেলে-মেয়ে কারোই বিয়ের বয়স হয়নি। এজন্য আমি ছেলেকে বিষয়টি গোপন রাখতে বলেছি। তবে ছেলে মনির বিষয়টি প্রকাশ করে দিয়েছে। এরপর মেয়ের পক্ষ ছেলেকে তালাক দেওয়ায়।

নোটারী করা এ্যাডভোকেট ওয়াহিদুর রহমান বলেন, আমার কাছে ফজলু নামের এক ব্যক্তি এসেছিল। আমাকে ছেলে-মেয়ের পূর্ণবয়সের জন্মনিবন্ধন দেয়ায় তখন নোটারীটি করেছি।

ভূক্তভোগী শান্তার ভাই মো. হাছনাইনের দাবী, অপ্রাপ্ত বয়সে তার বোনকে প্রতারণা করে বিয়ে করায় মনির হোসেনসহ এই বিয়ের সাথে জড়িত সকলকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়।

এব্যাপারে লালমোহন থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. এনায়েত হোসেন বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে কেউ এধরনের কাজ করলে তা আইনগত অপরাধ। তবে এ ঘটনায় কেউ এখনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আমরা অবশ্যই আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য