Tuesday, October 14, 2025
Homeআন্তর্জাতিকরেমিটেন্স প্রেরণকারীদেরকে ভি.আই.পি মর্যদা দেয়া উচিৎ

রেমিটেন্স প্রেরণকারীদেরকে ভি.আই.পি মর্যদা দেয়া উচিৎ

মোঃ রফিকুল ইসলাম

মোঃ রফিকুল ইসলাম

আজ যাদের কষ্টার্জিত রেমিটেন্সে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হচ্ছে এবং বিদেশ থেকে দেশের মাটিতে এয়ারপোর্টে অবতরণর পর তাঁদের সাথে কি ধরনের আচরণ করা হয়। যা দেখলে অবাক হওয়ার মতো। আর পক্ষান্তরে যাদের মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার করা হয় তাদেরকে দেয়া হয় ভিআইপির মর্যদা। সাবাস বাঙ্গালী! সাবাস!

আসুন জাতির জনকের সেই মূল্যবান বক্তব্যের প্রতি সম্মান করি। আমরা রাস্তা ঘাটে, বাসের ড্রাইভার, রিক্সা চালক, নৌকার মাঝি, লঞ্চ চালক এবং যারা মাঠে কাজ করেন তাদেরকে অনেকেই তুই, তুমি তুচ্ছ তাছিল্য করে কথা বলে থাকি। এটা অমার্জনীয়। তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শণ করতে হবে।

কৃষক খেতে খামারে কাজ করেন। উৎপাদন করেন। তাঁদের উৎপাদিত পণ্য আমরা ভোগ করে থাকি। তাঁদের উৎপাদিত পণ্য দেশের চাহিদা পূরণের পর এবং দেশের বাহিরে রপ্তানী করে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করে থাকি। তাঁদের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা হয়।

তাঁদের সাথে কি ধরণের ব্যবহার করা উচিৎ একবার চিন্তা করে দেখুন। তাইতো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান আমাদের প্রতি উপদেশ দিয়েছিলেন তাঁদেরকে সম্মান করতে, তাঁদেরকে  সমীয় করতে হবে। তাঁদেরকে সম্মানের সাথে ‘আপনি’ করে বলতে।

আমরা আজ যারা উচ্চ শিক্ষিত হয়েছি আমাদের পূর্ব পুরষ কৃষক ছিলেন। আমরা তাঁদের সন্তান। আমরা কোর্ট প্যান্ট পড়তে পেরে নিজের শিখরকে ও নিজেকে ভুলে যাচ্ছি। আমরা আমাদের বংশ মর্যদা দিতে জানি না। তাইতো আজ প্রতিটি পদে পদে আমাদের অধপতন।

আমরা অনেকেই জানি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মহামান্য প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্ভাসেভ জন্মগ্রহণ করেছিলেন একটি কৃষক পরিবারে। সেখান থেকে ধীরে ধীরে বড় হয়েছেন। তৎকালীন কমনিজম সদস্য হয়ে সেখান থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। সংতরাং কাউকে অবজ্ঞা করা বা ছোট করা ঠিক নয়। সবার সাথে ভালো ব্যবহার করা উচিৎ।

আমাদেরকে এখান থেকে ফিরতে হবে, ফিরাতে হবে আমাদের ভবিষ্যত প্রজ্মকে। বিদেশে যেকোন পেশার মানুষই হউক না কেন তাঁদের প্রত্যেকের সাথে সম্মান দিয়ে কথা বলা হয়ে থাকে। তাঁদের উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করা হয়। কিন্তু আমরা কোর্ট পেন্ট শিক্ষিত হয়ে আপন বাবা, মা, আত্মীয়-স্বজনকে ভুলে যাই। তাঁদেরকে পরিচয় দিতে লজ্জা পাই। আমরা কেমন জাতি?

আমরা যাদেরকে বিধর্মী বলে থাকি তারা মানবতাকে সম্মান করে। আর আমরা মানবতাকে ধ্বংস করছি। তাদের মধ্যে কেউ অভাবগ্রস্থ হলে সবাই মিলে তাকে সাহায্য সহযোগীতা দিয়ে তার অভাব মুক্ত করে থাকেন। পক্ষান্তরে আমাদের মধ্যে যারা অভাবগ্রস্থ তাদেরকে কিভাবে ধাবিয়ে রাখা যায় সেটা আমরা করে থাকি। তাদের জমি-জমা, তাদের টাকা পয়সা কিভাবে নষ্ট করেতে পারি সেই ব্যবস্থা আমরা করে থাকি। তাদের অধিকতর অভাবগ্রস্থ বানিয়ে শেষ পর্যন্ত তাদেরকে ভিটা ছাড়া করে থাকি। এমন কি তাদেরকে দেশ ছাড়াও হুমকি ধুমকি দিয়ে থাকি।

আমাদের সরকার প্রধান দেশ রত্ন, মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয় ক্ষমতায় আসার পর বাস্তবমুখি বেশ কতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাঁর উদ্দেশ্য তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন কেউ যেনো অভুক্ত না থাকেন। কেউ যেনো কষ্টে না থাকেন। সবাই যেনো স্বচ্ছন্দ জীবন যাপন করতে পারেন। তার পদক্ষেপগুলো: বিধবা ভাতা, বয়ষ্ক ভাতা, অটিষ্টিক  বিকলঙ্গ ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, যাদের বাড়ীঘর নেই তাদের জন্য ঘর দেয়া। কিন্তু দুঃখের বিষয় যারা এসকল ভাতা পাওয়ার উপযোগী তাদেরকে আড়াল করে সমাজের মেম্বার, চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্য এমনকি মন্ত্রী মহোদয়গন নামে বিনামে গ্রহণ করেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ইস্তেহারে ঘোষণা করেছিলেন ১০(দশ) টাকা কেজি দরে চাউল দিবেন তিনি সেই নির্বাচনী ইস্তেহারের ঘোষণা বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি ১০ (দশ) টাকা দরে চাউল দিয়েছেন। অথচ সেই চাউল চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং হোমরা-চোমরা ভোগ করেছেন। তাদের গোয়াল ঘরে, তাদের খাটের নীচে, এমনকি তাদের বাড়ি ঘরের মাটির নীচেও সেই চাউল পাওয়া গিয়েছে। তাদের কী বিচার হয়েছে। তাদের যদি সঠিকভাবে বিচার হতো তাহলে পরবর্তীতে অন্য চোর চুরি করতে সাহস পেতো না।

চোরদে দৃষ্টান্তমূলক বিচার হলে জাতি ঐ সকল চোরদের চিনে রাখতে পারতেন। এরা দেশ ও জাতির শত্রু। এরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের বোধনাম করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাদেরকে উন্নয়নের সঙ্গী বানিয়েছেন তারাই আজ দেশ ও জাতির উন্নয়নে বাধা। জাতির জনক বলেছিলেন বিদেশ থেকে এতো কম্বল আনা হলো তাঁর কম্বল কোথায়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মহোদয়ের উন্নয়নের সঙ্গীরা হাসপাতালের বিল্ডিং, ব্রিজ, কালভার্ট মেরামত ও নতুন করে তৈরীর জন্য রডের পরিবর্তে দিয়েছেন বাঁশ। আজকে তাদের তৈরী বিল্ডিং-এর ছাদ ভেঙ্গে পড়ে, ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ে। কোথাও কোথাও তাদের তৈরী প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল উদ্বোধনের সাথে সাথেই ভেঁঙ্গে পড়ে। কিন্তু কেন তারা এই সকল নোংরা কাজগুলো করেছে। জাতি তাদের থেকে জানতে চায়?

তারা দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পাঠিয়ে পাচার করেছেন। তারা জাতির সাথে বেঈমানী করেছেন। যিনি ধরা পড়েন তার সম্পর্কে জানতে পারি। আজকে পি.কে. বাবুর কুকৃর্তির খবর জানতে পেরেছি। পি.কে. বাবু একদিনে সৃষ্টি হয়নি। আর একদিনে হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করেনি। আমরা ব্যাংকে নগদ দশ হাজার টাকা বা বিশ হাজার টাকা তুলতে গেলে কে.ওয়াই.সি ফরম পূরণ করতে হয়। আর যারা বস্তা ভর্তি টাকা উত্তোলন করেছেন তাদেরকে কি কে.ওয়াই.সি ফরম পুরণ করতে হয়নি।

আজ আমরা তাদের কারণে অভুক্ত থাকতে হয়। তাদের কারণে আমরা দেশ বিদেশে বধনামের বাগিদার হতে হয়। তাদেরকে রুখতে হবে। তাদের শিকড় উঠাতে হবে। যারা জড়িত তাদের সকলের কঠিন বিচার হওয়া উচিৎ।

লেখকঃ ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স কোং লিঃ-এর মাননীয় সি.ই.ও এবং মাননীয় চেয়ারপারসন মহোদয়ের একান্ত সচিব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য